ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সহিংসতামুক্ত ভ্টো অনুষ্ঠানে অনেকটাই সফল ইসি

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ২৫ এপ্রিল ২০১৬

সহিংসতামুক্ত ভ্টো অনুষ্ঠানে অনেকটাই সফল ইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সহিংসতামুক্ত ইউপি নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন মহলে চাপ ছিল প্রথম থেকেই। দুই দফায় নির্বাচনে সমালোচনাও কম হয়নি। তৃতীয় দফায় এসে ব্যর্থতা কাটিয়ে সহিংসতামুক্ত ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনেকটাই সফল হয়েছে ইসি। এ দফায় কেন্দ্রে বাইরে ছিল না কোন বিশৃঙ্খল পরিবেশ। সারাদিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ ভোটারদের অনেকটাই আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট হওয়ায় প্রার্থীদের মধ্যেও নির্বাচনে বিজয়ী হতে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। আগের দুই দফায় নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার কারণে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলেও শনিবারের নির্বাচনে বড় ধরনের কোন সমালোচনার সৃষ্টি হয়নি। সহিংসতামুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের কারণে তৃতীয় দফায় গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে অনেক বেশি। যদিও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে সমালোচনার অন্ত নেই। নির্বাচনের আগ থেকেই তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরকারের আঁতাতের অভিযোগ করে আসছে। নির্বাচন শেষে তারা কমিশনের কারচুপির লিখিত অভিযোগ করেছে। তবে সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ আগের দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বর্জনের ঘোষণা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু তৃতীয় দফায় সে ধরনের নির্বাচন বর্জনের ঘটনা ছিল না বললেই চলে। হাতেগোনা যে কয়জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীও রয়েছেন। তারাও বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করাসহ কারচুপি অভিযোগ এনেছেন। এছাড়া কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, যা ছিল একেবারেই মুষ্টিমেয়। তবে এত কিছুর পর বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা এ নির্বাচনে দেখা গেছে। তবে তা কোনভাবেই সহিংসতার পর্যায়ে পড়ে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বেশিরভাগ ঘটেছে মূলত সদস্য প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। ইউপি সদস্য পদে কোন দলীয় ভোট না হওয়ায় স্থানীয় আধিপত্য এ ঘটনার পেছনে কাজ করেছে। এর বাইরে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে যে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তা মূলত হাতেগোনা নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে সারাদেশে ৬ হাজারের বেশি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২৪ কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচনী ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। সব মিলিয়ে বিএনপির নির্বাচিত হয়েছে মাত্র ৭০ এর বেশি ইউপিতে। এ দফার ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বিএনপির চেয়ে বেশি ইউপিতে নির্বাচিত হয়েছে। ইসি থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে ৫২২ ইউপির ৯৩ লাখ ২০ হাজার ১৯৪ ভোটের মধ্যে শনিবার ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৬৪ ভোট পড়েছে। ভোটের হার দাঁড়িয়েছে ৭৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। এসব ভোটের মধ্যে ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৫১টি ভোট বাতিল হয়েছে নানা ত্রুটির কারণে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তাতে ৩২ লাখের বেশি ভোট পড়েছে নৌকায়। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থীদের পক্ষে ভোট পড়েছে ২০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ১৪ লাখের বেশি ভোট পড়েছে ধানের শীষে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২১ লাখের বেশি ভোট পেয়েছেন। ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ ভোট পড়ে। ওই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের ১০০১ ইউপির বিপরীতে বিএনপির জয় এসেছে ১০৮টিতে।
×