সংসদ রিপোর্টার ॥ রানা প্লাজা ধসের পর সব শর্ত পূরণ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী পণ্যে জিএসপি (জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স) সুবিধা ফিরিয়ে না দেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (এ্যামচ্যাম) এক অনুষ্ঠানে স্পীকার এ কথা বলেন। তিনি জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে এ্যামচ্যামকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও বাণিজ্য শীর্ষক ওই আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনার পর যা যা বলা হয়েছিল সব শর্তপূরণ করা হয়েছে। আমরা অবাক হচ্ছি এরপরও জিএসপি সুবিধা আমরা এখনও ফেরত পাইনি। অনুষ্ঠানে এ্যামচ্যামের সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স ডেভিড মিলে। উল্লেখ্য, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকা- ও রানা প্লাজা ধসে হাজারেরও বেশি শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংগঠন আমেরিকান অর্গানাইজেশন অব লেবার-কংগ্রেস ফর ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এএফএল-সিআইও) এর আবেদনে ২০১৩ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়। এর আগে জিএসপি সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ পাঁচ হাজার ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রফতানি করতে পারত। ২০১২ সালে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এই সুবিধার আওতায় তিন কোটি ৪৭ লাখ ডলারের তামাক, ক্রীড়া সরঞ্জাম, চিনামাটির তৈজসপত্র ও প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেন। এতে তারা শুল্ক ছাড় পান ২০ লাখ ডলারের মতো। যদিও তৈরি পোশাক শিল্প এই সুবিধা পেত না।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানে স্পীকার বলেন, রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণী মহলে বৈষম্য সৃষ্টির যে সমস্ত প্রথাগত কাঠামো রয়েছে সেগুলোর মূলোৎপাটন করতে হবে। একটি দেশ দ্রুত গতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও তা সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। সমাজের কোন কোন মানুষের প্রতিভা থাকলেও যথাযথ পরিচর্যা ও সুযোগ সৃষ্টির অভাবে সে প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। সমাজের কেউ কেউ বেশি সুযোগ সুবিধা পেলেও অন্যরা বঞ্চিত হয়। তিনি দেশের নীতি নির্ধারকদেরকে নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে আরও যতœশীল হওয়ার আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে নারীর প্রতি নানান ধরনের বৈষম্য রয়েছে উল্লেখ করে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। অথচ তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, মজুরি, সম্পদের অধিকার ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। এ বাধা দূর করতে হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে নারীরা তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মমুখী পদক্ষেপ নেয়ায় শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর দুঃখ দুর্দশা লাঘব হচ্ছে। দেশে এখন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশও রয়েছে। স্পীকার আরও বলেন, গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের জীবনযাত্রার তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন সাধন। আর এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে এককভাবে কোন দেশের পক্ষে সামগ্রিক উন্নয়ন করা সম্ভব না। বাংলাদেশ আজ উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি। আমরা এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি এবং বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করাও সম্ভব হবে।
এমআইএসটিতে জাহাজ নৌ স্থপতিদের ভবিষ্যত বিষয়ে সেমিনার
‘বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উন্নয়ন এবং নৌ স্থপতিদের ভবিষ্যত’ বিষয়ক সেমিনার বৃহস্পতিবার মিরপুর সেনানিবাসের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রিয়ার এডিমরাল এ এস এম আব্দুল বাতেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এমআইএসটির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোঃ আব্দুল কাদির। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন ডকইয়ার্ড, শিপইয়ার্ডসহ জাহাজ নির্মাণ শিল্প সংশ্লিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। -আইএসপিআর
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: