ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২৫ মে ভোট

৯ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২১ এপ্রিল ২০১৬

৯ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৃতীয় দফায় নির্বাচনের জন্য ৯ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব পৌরসভায় আগামী ২৫ মে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীদের ২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ২ মে। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যহারের শেষ দিন ধরা হয়েছে ৯ মে সোমবার। বুধবার নির্বাচন কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২৫ মে যেসব পৌরভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে তার মধ্যে রয়েছে- নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল ও রায়পুরা, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর পৌরসভা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, নোয়াখালী সদরের নোয়াখালী ও সেনবাগ পৌরসভা, ফেনীর ছাগলনাইয়া, কক্সবাজারের টেকনাফ ও খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভা। গত বছর ৩০ ডিসেম্বর প্রথম দফায় সারাদেশে ২৩৪ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভার মাধ্যমে দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সূচনা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ২০ মার্চ ১০ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় দফায় নির্বাচনের জন্য এবার ৯ পৌরসভায় তফসিল ঘোষণা করা হলো। সারাদেশে ৩২৩টি পৌরসভা রয়েছে। কমিশন জানিয়েছে বাকি পৌরসভায় পর্যায়ক্রমে ভোটগ্রহণ করা হবে। কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন উপযোগী আরও ৪০টি পৌরসভার একটি তালিকা করা হয়েছে। সীমানা ও মামলা জটিলতায় কিছু পৌরসভার নির্বাচন আটকে রয়েছে। বাধা কেটে গেলে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভার ভোটের তফসিল দেয়া হবে। কমিশন জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থী হতে হলে অবশ্যই দলের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষর করা প্রত্যয়নপত্র থাকতে হবে। দলের প্রত্যয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। এছাড়া ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম-পদবী নমুনা স্বাক্ষরসহ একটি পত্র তফসিল ঘোষণার ৫ দিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এবং তার একটি অনুলিপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। তৃতীয় দফায় ইউপি নির্বাচন ॥ এদিকে তৃতীয় দফায় ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার শেষ হচ্ছে আজ রাতে। সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকায় নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনী সরঞ্জাম আগামীকাল রাতে পৌঁছে যাচ্ছে নির্বাচনী কেন্দ্রে। নির্বাচনের কেন্দ্রে নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি র‌্যাব পুলিশ বিজিবি সমন্বয়ে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের দিনসহ পরের ২ দিন করে মোট ৫ দিন মোতয়েন থাকছে। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধ বিচারের জন্য থাকছে বিচারিক হাকিম। আচরণবিধি দেখভালের জন্য আগেই প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ নেয়া হয়েছে ১৪ মার্চ নির্বাচনী প্রচারের শুরুর দিন থেকেই। এবারের নির্বাচনী সহিংসতারোধে সতর্ক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে দেশের ৪৮ জেলার ৬২০ ইউপিতে শনিবার সকাল থেকেই ভোটগ্রহণ শুরু হবে। এ কারণে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় বুধবার থেকেই মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে। কমিশন জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী সব নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী তিন দিন আগে থেকে ভোটের দিন মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটর সাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় হয়। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী রাখতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। এছাড়াও ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি, অটোরিক্সা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো প্রভৃতি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একইভাবে শুক্রবার মধ্যরাত ১২টা থেকে ভোটগ্রহণের দিন শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত সকল ধরনের নৌযান ও স্পিডবোট চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে জনগণ বা ভোটারদের চলাচলের জন্য ক্ষুদ্র নৌযান চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। জরুরী সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়। এছাড়াও ইসির অনুমোদিত যানবাহনের ক্ষেত্রে শিথিলতা এবং নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশী-বিদেশী সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র থাকতে হবে। তৃতীয় ধাপে নির্বাচনের ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌঁছানো হয়েছে। এসব সরঞ্জাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভোটের আগের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার প্রিসাইডিং অফিসার। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী তৃতীয় দফায় সারাদেশে ৬২০ ইউপির মধ্যে ২৫ ইউপিতে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ দফায় সারাদেশে চেয়ারম্যান পদে ২ হাজার ৬৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ১৮৫ জন। এর বাইরে ১৪ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা রয়েছেন ১ হাজার ৪৮৭ জন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন ৬২০ ইউপিতেই। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন ৫৩৯ ইউপিতে। ১৪ রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছেন মাত্র ১৬৭ জন। এছাড়া জাসদের ২৬ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ৩ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী সংখ্যা ১২ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৯২ জন, জাতীয় পার্টি জেপির ৩ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৩ জন, সিপিবির ৫ জন, জমিয়তে উলমায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ১০ জন, খেলাফত মজলিসের ২ জন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল ১ জন ও অন্যান্য ১ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
×