ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রযুক্তিগত দুর্বলতাকে দুষছে সিআইডি

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রযুক্তিগত দুর্বলতাকে দুষছে সিআইডি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রযুক্তিগত দুর্বলতাকে দুষছে সিআইডি। তারা বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রযুক্তিগতভাবে মোটেই ‘আধুনিক ছিল না’। প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এমনই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির মামলার অন্যতম তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হেল বাকী। সাক্ষাতকারে বাকী বলেন, ‘সাধারণ কম্পিউটারে যে পরিমাণ সাইবার নিরাপত্তা থাকে, সেটুকু ছিল না বাংলাদেশ ব্যাংকের। আর যাদের এই প্রযুক্তিগত দিকটা আধুনিক করার কথা ছিল, তারাও সেটা করেননি।’ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেউ ইচ্ছা করে দুর্বল করে রাখলে সেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি। এদিকে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রধান শাহ আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে ফায়ারওয়াল না থাকা এবং নেটওয়ার্কিংয়ে স্বল্প মূল্যের সেকেন্ড হ্যান্ড সুইচ ব্যবহারের কারণে সাইবার ডাকাতি করতে হ্যাকারদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক করে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৯৫১ মিলিয়ন ডলার চুরির চেষ্টা করে। পরে বেশ কিছু ‘পেমেন্ট’ বন্ধ করে দিয়ে বেশিরভাগ অর্থচুরি ঠেকানো গেলেও, ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সে স্থানান্তরে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। এরপর ওই অর্থ ফিলিপিন্সের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি এ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়? রয়টার্সের সাক্ষাতকারে শাহ আলম বলেন, ‘অত্যাধুনিক সুইচ ব্যবহার না করার কারণে হ্যাকাররা কী করেছে এবং কিসের ভিত্তিতে করেছে, তা নিরূপণ করাও তদন্তকারীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে?’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকের বাকি সব নেটওয়ার্ক থেকে সুইফট ফ্যাসিলিটিকে আলাদা রাখা প্রয়োজন। আর সেটা সম্ভব হতো যদি ব্যাংক আরও ব্যয়বহুল সুইচ ব্যবহার করত।’ তিনি জানান, ব্যাংকের সুইফট রুমের নিরাপত্তা ইস্যুটি স্পর্শকাতর হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট রুমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না। শাহ আলম বলেন, ‘সুইফট রুমে নিরাপত্তাজনিত ঘাটতি নিরূপণ করার দায়িত্ব সুইফট কর্তৃপক্ষের। অথচ হ্যাকিংয়ের আগে তারা এ ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ তবে সিআইডি কর্মকর্তাদের অভিযোগকে অবান্তর বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।
×