ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পুনর্অর্থায়ন তহবিলে আবেদনে সাড়া নেই

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২২ এপ্রিল ২০১৬

পুনর্অর্থায়ন তহবিলে আবেদনে সাড়া নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে সরকারের বরাদ্দ দেয়া পুনর্অর্থায়ন তহবিল খুব বেশি সাড়া জাগাতে পারেনি। শুরুতে বিনিয়োগকারীদের কাছে এই তহবিল নিয়ে বিশেষ উৎসাহ থাকলেও এখন ঋণ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে সরকারী তহবিলের প্রায় অব্যবহৃত ৩০০ কোটি টাকা পড়ে আছে। এর আগে ২০১০ সালের পুঁজিবাজার ধসে মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ক্ষতি পোষাতে এ অর্থ বরাদ্দ করেছিল সরকার। গত ২০১২ সালে মাত্র ৯ শতাংশ সুদে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণের জন্য বিশেষ স্কিমের আওতায় ৯০০ কোটি টাকার পুনর্অর্থায়ন ঋণ তহবিল করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে অর্থছাড়ের চার বছর পরও বিনিয়োগকারীদের ওই ঋণ নেয়ার আগ্রহ নেই। মূলত প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণেই এ ধাপে আগ্রহ নেই মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও পুনর্অর্থায়ন ঋণ তহবিলের ব্যবস্থাপক আইসিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৪৮ জন বিনিয়োগকারীর জন্য ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার ঋণ গ্রহণ করেছে ৩৪ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস। অর্থাৎ সরকারের দেয়া ৯০০ কোটি টাকার মধ্যে ২৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকা এখন পর্যন্ত কেউ নেয়নি। এর মধ্যে আইসিবি তার ১১ হাজার ৫৯০ গ্রাহকের জন্য ২১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঋণ আবেদনের সময় দফায় দফায় বাড়ানোর পরও নতুন করে আবেদন জমা হচ্ছে না। ফলে এ অর্থ অব্যবহৃত থেকেই যাচ্ছে। পুনর্অর্থায়ন ঋণ তহবিলের শর্তানুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউসকে গ্রাহকের পক্ষে ঋণ আবেদন গ্রহণ ও উত্তোলন করতে হয়। জানা গেছে, অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ পেতে আবেদন করলেও এখন অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস ঋণের অর্থছাড় করাতে আসছে না। এমন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের সংখ্যা ৮টি। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের এক হাজার ৫৮ বিনিয়োগকারীর জন্য ৩৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা ঋণ আবেদন জমা দিয়েছিল। আবেদন করেও ঋণ নিচ্ছে না, সেই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো : এবি ইনভেস্টমেন্ট, অগ্রণী ইক্যুয়িটি, ইসি সিকিউরিটিজ ও এক্সিম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট। এ তালিকায় থাকা ব্রোকারেজ হাউসগুলো হলো : এবি সিকিউরিটিজ, কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ও লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ। এর মধ্যে সর্বাধিক ৩৮১ বিনিয়োগকারীর জন্য ১৫ কোটি টাকার ঋণ আবেদন ছিল এক্সিম ব্যাংকের মালিকানাধীন মার্চেন্ট ব্যাংক এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টমেন্টের। এছাড়া দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ ১১৯ বিনিয়োগকারীর জন্য এক কোটি চার লাখ টাকার ঋণ আবেদন জমা দিয়েছিল। জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত ২৭ হাজার ৮২৫ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর লোকসানি হিসাবের বিপরীতে মোট ৭৪৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার ঋণ আবেদন করেছিল ৪৮ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস। এর বিপরীতে ৪৪টি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের ২৬ হাজার ৩৮৪ বিনিয়োগকারীর জন্য ৬৮৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার ঋণ ছাড়ের অনুমোদন হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৫৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে সংশ্লিষ্টরা।
×