ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্যোক্তারদের ঋণ জালিয়াতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

উদ্যোক্তারদের ঋণ জালিয়াতিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এমারেল্ড অয়েলের উদ্যোক্তাদের ঋণ জালিয়াতির দায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঘাড়ে চাপছে। কোম্পানির মোট মুনাফার উল্লেখযোগ্য অংশই চলে যাচ্ছে ঋণের সুদ পরিশোধে। এদিকে ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কোম্পানির উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই আসামি হওয়ায় ব্যবস্থাপনায় সঙ্কট সৃষ্টিরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঋণ অনিয়মের চিত্র উঠে আসার পর এখন বিচারের মুখোমুখি এমারেল্ড অয়েলের উদ্যোক্তারা। ফলে কোম্পানির ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। রাজধানীর মতিঝিল থানায় করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় সম্প্রতি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। এখনও তিনি কারাগারে রয়েছেন। দ্রুতই তার ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া মামলায় আসামি হিসেবে কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ আরও তিনজন পরিচালকের নাম রয়েছে। জানা গেছে, এমারেল্ড গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ২০৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ধানম-ি ও মতিঝিল থানায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আলাদা পাঁচটি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে এমারেল্ড অয়েলের বিরুদ্ধে মোট ৭৪ কোটি ১৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ করা হয়। উদ্যোক্তাদের এ ঋণ জালিয়াতির দায় পড়েছে কোম্পানির ওপর। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানির মোট মুনাফার ৪৪ শতাংশ ব্যয় হয়েছে ঋণ পরিশোধে। ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে কোম্পানিটি সুদ বাবদ পরিশোধ করেছে ১৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এমারেল্ড অয়েল মামলার এজাহার অনুসারে, এমারেল্ড অয়েলের চেয়ারম্যান সৈয়দ মনোয়ারুল ইসলাম ও এমডি সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিবসহ এর পরিচালনা পর্ষদ নতুন কোম্পানি চালুর কথা জানিয়ে প্রস্তাবিত ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্রকল্পের বিপরীতে ৪০ কোটি ৪৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ঋণের আবেদন করেন। এর মধ্যে ৩৫ কোটি ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা মেয়াদী ও ৫ কোটি ৪২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা চাওয়া হয় চলতি মূলধন ঋণ হিসেবে। কোম্পানিটির এ আবেদন ব্যাংক আইন ও ঋণনীতির পরিপন্থী হলেও পারস্পরিক যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা মঞ্জুর করার জন্য প্রধান শাখায় প্রেরণ করেন। এদিকে, কোম্পানির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ৬৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। দীর্ঘমেয়াদী ঋণের মধ্যে বেসিক ব্যাংকেরই ৬৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। দীর্ঘমেয়াদী ঋণের চলতি দায় রয়েছে আরও ২০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর বাইরে স্বল্পমেয়াদী ঋণ প্রায় ২৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে বেসিক ব্যাংকের ৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
×