ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করাই লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২১ এপ্রিল ২০১৬

সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করাই লক্ষ্য

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তিমূলক ও উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। শিক্ষার সুযোগ সর্বজনীন এবং উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের উপদেষ্টা পরিষদের তৃতীয় বৈঠকে সভাপতিত্বকালে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করে তোলার ব্যাপারে সচেতন, তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের অনেকেই এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না। এজন্য তাদের পড়াশোনার জন্য সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ কাউন্সিলের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে আরও শিক্ষার্থীদের এই তহবিলের সুবিধা দিতে তহবিলের আকার আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া শিক্ষাসংক্রান্ত উদ্যোগগুলো পরবর্তী সরকার বাতিল করে দিয়েছিল। এই ধরনের কাজ যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ করতে না পারে সেজন্য সরকার শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট নামে একটি তহবিল গঠন করেছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে তহবিলে এক হাজার কোটি টাকা সিড মানি দেয়া হয়েছে। এই তহবিল থেকে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি দেয়া হবে। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সার্বজনীন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করে তোলার ব্যাপারে সচেতন। স্বল্প আয়ের বাবা-মায়েরাও তাদের সন্তানকে এখন স্কুলে পাঠাচ্ছে, যা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের অনেকেই এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন না। এজন্য তাদের পড়াশোনার জন্য সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার প্রাথমিক হাতিয়ার হিসেবে তাঁর সরকার শিক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সরকার প্রত্যেক নাগরিকের শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করতে চায়। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠনে শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুসরণ করার ফলে দেশে শিক্ষার হার ২০ শতাংশ বেড়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষার হার আবার কমে যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষায় উৎসাহ দেয়ার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায়ও বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। নারী শিক্ষার বিস্তারেও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা সহায়তা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে এক্ষেত্রে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচীর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে বিশেষ করে নারীদের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে সরকার প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি চালু করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে চলে যাওয়ার পরে শিক্ষাসহ অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য সকলকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
×