ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শেষ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২০ এপ্রিল ২০১৬

শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শরীয়তপুরের দুই রাজাকার সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে চার্জ হেয়ারিং (অভিযোগ গঠনের) শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২ মে আদেশ দেবে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছে । এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর হƒষিকেশ সাহা ও প্রসিকিউটর শেখ মোশফিক কবির। আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ করা অভিযুক্তরা হলেনÑ শরীয়তপুর জেলার পালং উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর মুসলিমপাড়ার মৃত চান মোল্লার ছেলে সোলায়মান মোল্লা (৮৪) ও একই থানার মাহমুদপুরের মৃত হামিক আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিস (৬৭)। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে ২৮ জনকে সাক্ষী ও সিজার লিস্টে আরও ৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এতে সাত খ-ে ৮৫২ পাতার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। দুই আসামির বিরুদ্ধে চার অভিযোগ ॥ ১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২২ মে, আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড় শ’ জন সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ প্রায় ২০০ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে ও বাড়ির মালামাল লুট করে। ২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ২৬ মে, ১৯৭১ সালে জেলার পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলে করে হত্যা করে ও গ্রামগুলো থেকে মামালাল লুট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মালোপাড়া থেকে ৩০-৪৫ জন নারী-পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৩ দিন আটকে রেখে নারীদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। আর পুরুষদের গুলি করে মেরে ফেলে। ৩ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, জুনে একই থানার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। ৪ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে।
×