ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়ের ১২ বছর পর এক সঙ্গে পাঁচ সন্তান

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২১ এপ্রিল ২০১৬

বিয়ের ১২ বছর পর এক সঙ্গে পাঁচ সন্তান

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর ও নিজস্ব সংবাদদতা, গাইবান্ধা, ২০ এপ্রিল ॥ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে আরজিনা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূ একসঙ্গে পাঁচ সন্তান জন্ম দিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। অথচ এর আগে ‘বন্ধ্যা’ অপবাদে এই আরজিনাকেই পরিবার ও সমাজে কতইনা লাঞ্ছনা সইতে হয়েছে! দেরিতে হলেও আজ আরজিনার কদর বেড়েছে। তিনি এখন আর অপয়া নন রীতিমতো ভাগ্যবতী। জানা গেছে, ঠিক বারো বছর আগে সাদুল্যাপুর উপজেলার কিশামত শেরপুর গ্রামের আরজিনা বেগমের বিয়ে হয়েছিল একই এলাকার শেরেগুল ইসলামের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী এবং শ্বশুর-শাশুড়ির প্রত্যাশা ছিল সন্তানের। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগেও সৃষ্টিকর্তা তাদের দিকে মুখ তুলে তাকাননি। সন্তানের জন্য গিয়েছেন বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে। ধর্ণা দিয়েছেন গ্রামের কবিরাজ, ঝাড়ফুঁকদাতাদের কাছেও। খরচ করেছেন অনেক টাকাকড়ি। কিন্তু না, কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। এর ফলে আরজিনার ওপর বেড়ে যায় শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন-নিপীড়ন। হতাশ আরজিনা অবশেষে স্বামীসহ আবারও শরণাপন্ন হন শহরের নতুন এক চিকিৎসকের কাছে। এরপর অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। এ সময় আরজিনার প্রতি আদর বেড়ে যায় সেই শ্বশুর-শাশুড়িরই। চলতে থাকে সেবা-যতœ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে প্রসব বেদনা উঠলে আরজিনার স্বামী শেরেগুল তাকে নিয়ে আসেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে। চিকিৎসক তাৎক্ষণিক তাকে দেখে হাসপাতালে ভর্তি করে নেন। এরপর দিনগত রাত অনুমান ৯টায় আরজিনাকে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। সেখানে তার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সিরাজুম মুনিরার নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল। এরপর চিকিৎসকরা সিজারিয়ান অপারেশন করে আরজিনার পেট থেকে বের করে আনেন একে একে ৫টি সন্তান। এদের মধ্যে ৩টি ছেলে ২টি মেয়ে। আর এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আনন্দের যেন সীমা থাকে না বাবা-মা আর শ্বশুর-শাশুড়ির। খবর পেয়ে রাতেই গ্রাম থেকে হাসপাতালে চলে আসেন তারা। আরও বেড়ে যায় আরজিনার সেব-যতœ। তার চিকিৎসক ডা. মনিকা মজুমদার জানান, বর্তমানে প্রসূতিসহ ৬ জনই সুস্থ আছেন। আরজিনার স্বামী ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কর্মরত।
×