ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাফুফে নির্বাচন ২০১৬

সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর খুব বেশিদিন বাকি নেই বহুল আলোচিত বাফুফে নির্বাচনের। ইতোমধ্যেই নির্ধারিত হয়েছে নির্বাচনের প্রধান দুই পক্ষ বাঁচাও ফুটবল পরিষদ এবং সম্মিলিত পরিষদের চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম। ইতোমধ্যেই সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী, যিনি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী। প্যানেল তৈরি করলেই তো চলবে না, নির্বাচনে বিজয়ীও হতে হবে। এজন্য ভোটারদের মন জয়ও করা চাই। এরজন্য চাই একটি নির্বাচনী ইশতেহার বা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। এগুলো দেখেই ১৩৪ ভোটার বা ডেলিগেট সিদ্ধান্ত নেবেন তারা সম্মিলিত পরিষদকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন কি না। এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ করেন সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। তবে ইশতেহার পাঠ অনুষ্ঠানে খোদ উপস্থিত ছিলেন না কাজী মোঃ সালাউদ্দিনই! ইশতেহারে ২৫ প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে সারাদেশে ফুটবল ছড়িয়ে দেয়া, শেরে বাংলা কাপ ও সোহরাওয়ার্দী কাপ চালু করা, ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ফুটবল লীগ বিএসএল নিয়মিতভাবে আয়োজন করা, সব জেলা ক্লাবগুলোর সমন্বয়ে ক্লাব কাপ পুনরায় চালু করা। আগামী ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪ জন, ৪টি সহ-সভাপতি পদের জন্য ১০ জন ও ১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ৩৩ জন নির্বাচন করছেন। কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ॥ ১. জাতীয় ফুটবল দলের সাফল্যের প্রয়োজনে দেশের সব ক্লাবকে আর্থিক ও কোচ দিয়ে অনুর্ধ-১৪, ১৬, ১৮ দলগঠন করতে সহায়তা করাসহ নিয়মিত টুর্নামেন্টের আয়োজন, ২. জাতীয় দলের পাইপ লাইনে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য সিলেটের বাফুফে ফুটবল একাডেমিকে বাফুফের সঙ্গে প্রাইভেট ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল একাডেমি গড়ে তোলা হবে। যার কার্যক্রম শুরু হবে এ বছরের জুন-জুলাইয়ে, ৩. বাফুফে ভবনে আন্তর্জাতিক মানের ফিটনেস সেন্টার গড়ে তোলা হবে, যা জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, ৪. প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে একটি করে ফুটবল টার্ফ মাঠ ফিফার সহায়তায় স্থাপন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৫. ফুটবলকে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজন মতো আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। যাতে ডিএফএগুলো প্রয়োজন মতো খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত লীগ পরিচালনা করতে পারে, ৬. এছাড়াও বাংলাদেশ সুপার লীগের (বিএসএল) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা মোতাবেক সব ডিএফএকে প্রতিবছর ২ লাখ টাকা করে দেয়া হবে, যা দিয়ে প্রতিটি ডিএফএকে পর্যায়ক্রমে ফুটবল কোচিং সেন্টার গড়ে তোলার সহায়তা করা হবে, ৭. দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সব বিভাগীয় শহরসহ সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে ফুটবল একাডেমি গড়ে তোলা হবে। যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রকৃত দক্ষ ফুটবলার তৈরি করা হবে। যা বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে, ৮. এই সব ফুটবল একাডেমিগুলো পর্যায়ক্রমে ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন ফুটবল একাডেমির সঙ্গে টেকনিক্যাল টাইআপ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ৯. সরকারী বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সারাদেশ থেকে একটি নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে ১০ থেকে ১১ বছরের ১৫০ খেলোয়াড়কে ইউরোপ বা লাতিন আমেরিকার ফুটবল একাডেমিতে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হবে। যেখানে তারা লেখাপড়াসহ নিয়মিতভাবে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের যে কোন ক্লাবে খেলার উপযোগী হয়ে গড়ে উঠবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যেমে বাংলাদেশ ফুটবল পর্যায়ক্রমে বিশ্ব মানচিত্রে একটি ভাল অবস্থানে পৌঁছাবে, ১০. জাতীয় দলের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোচ, গোলরক্ষক কোচ, ফিটনেস ট্রেইনার, নিউট্রেশন এক্সপার্ট নিয়োগ দেয়া হবে, ১১. জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ (শেরে বাংলা কাপ), জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মিলিত সামরিক বাহিনীসমূহের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় চালু করা। সেই সঙ্গে অনুর্ধ-১৯ (সোহ্রাওয়ার্দী কাপ) পুনরায় চালু করা হবে, জাতীয় ও যুবদলের খেলোয়াড়দের নিজ নিজ জেলার পক্ষে খেলার জন্য প্রয়োজনীয় বিধি রাখা হবে, ১২. নিয়মিতভাবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ/শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপসহ অন্যান্য টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যবস্থা করা হবে, ১৩. ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল লীগ (বিএসএল) নিয়মিতভাবে ৮টি বিভাগীয় শহরে দেশী-বিদেশী (ইউরোপ-লাতিন আমেরিকা) ফুটবলারদের সমন্বয়ে প্রতি বছর জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। যা বাংলাদেশের দর্শকদের মাঠমুখী করাসহ খেলোয়াড় তৈরিতে ব্যাপক সহায়তা করবে। এই খেলাগুলো বিভাগীয় স্টেডিয়ামে হোম এ্যান্ড এ্যাওয়ে ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে, ১৪. ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল লীগ (বিএসএল) আয়োজনের জন্য বিভাগীয় স্টেডিয়ামগুলোকে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ১৫. আমাদের দেশে প্রকট মাঠ সমস্যা (ঢাকা জেলায়) রয়েছে। সরকার, ডিএসএ ও ডিএফএ-এর সমন্বয়ে বাফুফের মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লীগ খেলার ব্যাপারে সহায়তা করা হবে, ১৬. বাফুফের সব স্ট্যান্ডিং কমিটি, টুর্নামেন্ট কমিটিতে জেলা ও বিভাগের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জেলার ফুটবল লীগের জন্য আর্থিক সহায়তাসহ মনিটরিং সেল থাকবে, ১৭. প্রতিটি বিভাগে বাফুফের লাইসেন্সধারী কোচ নিয়োজিত হবে। পার্বত্য অঞ্চলে পুরুষ ও মহিলা ফুটবল খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে দুইজন কোচ সার্বক্ষণিক নিয়োগ দেয়া হবে, ১৮. প্রতিবছর বাফুফে থেকে এক লাখ ফুটবল সারাদেশে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। সঠিকভাবে বিতরণ ও ব্যবহার হচ্ছে কি না, এরজন্য একটি মনিটরিং সেল থাকবে, ১৯. বাফুফে ভবনে সদস্য, ডেলিগেট, জেলা ও বিভাগীয় সংগঠকদের জন্য কক্ষ থাকবে, ২০. সব জেলার ক্লাবগুলোর সমন্বয়ে ক্লাব কাপ পুনরায় চালু করা হবে, ২১. সব উপজেলা পর্যায়ে অন্তত একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট (ইউনিয়ন ভিত্তিক) আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, ২২. বাংলাদেশের কোচদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান কোচ আনা হবে। ২৩. দেশের সব রেফারিদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশী অভিজ্ঞ ইন্সট্রাক্টর আনা হবে, ২৪. ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ বছরে ৪/৫টি আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে এবং ২৫. জাতীয় দল, প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও কোচদের সম্মানির ব্যবস্থা করা হবে ও খেলোয়াড়দের জন্য আবারও বীমা ব্যবস্থা চালু করা হবে।
×