ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আহত অর্ধশত

রংপুরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৩

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২১ এপ্রিল ২০১৬

রংপুরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৩

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর ॥ রংপুরে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ১০ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। বিকেলে তাদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনজন মহিলার পরিচয় না পাওয়ায় তাদের লাশ হাসপাতালের ডেথ হাউসে রাখা আছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত যাত্রীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ১৩ মাইল নামক স্থানে সায়মন এক্সক্লুসিভ এন্টারপ্রাইজের বাসের সামনের চাকা বিস্ফোরণ ঘটলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা তৃপ্তি পরিবহন নামের অপর একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৮ জন মারা যায়। আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেখানে মারা যায় আরও ৫ জন। জানা গেছে, সায়মন এক্সক্লুসিভের বাসটি কুমিল্লা থেকে দিনাজপুর এবং তৃপ্তি পরিবহন সৈয়দপুর থেকে রংপুরে আসছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রংপুর ও সৈয়দপুর থেকে ফায়ার ব্রিগেডের ৪টি ইউনিট, তারাগঞ্জ থানা পুলিশসহ জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আহত-নিহত বাসযাত্রীদের উদ্ধার শুরু করেন। পরে তাদের স্থানীয় তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশের গাড়ি, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি, সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার এ্যাম্বুলেন্স করে নিহত এবং আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাপাতালে আনা হয়। সেখানে ওই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ মেডিক্যাল টিম গঠন করে ও সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের চিকিৎসকদের হাসপাতালের আহতদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখেন। ওষুধ, ব্লাডসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। হাসপাতালে আহত ও নিহতদের পরিবারের আহাজারিতে সেখানের বাতাস ভারি হয়ে আসে। হাসপাতাল মর্গের সামনে নিহতদের স্বজনরা পরিবারের স্বজনদের শনাক্ত করতে ভিড় করেন। পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থায় সেখানে নিহত ও আহতদের খোঁজখবর এবং শনাক্ত করতে সাহায্য করা হয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্লাড সরবরাহের জন্য তৎপরতা দেখা গেছে। আহতদের চিকিৎসা দ্রুত দিতে হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের পেশাদারী এবং মানবিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। নিহত ও আহতদের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে ছুটে আসেন রংপুর জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, বিভাগীয় কমিশনার হাজী হাসান আহমেদসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৯ হাজার টাকা করে সাহায্য দেয়া হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ইকরচালী ফারুকিয়া মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতি বেগম (৩৫), তৃপ্তি পরিবহনের চালক তৈয়ব আলী (৪৩), নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পাশারীপাড়ার মোহাম্মদ আলী কালা (৪৫), একই এলাকার আব্দুল মতিন (৩২), দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর এলাকার অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে চন্দন রায় (২৫), রংপুর জেলার গঙ্গড়াচড়া থানার চেংমারীর আকুল মিয়া (২৫), নীলফামারীর পুটিমারী কাছারিপাড়ার আতোয়ার রহমান (৪১), একই এলাকার লিটন মিয়া (২২) ও নীলফামারী জেলা ডোমার এলাকার মিজানুর রহমান (৩০)। অন্যদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আ স ম বরকতুল্লাহ জানান, হাসপাতালে ৪৬ জন রোগী ভর্তি আছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
×