ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের মাঠে পোটন

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৫ এপ্রিল ২০১৬

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের মাঠে পোটন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বহুল আলোচিত বাফুফে নির্বাচন উপলক্ষে কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর ফুটবলামোদীরা অপেক্ষায় ছিলেন কবে ইশতেহার ঘোষণা করবে কামরুল আশরাফ খানের নেতৃত্বাধীন ‘বাঁচাও ফুটবল পরিষদ।’ রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় ইশতেহার ঘোষণা এবং প্যানেলের প্রার্থী পরিচিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার, সংগঠক, বিভিন্ন ক্লাবের উর্ধতন কর্মকর্তারা। উল্লেখযোগ্যরা হলেন, মনজুর কাদের, জাকারিয়া পিন্টু, লোকমান হোসেন ভুঁইয়া, গোলাম সারোয়ার টিপু, মোজাফফর হোসেন পল্টু, ইসমাইল হোসেন সম্রাট, খন্দকার ওয়াসিম ইকবাল প্রমুখ। নির্বাচনী ইশতেহারে ১৪টি প্রতিশ্রুতির ঘোষণা দেয়া হয়। ‘বাঁচাও ফুটবল’ পরিষদের ইশতেহার ॥ ১. যে কোন সংগঠনের প্রশাসনিক ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণে সুষ্ঠু জবাবদিহিতা একটি সংগঠনকে সংগঠিত করে। আপনারা আমাদের নির্বাচিত করলে আমরা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপের অবসান ঘটিয়ে আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করব, ২. সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আয়োজিত যে কোন ধরনের ফুটবল টুর্নামেন্ট হতে হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, জাঁকজমকপূর্ণ, দেশ-বিদেশের জাতীয় দলগুলোর অংশগ্রহণে দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুটবল প্রতিযোগিতা। একইভাবে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের বিশিষ্ট ক্রীড়ানুরাগী ও ক্রীড়া সংগঠক এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী আবাহনী ক্লাবের জš§দাতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সন্তান শেখ কামালের নামেও সবধরনের টুর্নামেন্ট হতে হবে মানসম্পন্ন এবং আড়ম্বরপূর্ণ। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, ৩. ফুটবলকে আগের মতো দেশের গ্রাম পর্যায়ে ফিরিয়ে নিতে চাই। প্রতিভা খুঁজতে চাই প্রতিটি ঘরে ঘরে। এ জন্য জেলা লীগ নিয়মিতকরণ, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন, বিভিন্ন জেলায় কোচ নিয়োগ দিয়ে প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে যথাযথ পরিচর্যা করে তাদের দক্ষ খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ৪. ডিএফএগুলোকে বছরে নিয়মিত অনুদানের মাধ্যমে ফুটবল খেলাকে সচল রাখার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ফুটবল সরঞ্জামাদি প্রদান ও ফুটবলের জন্য মাঠের ব্যবস্থা করা হবে আমাদের অন্যতম কাজ। লীগ ও টুর্নামেন্টের পাশাপাশি ঢাকার বাইরে বয়সভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার মতো জরুরী কাজগুলোতেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মনোনিবেশ করতে চাই, ৫. আমরা ফুটবল কার্যক্রমে জেলা ও বিভাগীয় সংগঠকদের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করার প্রয়াসসহ রেফারির মানোন্নয়নে নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আয়োজন করবো। বাফুফের প্রতিটি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আনুপাতিকহারে জেলা ও বিভাগের কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করব, ৬. গ্রাসরুট লেভেলের ‘কোচেস এডুকেশন’ যুগোপযোগী এবং প্রফেশনাল লেভেলে আধুনিক কোচিং প্রোগ্রাম চালু করা হবে। কোচদের জন্য ফেডারেশন ভবনে একটি লাইব্রেরি স্থাপন এবং খেলোয়াড়দের জন্য জিমনেশিয়াম স্থাপনের পরিকল্পনা আমাদের আছে, ৭. দেশের ৮টি বিভাগে ৮টি পূর্ণাঙ্গ একাডেমি তৈরির কার্যকরী উদ্যোগ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রত্যেক জেলায় ফুটবল একাডেমি পর্যায়ক্রমে চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে, ৮. আমরা সিলেট একাডেমির সকল কার্যক্রম ত্বরিত সম্পন্ন করে এই একাডেমিকে আন্তর্জাতিক মানের রূপ দেব। ফিফা সুনামি ফান্ডের অর্থ এবং সরকার কর্তৃক জমি পাওয়ার পরও বরিশালে প্রস্তাবিত ট্রেনিং সেন্টার তৈরির কাজ এখন পর্যন্ত শুরু করেনি বর্তমান কমিটি। অতিসত্বর বরিশালে আন্তর্জাতিকমানের ট্রেনিং সেন্টার তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হবে। ৯. একসময় শেরেবাংলা ও সোহরাওয়ার্দী কাপ ছিল দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা ও আলোচিত টুর্নামেন্ট। নির্বাচিত হলে সেই টুর্নামেন্টগুলো পুনরুজ্জীবিত করা হবে, ১০. কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খেলোয়াড় কোটা বন্ধ রয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তা পুনরায় চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং দেশব্যাপী নিয়মিত স্কুল ফুটবল আয়োজন করে সেখান থেকে প্রতিভাবানদের বাছাই করে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ১১. আমাদের লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ও চ্যাম্পিয়নশিপ লীগের ক্লাবগুলোকে স্বনির্ভর ও প্রকৃত অর্থে পেশাদার ক্লাব হিসেবে গড়ে তোলা। নির্বাচিত হলে অন্য লীগগুলোকেও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ক্লাবগুলোকে স্বনির্ভর করার উদ্যোগ গ্রহণ করব, ১২. একসময় জেলা পর্যায়ে অনুর্ধ-৮ ও ১০ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের বেসিক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। তা এখন পুরোপুরি বন্ধ। আমরা সে ট্রেনিং ব্যবস্থা পুনরায় চালু করব এবং একই সঙ্গে জেএফএ (অনুর্ধ-১৪) আবারও চালু করা হবে, ১৩. অনিয়মিতভাবে চলমান মহিলা লীগের কার্যক্রম নিয়মিতকরণের সব সম্ভাব্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি মহিলা ফুটবল একাডেমির মাধ্যমে জেলাভিত্তিক জাতীয় পর্যায়ের মহিলা খেলোয়াড় তৈরি করা হবে, ১৪. আমরা মনে করি ফুটবলের বর্তমান রুগ্ন চেহারা পাল্টে দিতে সব নবীন ও প্রবীণ ফুটবলার, ক্রীড়া সংগঠক ও সব প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক ক্রীড়া সাংবাদিক ভাইদের সমন্বয়ে সেমিনার ও মতামতের ভিত্তিতে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। প্রতিনিয়ত এ ধরনের মতবিনিময় সভার আয়োজন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
×