ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নৈসর্গিক ছোঁয়া রয়েল টিউলিপ সি পার্লে

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২৫ এপ্রিল ২০১৬

নৈসর্গিক ছোঁয়া রয়েল টিউলিপ  সি পার্লে

রোদের তাপ আগে থেকে বেড়েছে কয়েকগুণ। এই গরমে হঠাৎ করেই অফার এলো ভ্রমণে যাওয়ার। কক্সবাজারের নতুন রাজকীয় হোটেল, তাই আর গরিমসি করলাম না। রাত ১২টার বাসে উঠে এক ঘুমেই কক্সবাজার। এখানে কলাতলীতেই রয়েছে হোটেলটির নিজস্ব লাউঞ্জ। কিছুক্ষণ জিড়িয়ে নিতেই লাউঞ্জের সামনে পৌঁছে গেল মিনিবাস। তাদের হোটেলে আসা সব অতিথিদের এখান থেকেই বরণ করে নিয়ে যায়। এবার সব গরম তোয়াক্কা করে সমুদ্রের কাছে যাওয়ার আবেদন যেন একটু বেড়ে গেল। আমাদের নিয়ে ছুটে চলল বাসটি, উদ্দেশ ইনানী বিচের একমাত্র ফাইভস্টর হোটেল রয়েল টিউলিপ। এক পাশে সমুদ্র, অন্য পাশে আকাশচুম্বীপাড়া, মাঝে আমরা। চল্লিশ মিনিটের নৈসর্গিক এক পরিবেশ পেরিয়ে সি পার্লের রাজকীয় অভ্যর্থনা। গাড়ি থেকে নেমেই লবিতে। সবার হাতেই তখন ক্যমেরা! থাকবেই বা না কেন। লবিতে বসেই পুরো সমুদ্র চোখের সামনে। এমন দৃশ্য খুবই কম মেলে। হোটেল সম্বন্ধে একটু বলে নেই। বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৈকত কক্সবাজারের ইনানী বিচে গড়ে তোলা হয়েছে এই লাক্সারি রিসোর্ট। রিসোর্টে ঢুকতে ঢুকতে এর জৌলুস আপনার প্রাণ ভরিয়ে দেবে। প্রায় ৫০ বিঘা বিস্তৃত জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে এই রিসোর্ট। এর চমৎকার এক্সটেরিয়র অলঙ্কৃত হয়েছে বাগান ও পানির সুষম বিন্যাসে। রিসোর্টের ঠিক সামনে বিচ। যেখানে দেখা মিলবে সামুদ্রিক কোরালের। হোটেলে এসে আপনি ঘোরাঘুরির পরিপূর্ণ আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। কারণ এর ঠিক কাছেই রয়েছে হিমছড়ি ঝরনা, দরিয়া নগর ও বার্মিজ মার্কেট। এ ছাড়া হোটেলেও রয়েছে কিছু সুযোগ সুবিধা। যেমন : এখানে রয়েছে ওয়াটার পার্ক, টেনিস ও ব্যাডমিন্টন কোর্ট, থ্রিডি মুভি হল, বিলিয়ার্ড, ব্যায়ামাগার এবং স্পা। ছেলে-বুড়ো সবাইকে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দিতে আউটডোর এ্যাকটিভিটির মধ্যে আছে প্যারাসেইলিং, স্নোরকেলিং, ডিপ সি ফিশিং ও স্পিডবোট রাইড সুবিধা। আছে দুটি সুইমিংপুল ও জ্যাকুজি। যার একটি শুধু মেয়েদের জন্য। রিসোর্টের অতিথিদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ‘রেডিয়ান্স স্পা’। যেখানে পাওয়া যাবে নানা ধরনের থেরাপি ও ট্রিটমেন্ট সেবা। সবই দেহমনে প্রশান্তি এনে দেবে। এখানে আহার ও পানাহারের জন্য আছে পাঁচটি বিশেষায়িত রেস্টুরেন্ট, ১টি মাল্টি কুজিন ডাইনিং, ১টি আইসক্রিম পার্লার ও একটি জুস বার। তবে যারা সম্মেলন ও উৎসব আয়োজন করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ১০ হাজার বর্গফুট বিস্তৃত জায়গা। আছে দুটি সেমিনার কক্ষ ও একটি বিশাল বলরুম। রিসোর্ট এবং এর নিজস্ব সৈকতে রয়েছে খোলামেলা জায়গা ও মুক্তমঞ্চ। ফলে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং, গালা নাইট, ফ্যামিলি প্রোগ্রাম, ফ্যাশন শো, সভা, সমাবেশসহ যে কোন ধরনের ইভেন্ট এ্যারেঞ্জ করা যায় অনায়াসে। রিসোর্টটিতে রয়েছে ৪৯৩টি অভিজাত কক্ষ। ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে সুপেরিয়র রুম। হিল ভিউ ও সি ভিউ, এই দুইয়ের সমন্বয়ে সুপেরিয়র কক্ষটি। প্যানারমিক সি ভিউ স্টুডিও স্যুইটে মিলবে কিচেন, ডাইনিং ও লিভিং এরিয়া। এ ছাড়া আছে ব্যালকনি। প্রিমিয়াম সি ভিউ স্যুইটে মিলবে কিচেন, ডাইনিং এবং লিভিং এরিয়া। এক্সিকিউটিভ স্যুইটে রয়েছে দুটি ভিন্ন আয়তনের এক্সিকিউটিভ স্যুইট। এখানেও রয়েছে একই ধরনের সুবিধা। পুরো পরিবার নিয়ে যারা যাবেন তাদের জন্য থাকছে রয়েল ফ্যামিলি স্যুইট। এটি মূলত ব্যালকনি সংযুক্ত এবং সৈকতমুখী। সাথে অন্য সুবিধা থাকছে। বাড়তি পাওনা হিসেবে থাকছে আলাদা লিভিং স্পেস। তিনটি ওয়াশরুম, একটি মাস্টার বেডরুম এবং একটি চিলড্রেনসরুম। বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে বিশেষ কক্ষ। তেমনই একটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট। এর আয়তন আড়াই হাজার বর্গফুট। রাজসিক অন্দরসজ্জা ও ফার্নিচারের পাশাপাশি বড় একটি বারান্দা রয়েছে সঙ্গে। রিসোর্টের ১০ তলায় সৈকতমুখী এই স্যুইটে রয়েছে বাথটাব, জ্যাকুজি, সুনা ও আলাদা লিভিং স্পেস। এখানেই শেষ নয়, নবদম্পতিদের জন্য রয়েছে লাক্সারি হানিমুন স্যুইট। একটি পরিপূর্ণ সংসারের সবকিছুই এখানে রয়েছে। বাড়তি পাওনা হিসেবে থাকছে জ্যাকুজি ও সুইমিংপুল। এ ছাড়া হোটেলটির প্রতিটি রুমেই রয়েছে মিনিবার [ফ্রিজ], টি/কফি মেকার, টিভি, নিরাপদ পানির বোতল, শাওয়ার কিউবিকল। পাওয়া যাবে ২৪ ঘণ্টার রুম সার্ভিস ও ওয়াইফাই সুবিধা। এরই মধ্যে পাঁচ তারকা এই রিসোর্টের সফট ওপেনিং হয়ে গিয়েছে। বছরের যে কোন সময় নির্ঝঞ্ঝাট ও নিরিবিলি অবসর কাটানোর দারুণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে এই রিসোর্টটিতে। ঠিকানা : রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট ও স্পা জালিয়াপালং, ইনানী, উখিয়া, কক্সবাজার। ওয়েব : ৎবংা.পড়ীংনধুধৎ@ৎড়ুধষঃঁষরঢ়নধহমষধফবংয.পড়স
×