স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জেলায় গত তিন দিনে রাবি শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও দুই ছাত্রছাত্রী খুনের ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। পাশাপাশি আতঙ্কও বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ক্ষোভের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে রাবি ক্যাম্পাস থেকে শহর পর্যন্ত। একের পর হত্যাকা-ের ঘটনায় এখনও পুলিশ কোনটির ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে।
সোমবার দুুপুরে রাজশাহীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতির চিত্র তুলে ধরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী নগর পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যায় জড়িত ঘাতকদের গ্রেফতারের দাবিতে সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে রাবি শিক্ষক সমিতি।
দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ফজলে হোসেন বাদশা ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহী নগরীতে একের পর চারটি নৃশংস হত্যাকা- ভাবিয়ে তুলেছে। অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী নির্ভেজাল মানুষ ছিলেন, সংস্কৃতিমনা ছিলেন। কী অপরাধে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের মতো তিনিও তা জানতে চান। হোটেলে দুই ছাত্রছাত্রী খুন হলো, পুলিশ এর রহস্য উদ্ঘাটেও ব্যর্থ। সর্বশেষ নগরীতে নিজ চেম্বারে গুলিতে খুন হন আওয়ামী লীগের নেতা ও রাজশাহী চেম্বারের সাবেক প্রশাসক জিয়াউল হক টুকু। পুলিশ এসব ঘটনার কোনটির সামান্যতম ক্লু উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমপি বাদশা বলেন, তিনি রাজশাহী নগরীতে একজন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন অথচ মহানগর পুলিশ তার কোন নির্দেশনা মানে না। পুলিশের প্রতি প্রশ্ন রেখে বাদশা বলেন, এসব কী হচ্ছে? বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে নগরবাসী শঙ্কিত। তিনি নিজেও শঙ্কা প্রকাশ করে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সক্রিয় হোন। অপরাধীদের খুঁজে বের করুন। কারণ রাজশাহীবাসী এখন নিরাপত্তাহীতায় ভুগছে। তাদের নিরাপত্তা দিন। আমরা নিরাপত্তা চাই। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুন। নগরে তিন দিনে চার-চারটি খুনের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে বাদশা বলেন, অপরাধীদের ধরতে না পারলে তো রাজশাহী পুলিশের থাকার দরকার নেই। তিনি বলেন, বর্তমানে তাপমাত্রার পারদের মতোই মানুষের মনের তাপমাত্রাও বেড়ে চলছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, অবিলম্বে অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মিজানউদ্দিনও রাজশাহীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকে এখন আতঙ্কিত। এর পর হয়ত যে কোন সময় আমাদের মাথাটা নেমে যেতে পারে। আমাদের উদ্বিগ্নতার জায়গা হচ্ছে, একজনকে হত্যা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। এটা তো হতে পারে না। তিনি বলেন, অধ্যাপক রেজাউল হত্যাকা-ে একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, অন্যদিকে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। কারণ আমরা বিচার পাচ্ছি না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: