ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী

২০১৯ সালের মধ্যে সব সরকারী কর্মকর্তার জন্য শতভাগ আবাসন

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

২০১৯ সালের মধ্যে সব সরকারী কর্মকর্তার জন্য শতভাগ আবাসন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৯ সালের মধ্যে সব সরকারী কর্মকর্তার জন্য শতভাগ আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। ঢাকাবাসীর সমস্যা নিরসনে রাজউককে সঠিকভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। শনিবার ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত ‘জাতীয় অর্থনীতিতে আবাসন খাত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ পরামর্শ দেন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার সব মানুষের জন্যই আবাসনের ব্যবস্থা করবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সব সরকারী কর্মকর্তার জন্য শতভাগ আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে তার আগে আবাসন খাতের উন্নয়নের জন্য রাজউক ও রিহ্যাবের মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাজউকের পরিধি আর কতদূর যাবে, আমার তা জানা নেই। মনে হয়, আমার কুমিল্লা জেলা পর্যন্ত চলে যাবে। ঢাকা শহরের পরিধি অনেক বেড়েছে। রাজউককে আরও চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। এই সরকারী সংস্থাটি আরও ১০০ বছরের জন্য আগাম চিন্তা করলে ঢাকা শহরের এত সমস্যা হতো না। তাদের চিন্তা পেছনের দিকে। সামনের কোন চিন্তা করে তারা কাজ করে বলে আমার জানা নেই। তিনি আরও বলেন, রাজউক বলতে পারবে না, আগামী ২০৫০ সালে ঢাকা শহরের মানুষ কত হবে। তারা শুধু নানা ভুল ধরে মানুষকে কষ্ট দিতে পারে। তারা প্রতিনিয়তই আইন পরিবর্তন করে। এক সময় তারা বলেছে, গুলশানে ১৫তলার অধিক উচ্চ ভবন নির্মাণ করা যাবে না। অথচ এখন ৩৫তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। রিহ্যাব ও রাজউকের মধ্যে একটি সমন্বয় চেয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের জন্য ভাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অপ্রদর্শিত আয় প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, অপ্রদর্শিত ও কালো টাকা এক নয়। বিভিন্ন কারণে এসব টাকার জন্ম। কেউ এক কোটি টাকার জমি কিনেছে বৈধ টাকা দিয়ে অথচ ৫০ লাখ টাকার দলিল তৈরি করা হলো। এতে করে ৫০ লাখ টাকা অপ্রদর্শিত বলে উল্লেখ করা হবে। মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ডানদিকের কাজ বামদিকে, বাঁদিকের কাজ ডানদিকে হচ্ছে। কী আজব ব্যাপার! বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ সভায় বলেন, আবাসন মানুষের মৌলিক চাহিদা। সঠিকভাবে গ্রাহকদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে হবে। মানুষকে অহেতুক কষ্ট দেয়া যাবে না। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারীভাবে হোম ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ ও নারীদের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ সুদে হোম লোন দিতে হবে। আবাসন খাতে ব্যাংক ঋণের দেয়ারও দাবি করেন মাতলুব। রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, অর্থ পাচার বন্ধে আগামী বাজেটে আবাসন খাতে শর্ত ছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে ওই টাকা দেশের বাইরে চলে যাবে। সরকারীভাবে হোম লোনের ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে তিনি দেশের আবাসন খাতের জন্য বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানান। শামসুল আলামিন আরও বলেন, আমাদের দেশে ১৬ কোটি জনগণের মধ্যে মাত্র ১৪ লাখ কর দেন। বাকিরা কর দেন না। যারা কর দেন না তাদের টাকা কিভাবে বিবেচনা করা হবে? আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সিসিএনের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাতলুব আহমাদ, সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আল আমীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×