ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাকারিয়া স্বপন

প্রাইভেসি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৫ এপ্রিল ২০১৬

প্রাইভেসি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

গত সপ্তাহে লিখেছিলাম, আমাদের জীবনে প্রাইভেসির মূল্য কত? আমেরিকা হলো বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা একটি দেশ। শুধু তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এবং সেবা তৈরির ক্ষেত্রে নয়, এর চিন্তাচেতনা এবং ভবিষ্যত দিক নির্দেশনা- সব কিছুতেই এগিয়ে আছে আমেরিকার এই ক্ষেত্রের মানুষরা। তাদের ভেতর যেমন উদ্ভাবক রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন দার্শনিকও। তাদের অনেকেই সময়ের চেয়ে এগিয়ে আছেন। তারাই মূলত এই শিল্পকে গাইড করছেন। চিন্তাচেতনায় তারা যা ধারণ করেন, আমরা অনেকেই তা এখনও ভাবতে পারি না; কিংবা মানতে পারি না। তেমনি একটি কেস ছিল এ্যাপলের সঙ্গে আমেরিকার সরকারের প্রাইভেসি নিয়ে বিরোধ। যে দেশে জর্জ ওয়াশিংটনের মতো মানুষ জন্মেছে, যে দেশের নেতৃত্বে ছিল আব্রাহাম লিংকনের মতো মানুষ, সেখানে বর্তমান সময়ের নতুন ধারার মানুষগুলোরও বিচরণ রয়েছে। তারা মনে করছেন, ঠিক কোন্ পথে এগুলো এই শতকের সমাজ, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর আগামী ভবিষ্যত। এ্যাপলের স্টিভ জবস যেমন একটা বিশাল ছাপ রেখে গিয়ে পাল্টে দিয়ে গেছেন আমাদের জীবন, তেমনি আরও অসংখ্য মানুষ আছেন যাদের চিন্তায় এবং চেতনায় পরিবর্তিত হয় এই গ্রহ। এটা শুধু ব্যবসা নয়, এটা মূলত ভবিষ্যতে গড়ে দেয়া। সেই তালিকায় রয়েছেন এ্যাপলের বর্তমান সিইও টিম কুক। তিনি মনে করেছেন, মানুষের প্রাইভেসি আগে। মানুষ বেঁচে থাকে তার প্রাইভেসিকে নিয়ে। সমাজ এবং দেশ তার সঙ্গে গড়ে উঠবে। সমাজকে, প্রযুক্তিকে এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। এই চেতনায় বিশ্বাস করেন বলেই তিনি আমেরিকা সরকারের কথা শোনেননি। তিনি একজন অপরাধীর আইফোনের পাসওয়ার্ড এবং সেটা ভেঙ্গে দিতে রাজি হননি। বিগত কয়েক মাস ধরে যে বিতর্ক চলছিল, সেখানে তিনি অটুট থেকেছেন; থাকতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত সেখানকার কোর্ট তাদের আদেশ তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, এ্যাপলকে এই কাজে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু পরবর্তীতে কোর্ট সেই আদেশ তুলে নেয়। তার মূল কারণ হিসেবে বলা হয়, সরকারের কোন আইন একটি প্রতিষ্ঠানকে তার সিস্টেমকে ব্রেক করার অনুমতি দেয় না। দেশে এমন কোন আইন নেই, যার মাধ্যমে সরকার এ্যাপলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে মিডিয়াতে খবর এসেছে যে, বিশেষ উপায়ে এফবিআই সেই ফোনটি ভাঙ্গতে সমর্থ হয়েছে। তাই এখন আর এ্যাপলের সহযোগিতার প্রয়োজন নেই। আমার আগের লেখাটি প্রকাশ হওয়ার পর অনেকেই বলেছেন, দেশের নিরাপত্তা আগে, তারপর প্রাইভেসি। অনেকেই বলেছেন, সেখানে রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে কেন আসল ব্যক্তির পাসওয়ার্ড বের করা হচ্ছে না ইত্যাদি। আমাদের দেশের মানুষ, আমাদের মতোই চিন্তা করেছেন। তারা এর আগে-পিছে দেখতে পাননি, এর অপব্যবহার কত প্রকারে হতে পারে। একজন ক্রিমিনালকে ধরতে গিয়ে, অসংখ্য নিরীহ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে, সেই এনালাইসিসগুলো আমরা দেখতে পাই না এবং সেটা দেখার মতো গভীরতাও হয়তো আমাদের নেই। আমি একটি বিষয় মাঝে মাঝে ভেবে একা একাই হাসি। বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান যদি এই সাহস দেখাতে যেত, তাহলে তাদের পরিণতি কী হতো? আমাদের শিল্প কি সেটাকে সমর্থন দিতে পারত? তার চেয়েও বড় কথা, আমাদের কি সেই মাইন্ড-সেট আছে? আমরা কি আসলেই সেভাবে ভাবতে পারি? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, চিন্তা-চেতনায় বিশালত্ব না থাকলে সেই ক্ষেত্রটি বড় আকার ধারণ করে না। বর্তমান সময়ের তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব নেতাদের থেকে আমাদের মানসিক দূরত্ব কয়েক শ’ বছর পিছিয়ে। আমরা জানিই না, আমরা কী জানি না। তাই এই দূরত্ব নিয়েই আমাদের পথচলা। সেল্ফ ড্রাইভিং গাড়ির জন্য চীন সেল্ফ ড্রাইভিং গাড়ি এখন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গরম বিষয়। গুগল প্রথম এই পথে হাঁটা শুরু করে। তারপর আরও অনেকে এখনও এই রাস্তায় নামছে। সর্বশেষ ঘোষণা এলো চীনের পক্ষ থেকে। গুগলের মতো চীনের নিজস্ব ভাষায় সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে যার নাম বাইডু। এর আবার আমেরিকার নেসডেক স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত। এই সপ্তাহেই বাইডু ঘোষণা করে যে, তারা আমেরিকার সিলিকন ভ্যালিতে নতুন একটি টিম নিয়েছে যাদের কাজ হবে ড্রাইভার ছাড়া গাড়ি তৈরি করা। এর কিছুদিন আগেই চীনের সরকার ঘোষণা দিয়েছিল যে, আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যেই চীনের মূল হাইওয়েগুলো ড্রাইভারহীন গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে এবং সেই সূত্র ধরেই বাইডু মাঠে নেমে গেছে। বুঝাই যাচ্ছে, চীন সরকার এই খাতে পিছিয়ে থাকতে চাইছে না। এটা এই পৃথিবীর সবাই এখন বুঝে ফেলেছে যে, ড্রাইভার ছাড়া গাড়ি চালানোই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ এবং দক্ষ। কারণ, গাড়িগুলোকে মানুষের যোগ্যতার উপর নির্ভর করতে হবে না। মেশিন মানুষের চেয়ে দ্রুত হিসাব করতে পারে; এবং রাস্তায় কত গতিতে চালাতে হবে এবং কোথায় কী সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা আমাদের অসংখ্য ড্রাইভারের চেয়ে ভাল পারবে। তাহলে কেন মেশিনের উপর নির্ভর করা নয়? বাইডু ২০১৬ সালের মধ্যেই সিলিকন ভ্যালিতে ১০০ জনের মতো গবেষক, প্রকৌশলী নেবে যাদের কাজ হবে গাড়িগুলো তৈরি করা এবং টেস্ট করা। পাশাপাশি বাইডু চীনে ড্রাইভারহীন গাড়ি নামানোর জন্য জার্মানির বিএম ডব্লিউ গাড়ির প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। তারা ২০১৫ সালে দাবি করেছিল যে, প্রাথমিকভাবে বেজিংয়ের রাস্তায় তারা ড্রাইভারহীন গাড়ির পরীক্ষা সফল হয়েছে। অর্থাৎ বুঝাই যাচ্ছে, তারা গাড়ির কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে। এখন সহজাত কারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে, বাংলাদেশে কবে ড্রাইভারহীন গাড়ি আসবে? হয়তো কেউ কেউ বিদেশ থেকে শখ করে নিয়েও আসবেন। কিন্তু শুধুমাত্র আমদানি করে নিয়ে এলেই কি হলো? এর জন্য কি কোন নীতিমালা লাগবে না? রাস্তাঘাটের কোন পরিবর্তন লাগবে না? নাকি আমরা এগুলো নিয়ে আরও পঞ্চাশ বছর পর ভাবব? অপেরা ব্রাউজার ফ্রি ভিপিএন সেবা গত সপ্তাহে বিখ্যাত ব্রাউজার কোম্পানি অপেরা ঘোষণা দিয়েছে যে, আগামী ভার্সনে তারা বিনামূল্যে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) সেবা যুক্ত করে দেবে। এর ফলে ব্যবহারকারীকে আর আলাদা করে ভিপিএন এক্সটেনশন ডাউনলোড কিংবা কিনতে হবে না। অপেরা ব্রাউজারের মাধ্যমে নিরাপদেই যে কোন সাইট ব্রাউজ করা যাবে। অপেরা নিজেই নিরাপদ প্রক্সি সার্ভার সেবা দেবে। সংবাদটি পড়ে আমি এতোই হাসছিলাম যে, আশপাশের অনেকেই সেটা খেয়াল করেছে। সেটা এবারে পাঠকদের বলে দেই। বিভিন্ন দেশের সরকার বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্লক করে দেয়। তখন একদল মানুষ প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে সেই সাইটগুলো ব্যবহার করে। যেমনÑ ফেসবুক কিংবা ইউটিউব বন্ধ করে দেয়া হলো। তখন মানুষ প্রক্সি ব্যবহার করে। মূলত সেটা ভিপিএন সেবা। এরপর আর কোন সাইটকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। এমনকি কোন কোন অফিসে ফেসবুক ব্রাউজ করা বন্ধ। অপেরা দিয়ে খুব সহজেই তখন ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে। এমনকি ফায়ারওয়ালকেও সেটা ঠেকাতে বেশ কষ্ট হবে। তবে এর উল্টো ক্ষতিকর প্রয়োগও আছে। কোন কোন দেশ পর্নসাইটগুলোকে ব্লক করে দেয়। ব্রাউজারের ভেতর যদি প্রক্সি সার্ভার ফিচার বিল্ট-ইন থাকে, তখন বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যাবে। বিশেষ করে অপেরা ব্রাউজারটি যখন মোবাইলে খুব জনপ্রিয়। ৪৬তম ধরিত্রী দিবস গত (২২ এপ্রিল ২০১৬) ছিল ৪৬তম বিশ্ব ধরিত্রী দিবস। ১৯৭০ সালে আমেরিকার উইসকনসিন রাজ্যের সিনেটর গেলর্ড নেলসন ধরিত্রী দিবস (ইংরেজীতে আর্থ ডে) চালু করেন। ১৯৬৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়া যখন তেলে ভেসে যাচ্ছিল তখন তিনি অনুভব করেছিলেন পরিবেশের উপর কী মারাত্মক ক্ষতির কারণ হচ্ছে এই তেল। তিনি বিশ্বাস করতেন, তিনি এই পৃথিবীর কিছু এনার্জি সংরক্ষণে কাজ করতে পারেন। তারপর থেকেই তিনি এই দিনকে বেছে নেন। তারপর বিগত ৪৬ বছর ধরে এটা পালন করে আসছে মানুষ। এখন তো পুরো বিশ্বেই ঘটা করে এটা পালন করা হয়। এই বছরের ধরিত্রী দিবসের মূল থিম হলো ‘পৃথিবীর জন্য গাছ’। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে, একটি গাড়ি ২৬০০০ মাইল চালালে যে পরিমাণ কার্বন-ডাই অক্সাইড তৈরি হয় সেটা শোষণ করে নেয়ার জন্য এক একর জমির পরিমাণ পূর্ণাঙ্গ গাছের প্রয়োজন। তার অর্থ দাঁড়াল, আমরা প্রতিদিন যে পরিমাণ গাড়ি চালাচ্ছি এবং তেল পুড়াচ্ছি তা যদি পরিবেশকে টেনে নিতে হয় তাহলে কত শত একর জমিতে গাছ লাগাতে হবে সেটা ভাবলেই মাথা ঘুরানোর কথা এবং সেটাই হচ্ছে। এবারে জাতিসংঘের অধীনে ১৭০টি দেশের নেতারা একত্রে হয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে একমত হয়েছেন যে, তারা সবাই মিলে এমন সব ব্যবস্থা নেবেন যেন গ্রহের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনা যায়। সিনেটর গেলর্ড নেলসন যে চিন্তা থেকে এই ধরিত্রী দিবসের ডাক দিয়েছিলেন তা এখন আরও বেশি জরুরী হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য। এই গ্রহের মালিক যদিও ৭০০ কোটি মানুষ, তবে আমেরিকা এবং চীনে এই গ্রহের সবচেয়ে বেশি কার্বন-ডাই অক্সাইড তৈরি করে। এরা দুজনই সবচেয়ে বড় কালপ্রিট। তবে বাকিদেরও ভূমিকা আছে বৈকি! বর্তমান সময়ে যারা ঢাকা শহরে বসবাস করছেন, তারা জানেন গরম কত প্রকার ও কি কি। আমি ঢাকার বাইরের খবর বলতে পারব না। কম্পিউটারে দেখা যায়, ঢাকার তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রীর ওপরে থাকছে, যা আমরা আগে কখনই দেখিনি। ঢাকায় যখন আগে ২৮-২৯ ডিগ্রী উঠে যেত, তাতেই আমাদের জীবন ত্রাহি ত্রাহি করত। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখির জীবনও হয়ে উঠত সঙ্কটময়। জীবন বাঁচানোর জন্য কতই না চেষ্টা। আর এখন যখন সেটা ৩৬ ডিগ্রীর ওপর চলে গেছে, তখন তো আমরা বুঝতেই পারছি তাপের তীব্রতা কতটা কঠিন হতে পারে। কিন্তু তারপরেও কি কমেছে পরিবেশের ওপর আমাদের অত্যাচার? আমরা কি জলাশয়গুলো ভরাট করে ফেলে জমির ব্যবসায় নামিনি? কেউ কি আমাদের থামাতে পেরেছে? বরং আমরা সবাই পাল্লা দিয়ে সেই জমি কিনেছি। কে কতগুলো প্লটের মালিক সেটাই এখন বড় আত্মতৃপ্তি। সেই জমির দাম কতগুণ বেড়েছে সেটা ভেবে আমরা খুশি হই। পাশাপাশি গাছ কি আমরা কম কেটেছি? আশপাশের যে বড় বনগুলো ছিল, সেগুলো কি আর আছে? কেউ কি গাজীপুর গিয়েছেন? এই কী অত্যাচার সেই বনের ওপর! কে আছে থামাবার? ঢাকা শহরের গাড়ি কি আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি? গাড়ির ফিটনেস কি পরীক্ষা করছি? প্রতিবছর কত হাজার গাড়ি নামে রাস্তায়? তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কত হাজার এয়ারকন্ডিশনার (এসি) লাগাচ্ছি অফিসে আর বাসায়? এসি ছাড়া জীবন চালানো মুশকিল। কিন্তু সবাই মিলে যে কার্বন-ডাই অক্সসাইড তৈরি করছি, সেটা নির্মূল করছে কে? গাছ তো সেভাবে লাগাইনি। বর্তমানে যদিও প্রচুর নার্সারি চোখে পড়ে। কিন্তু সেভাবে কি সবাই বাসায় বাসায় কিংবা ছাদে ছোট করে হলেও অসংখ্য গাছ লাগাই? আগেই তথ্য দিয়েছি, একটি ২৬০০০ মাইল গাড়ি চালালে ১ একর জমির পরিমাণ পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষ লাগবে? আমাদের ছাদের গাছগুলো অনেক ছোট। সেগুলো আমাদের সাহায্য করতে পারে। তবে সংখ্যায় আরও অনেক বাড়াতে হবে? কে বাড়াবে? আমরা সবাই মুখে বলি, এটা আমাদের দেশ। কিন্তু কাজে কি আসলেই কিছু করি? তবে একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু এই ঢাকা শহরকে আমরা একটু হলেও সহনীয় করে তুলতে পারি। আমরা সবাই যদি যার যার বাসায় মাত্র ১০টি করে গাছ লাগাই (টবে), তাহলে অন্তত ১ কোটি গাছ লাগানো হয়ে যাবে। তারপর যাদের ছাদ আছে, সেখানে যদি কেউ আরও বেশি লাগান, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। আমরা প্রতিটি এপার্টমেন্ট যে পরিমাণ কার্বন তৈরি করি (আমাদের ফ্রিজ, এসি এবং শরীর থেকে) সেটুকুই যদি আমরা ফিক্স করে ফেলি, তাহলে কি পাল্টে যেতে পারে না আমাদের জীবন? আমার এটুকু জীবনে দেখে ফেলেছি, কিছু মানুষ গাছ পছন্দ করে না। আমার কাছে মনে হয়, তারা সাইকোপ্যাথ। সে বুঝতেই পারে না, গাছ তাকে কিভাবে বাঁচিয়ে রেখেছে। যে গাছ নিজের জীবন দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে, তাকে যে পছন্দ করে না, তার মস্তিষ্কে সমস্যা আছে, তার চিন্তার দুর্বলতা আছে। সেই মানসিক রোগীগুলোকে বাদ দিলে, বাকিরা তো বাসায় টবে/ছাদে গাছ লাগাতে পারেন? সবার যদি একটু একটু কন্ট্রিবিউশন থাকে, তাহলেই কিন্তু একটি এপার্টমেন্ট, একটি সড়ক, একটি মহল্লা, একটি এলাকা অনেক বেশি সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। আবার এমন মানুষও দেখেছি, যারা পুরো বাড়িকে সুন্দর প্রকৃতির অংশ বানিয়ে বসে আছেন। কী সুন্দর সবুজে ঘেরা তাদের ঘরবাড়ি। এই গাছের পাতাগুলো যতটা সবুজ, তাদের মনটা হয়তো আরও সবুজ। খুব ইচ্ছে হয়, সেই মানুষগুলো যদি তাদের ওই সবুজকে পুরো ঢাকায় ছড়িয়ে দিতে পারতেন। আমরা খুব সুন্দর একটি বাসযোগ্য শহর পেয়ে যেতাম। চলুন, আমরা নিজেরা যেটুকু পরিবেশ দূষণ করছি, অন্তত সেটুকু পরিষ্কার করি। প্রতিটি বাসা সবুজ করে ফেলি। গাঢ় সবুজ গাছে এবং জীবনে। সবাই মিলে এই তীক্ষè গরমকে একটু সহনীয় করি। ২৩ এপ্রিল ২০১৬ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×