ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আনন্দঘন আয়োজনে আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার প্রদান

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

আনন্দঘন আয়োজনে আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আনন্দঘন আয়োজনের মাধ্যমে প্রদান করা হলো ২০১৪ সালের আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার। আর্থিক মানদ-ের বিচারে দেশের সর্বোচ্চ এ সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন সাবেক কূটনীতিক ও লেখক ফারুক চৌধুরী এবং কথাসাহিত্যিক শাহীন আখতার। ‘জীবনের বালুকাবেলায়’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের জন্য ফারুক চৌধুরী ও ‘ময়ূর সিংহাসন’ শিরোনামের ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাসের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন শাহীন আখতার। আর্থিক মূল্যমান বিচারে সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারটি প্রদান করা হয় শনিবার। নর্বনির্মিত আইএফআইসি ব্যাংক ভবন মিলনায়তনে লেখকদ্বয়ের হাতে পুরস্কার হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা, স্মারক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পুরস্কার প্রদানকে কেন্দ্র করে উদ্বোধন করা হয় আইএফআইসি ব্যাংক টাওয়ারের। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক ও অতিরক্ত সচিব জালাল আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। পুরস্কার প্রক্রিয়ার সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ আলী খান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শাহ্্ এ সারওয়ার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদার। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্বৃতি টেনে ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘আকাশে তো আমি রাখি নাই, মোর উড়িবার ইতিহাস/ তবু, উড়েছিনু এই মোর উল্লাস...’। সে কারণেই এই বয়সে এসে স্বীকৃতি পাওয়াটা আনন্দের। মূলত আমি সরকারী চাকুরে ছিলাম। অবসরের পর যুক্ত হই লেখালেখিতে। সরকারী চাকরিজীবীদের উদ্দেশ করে উর্দু কবি আকবর এলাহাবাদী বলেছিলেনÑ প্রথমে বিএ পাস করে, তারপর চাকরিতে যোগদান, তারপর বিয়ে, তারপর অবসর, সব শেষে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে। আমি আট-দশজন সরকারী পেনশনপ্রাপ্ত কর্মচারীর মতো পেনশন নিয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকিনি। লেখালেখির মাধ্যমে কিছু কাজ করার চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার জীবনে তিনটি কাল দেখেছি। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে ভারতবর্ষ, ভারতবর্ষ থেকে পূর্ব পাকিস্তান, পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই সূত্রে আমি ইতিহাসের বিবর্তন দেখেছি। সময়গুলোকে আমার আত্মজীবনীর মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মনের তাড়না থেকেই আত্মজীবনী লিখেছি। এ বইটি যদি পাঠককে কিছুটা হলেও আনন্দ দেয়, সেটাই আমার সার্থকতা। একজন কূটনীতিক হওয়ায় ক্ষমতার পালাবদলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁদের কাছ থেকে দেখার কারণে বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে জীবনে। সেই সব বিষয়ও তুলে ধরেছি আত্মজীবনীতে। শাহীন আখতার বলেন, আমি ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস লিখেছি। উপন্যাস ইতিহাস নয়, ইতিহাসের ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়। আমি সেই কাজটিই করেছি। ব্রিটিশরা মুঘল সামাজ্যের হেরেমখানাসহ নানা বিষয়ে অতিরঞ্জন করে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করেছে। আমি সেখানে প্রকৃত সত্যটাকে খুঁজেছি। পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদ্বয়কে অভিনন্দন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে স্কুল জীবনেই বন্ধুত্ব হয়। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেটেছে অনেক সময়, সরকারী চাকরির ক্ষেত্রেও যখন-তখন দেখা হয়েছে। তাঁর লেখক জীবনের সূচনালগ্ন থেকে আমি সঙ্গে রয়েছি। আর শাহীন আখতারের সঙ্গে আজকেই প্রথম পরিচয়। এ পুরস্কারটি এর আগে যেসব লেখক পেয়েছেন তাদের অধিকাংশের সঙ্গেই আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশের সাহিত্যের অগ্রগতি নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। এছাড়া বক্তব্যে তিনি লন্ডনে চিকিৎসারত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের আরোগ্য কামনা করেন। সভাপতির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান বলেন, আজকের সকালটা আমার কাছে অনেক আনন্দের। কারণ পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন আমার বড় ভাইয়ের মতো, অন্যজন ছোট বোনের মতো। অবসর জীবনে খেয়ালের বশে লেখা শুরু করেন ফারুক চৌধুরী। এর পর তিনি একাধিক বই লিখেছেন, একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। শাহীন আখতারেরও অনেক বই বেরিয়েছে। লেখক হিসেবে তিনি পর্যবেক্ষণ শক্তির পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর লেখা গভীর অন্তর্দৃষ্টি, সহানুভূতি ও অধ্যয়নের পরিধিতে সমৃদ্ধ। কামাল চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে শুধু নিজস্ব ভাষার বাইরেও ভিন্ন ভাষায় লেখা হচ্ছে। স্ব-ভাষার লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতা না করলে শিল্প-সাহিত্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে হলে ভাল অনুবাদক তৈরি করতে হবে ও পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত রয়েছি। তরুণদের প্রতি আমাদের সহযোগিতার হাত আরও প্রসারিত। ১৮ তলাবিশিষ্ট এ ভবন সজ্জার জন্য পাঁচ শ’ থেকে ছয় শ’ চিত্রকর্ম আমরা সংগ্রহ করব, যার জন্য তরুণ শিল্পীদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে। ওই কর্মশালার বাছাইকৃত ছবিই এ ভবনে প্রদর্শিত হবে। তরুণদের উৎসাহিত করতে আমরা এ কাজ করব। এবার নিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রদান করা হলো আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার। প্রতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরে প্রকাশিত উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-সাহিত্য, কবিতা, ভ্রমণকাহিনী, আত্মজীবনী ও অনুবাদ-সাহিত্যÑ এ সাত শাখা থেকে বিচারকম-লীর সিদ্ধান্তে দুটি বইকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ২০১১ সালে সৈয়দ শামসুল হক ও ফারুক মঈনউদ্দীন, ২০১২ সালে সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠান এবং শিমুল বড়ুয়া, ২০১৩ সালে জহিরুল ইসলাম ও খসরু পারভেজ আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। মামুনুর রশীদ : থিয়েটারের পথে গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ কোন বইয়ের প্রকাশনা মানে ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠান। তবে নাট্যজন মামুনর রশীদের জীবভিত্তিক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় আনন্দ আড্ডায়। গল্পচ্ছলে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত ও হাস্যরসে ভরপুর। মামুনুর রশীদের জীবনধর্মী কফি টেবিলবুক ‘মামুনুর রশীদ : থিয়েটারের পথে’ বইটির প্রকাশনা উৎসব শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। চিত্রনির্ভর বইটি যৌথভাবে রচনা করেছেন ফয়েজ জহির ও হাসান শাহরিয়ার। বইটির ভূমিকা লিখেছেন হাসান আজিজুল হক। অধ্যাপক আব্দুস সেলিমের সঞ্চালনায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মামুনুর রশীদকে নিয়ে বৈঠকী ঢংয়ে আলোচনা করেন শিল্পী রফিকুন নবী, রাজনীতিবিদ হায়দার আকবর খান রনো, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং নাট্য নির্দেশক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ। সূচনা বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বইটির প্রকাশনা সংস্থা বাঙলা পাবলিবেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদিব রশীদ মামুন। সূচনা বক্তব্যে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাংলাদেশের নাটকের এমন কোন স্থান নেই যেখানে মামুনুর রশীদের ছোঁয়া নেই। তিনি নাট্যকার, নির্দেশক ও সর্বোপরি অভিনেতা হিসেবে নাট্য ভুবনে বিচরণ করেছেন। তাঁকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের নাট্যচর্চার ইতিহাস পরিপূর্ণ হয় না। বৈঠকী আলোচনার প্রারম্ভে রামেন্দু মজুমদার বলেন, মামুনের কাছ থেকে তাঁর সহকর্মীরা অনুপ্রেরণা পায়। নাট্যকারদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সমাজ সচেতন। যে কোন রাজনৈতিক সঙ্কট তিনি তাঁর নাটকে তুলে এনেছেন। এ সময় তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর অনুরাগের কথাও জানান। হায়দার আকবর খান রনো বলেন, মামুনুর রশীদ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্য প্রতিভা। এই বইটিতে অল্প কথায় ব্যক্তি, শিল্পী, সংগঠক মামুনুর রশীদ উঠে এসেছেন। তাঁকে আমি বাংলাদেশের উৎপল দত্ত মনে করি। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, মামুনুর রশীদের সঙ্গে আমার সখ্য ৪৫ বছরের। আমরা সবাই ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি এখনও মার্কসবাদী চেতনায় নিবেদিত রেখেছেন নিজেকে। আমরা সবাই কিছুটা সরে এসেছি। এ সময় তিনি ছাড়া আর মার্কসিস্ট নাট্যকার খুঁজে পাওয়া যায় না। একটা সময় ছিল যখন রাত বারোটার পর তিনি আমাকে ফোন করে ‘লিডার’ সম্বোধন করে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। সব বিষয়ে আমরা একমত হতাম না, ঝগড়াও হতো। তবে বন্ধুত্বটা অটুট রয়েছে। আমৃত্যু তেমনটাই থাকবে। শেষ বক্তা হিসেবে রফিকুন নবী বললেন, বইটি পড়লে পাঠকের তাঁর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়বে। যেমন বেড়েছে আমার। বিশেষ করে তাঁর ‘প্রেম ও নারী’ অধ্যায়টি কৌতূহল জাগিয়েছে। আমি এ বিষয়ে আরও বেশি জানতে চাই। রফিকুন নবীর হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে মামুনুর রশীদ বলেন, প্রেম ছাড়া জীবন হয় না। বিশেষ করে আমরা যারা সৃজনশীল কাজে জড়িত। সব প্রেম উল্লেখ করতে হয় না। আমিও আমার জীবনের সব প্রেম নিয়ে হয়ত লিখব, তখন এটা নিয়ে বিস্তারিত বলব না। তার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কখনও কবিতা লেখার চেষ্টা করেছেন কিনাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুর রশীদ বলেন, এক সময় কবিতা লেখার চেষ্টা করেছিলাম। দশ-বারোটি লিখেছিলামও। তবে সেটা প্রকাশিত হয়নি। কবি হওয়ার সেই আকাক্সক্ষা পূর্ণ হয়নি বলেই নাটকে প্রবেশ করেছি। ২০০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার টাকা। বইটিতে মামুনুর রশীদের জীবন ও নাট্যচর্চা সম্পর্কিত নানা বিষয়ের তথ্যের সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্র। পঞ্চম জাতীয় যুবনাট্য উৎসব শুরু ॥ তরুণ নাট্যকর্মীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে শুরু হলো পঞ্চম জাতীয় যুবনাট্য উৎসব। ‘আমরা আনিব রাঙা প্রভাত’ সেøাগানে শনিবার আট দিনব্যাপী উৎসবের সূচনা হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায়। আট দিনের এ উৎসবে অংশ নিচ্ছে সারা দেশের ৩১টি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও যুব নাট্যদল। নাট্যশালার মূল হল, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল এবং সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন (পিটিএ) আয়োজিত উৎসবে সহায়তা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শনিবার বিকেলে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে থেকে বের করা হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে নাট্যশালার লবিতে পরিবেশিত হয় নাচ ও গান। এর পর নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধন করেন অতিথিরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন উৎসব উদ্বোধক আন্তর্জাতিক শিশু নাট্য উৎসবের প্রবক্তা ও জার্মান এ্যামেচার থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতি নরবার্ট রাডারমাখার। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও পিটিএর প্রতিষ্ঠাতা লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী আলোচনায় অতিথি ছিলেনÑ সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, ইন্টারন্যাাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার ও পিটিএর উপদেষ্টা এসএম মহসীন। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে মঞ্চস্থ হয় পাঁচটি নাটক। নাট্যশালার মূল মঞ্চে পরিবেশিত হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার এ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিজ বিভাগের নাটক ‘শ্যাম-রায় কীর্তন’। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় নাট্যতীর্থ ঢাকার প্রযোজনা ‘কঙ্কাল’ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের নাটক ‘চাঁনমতির পালা’। সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাটক ‘পাদটীকা’ এবং ঢাকার নাট্যদল শব্দ নাট্য চর্চা কেন্দ্রের প্রযোজনা ‘ইনফরমার’। প্রতিদিনের প্রদর্শনী শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ রবিবার চারটি নাটকের প্রদর্শনী হবে। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে টঙ্গীর নাট্যভূমির প্রযোজনা ‘মঞ্চেচিত্রে’ এবং গোবিন্দগঞ্জের চিন্তার থিয়েটারের প্রযোজনা ‘বেহুলা’। সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে রংপুর নাট্যকেন্দ্রের ‘মহুয়া প্রেমে’ এবং ঢাকার রঙ্গপীঠ নাট্যদলের প্রযোজনা ‘খেয়া পাড়ের মাঝি’। নৃত্য দিবসের সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু ॥ আগামী ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। ‘চিত্ত মম বিকশিত হোক নৃত্যের তালে তালে’ সেøাগানে যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। চলবে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার সামনে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উপস্থিত ছিলেনÑ বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে কামাল লোহানী বলেন, যে সংস্কৃতি বাংলার মানুষকে সমৃদ্ধ করেছে তার প্রতি আমাদের আরও মনযোগী হতে হবে, যার জন্য সংস্কৃতিচর্চা বৃদ্ধি করতে হবে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বিশ্বে যদি সংস্কৃতিচর্চার প্রবাহ শক্তিশালী না হয় তবে পৃথিবীকে শাসন করবে অস্ত্র। ফলে সংস্কৃতিচর্চা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে ছিল নৃত্য পরিবেশনা। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সমবেত নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নৃত্যসন্ধ্যা। এর পর একে একে দলীয় নৃত্য ও একক নৃত্যের নান্দনিকতায় উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন নৃত্যশিল্পীরা। আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নৃত্য সংগঠনের শিল্পীদের অংশগ্রহণে মেলা ও নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই মেলা ও নৃত্যানুষ্ঠান চলবে। ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসবের সমাপনী আয়োজন।
×