ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি প্রার্থীসহ আটক ১০ ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৫ এপ্রিল ২০১৬

বিএনপি প্রার্থীসহ আটক ১০ ফরিদপুরে আওয়ামী  লীগ প্রার্থীর  ভাইকে কুপিয়ে  হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ২৫ এপ্রিল ॥ ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীকে আটক করেছে। শনিবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে জেলার মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের বাগাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আতিয়ার রহমান খান (৫০) বাগাট ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমান খানের বড় ভাই। সাবেক এ সেনা সদস্য পশ্চিম বাগাট গ্রামের মৃত আজিজ খানের ছেলে। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের বাবা। জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ইউনিয়নের রায়জাদাপুর গ্রামে ‘নৌকা’ ও ‘ধানের শীষ’-এ ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাগাট বাজার এলাকায় নৌকা মার্কার সমর্থক মিথুন নাথকে (২৫) রামদায়ের কোপে আহত করে সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভাই আতিয়ার রহমান, তার চাচা রেজাউল করিম (৬০), বাগাট বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন খানসহ কয়েকজন মিথুনকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে প্রায় দেড় শতাধিক অস্ত্রধারী রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তাদের গুরুতরভাবে জখম করে। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আতিয়ার রহমানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত রেজাউল করিম (৬০), শাহাদাত হোসেন, মিথুন নাথ (২৫), বাবুল শেখ (৩০) ও সোহেল ফকিরকে (২৭) ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত নাজমুল (২৯) ও ইমনকে (১৯) মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী আব্দুর রহিম ফকিরসহ ১০ জনকে গভীর রাতে পুলিশ আটক করেছেন। আব্দুর রহমান উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বর্তমানে বাগাট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ানম্যান। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার রাত ১১টায় আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করে। তবে পুলিশী বাধায় তা সম্ভব হয়নি। রাত ১২টার দিকে উত্তেজিত জনতা বিএনপির সমর্থক সাইদ সেখের দোকান ঘর ও বিএনপির অফিস ঘর পুড়িয়ে দেয়। এতে ঘরে থাকা ৪টি মোটরসাইকেল, পাট, ধান ও অন্যান্য মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে দমকলবাহিনী এসে আগুন নেভায়। পুলিশ ২০টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবির সদস্যরা টহল দিতে শুরু করে। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন ও মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার ফরিদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর নিহত আতিয়ারের লাশ বাগাট গোরস্তানে দাফন করা হবে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং বাগাট বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন খানের ওপর হামলার ঘটনায় রবিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছে বাগাট বাজার ব্যবসায়ীরা। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভাই আতিয়ার রহমানের হত্যার ঘটনায় তিন দিনের শোক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
×