ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রিজার্ভ চুরির আরও ৪৩ লাখ ডলার ফেরত দিল ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২০ এপ্রিল ২০১৬

রিজার্ভ চুরির আরও ৪৩ লাখ ডলার ফেরত দিল ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম

রহিম শেখ ॥ ফিলিপিন্সে উদ্ধার হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফিরে পেতে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিতে হবে বাংলাদেশকে। এ বিষয়ে ব্যর্থ হলে ফিলিপিন্সের আইন অনুযায়ী এ অর্থের মালিক হবে দেশটির জনগণ। ফিলিপিন্সে সিনেটের ষষ্ঠ শুনানিতে এমনটা জানিয়েছে মুদ্রা পাচারবিরোধী সংস্থা এএমএলসি। এদিকে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ জানিয়েছেন, আইনী প্রক্রিয়ায় অর্থ ফেরত আনা হবে। রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ফিলিপিন্সের সঙ্গে পারস্পরিক আইনী সহযোগিতা নেয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে মামলার চিন্তা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে বাংলাদেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থচুরির ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পারলেই এ টাকা ফেরত আনা সম্ভব। অন্যদিকে মঙ্গলবার আরও ৪৩ লাখ ডলার ফেরত দিয়েছেন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং। সিনেটের ব্লু-রিবন কমিটির শুনানির শুরুতেই উঠে আসে ফিলিপিনের মুদ্রা পাচার আইন। ক্যাসিনো এ আইনের আওতায় না থাকায় সুপারিশ করা হয় তা সংস্কারের। এরপর একে একে কমিটির জেরার মুখে পড়ে রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। কমিটির প্রধান সার্জিও ওসমেনার প্রশ্নবানে বেরিয়ে আসে, অর্থপাচারে বড় গাফিলতি ছিল এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। সন্দেহজনক লেনদেনের পরও কেন অর্থ ছাড় হলো, সদুত্তর দিতে পারেননি জুপিটার শাখার শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দিগুইতো। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপিন্সে সরিয়ে নেয় হ্যাকাররা। তবে পাচার হওয়া ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে ফিলিপিন্সের ব্যবসায়ী কিম অং ফিলিপিন্সের অর্থপাচার প্রতিরোধ কাউন্সিলের কাছে তার ১ কোটি ডলার জমা দিয়েছেন। এছাড়া আরও ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের মুদ্রা লেনদেনকারী অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের কাছে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাকি টাকার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। এই ঘটনায় ফিলিপিন্স সিনেটের ব্লু-রিবন কমিটির ৬টি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ষষ্ঠতম শুনানিতে দেশটির এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল জানায়, প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণাদি জমা দিলেই এ টাকা বাংলাদেশকে ফেরত দেয়া হবে। তবে বাংলাদেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থচুরির ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পারলেই এ টাকা ফেরত আনা সম্ভব। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের এ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস ফিলিপিন্সের এ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে এন্টি মানি লন্ডারিং কনভেনশনের অধীনে তখন ওই টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া যাবে। কিন্তু ওরা যদি মামলা না করে তাহলে বাংলাদেশ এ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের পক্ষ থেকে নিজ উদ্যোগে কিছু করা সম্ভব হবে না। আইন বিশেষজ্ঞ এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান জনকণ্ঠকে বলেন, টাস্কফোর্স বলেছে একটা কিছু দেখাতে হবে। তদন্তের পরে যদি রিপোর্ট হয়, সেই রিপোর্ট হয়ত দেখানো যাবে। তারপর যদি ট্রায়াল হয়, রায় দেখানো যাবে। তবে আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি যে টাকাগুলো ফ্রিজ আছে সেগুলো পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। এছাড়া আন্তঃদেশীয় পারস্পরিক আইনী সহায়তা এবং চুক্তির আওতার মাধ্যমেও জব্দকৃত অর্থ ফেরত আনা যাবে। এদিকে ফিলিপিন্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ সময় সংবাদকে টেলিফোনে জানান, আইনী প্রক্রিয়ায় অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে ফিলিপিন্সের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস-ডিওজে, বাংলাদেশকে পুরোপুরি সহায়তা করছে। প্রয়োজনে মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক ॥ রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ফিলিপিন্সের সঙ্গে পারস্পরিক আইনী সহযোগিতা নেয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা। এছাড়াও প্রয়োজন মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা জানান। শুভংকর সাহা বলেন, ফিলিপিন্সে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি টিম অর্থ উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ফিলিপিন্সের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের (ডিওজে) আমাদের টিমের আলোচনাও হয়েছে। আমাদের মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিট্যান্সসের (পারস্পরিক আইনী সহযোগিতা) যে সুযোগ আছে তার মাধ্যমে অর্থ আদায়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কিনা সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। যেহেতু সার্বিকভাবে সব জায়গায় কার্যক্রমগুলো চলছে এবং এই জায়গা থেকে যা যা করা দরকার; সেখানে যদি আইনী পদক্ষেপের প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটাও নেবে। আবার মিউচ্যুায়ল লিগ্যাল এ্যাসিসটেন্সির মাধ্যমে যদি করা যায় সেটিও করা হবে। সমস্ত কিছু দেশের স্বার্থ বিবেচনায় এবং আইনানুযায়ী করা হবে বলে জানান তিনি। টাকা উদ্ধারে আইনী প্রক্রিয়া যে কারণে প্রয়োজন পড়বে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভংকর বলেন, কাগজে-কলমে সন্তুষ্ট থাকতে হবে, এই টাকাটা আসলে আমার। আমার যেমন কাগজ-কলম আছে, তার (ফিলিপিন্স) কাছেও আছে। এই বিষয়গুলোর জন্যই আসলে এই প্রসেডিং, এই সমস্ত কিছু, আইনের নিয়মাচার, নীতিমালা। আগামীতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় এই বিচার করেই টাকাটা ফেরত দেয়া হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণের প্রয়োজন পড়লে আমরা তা করব। শুনানিতে মিথ্যা তথ্য দেয়ার কথা স্বীকার করলেন দিগুইতো ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরির সঙ্গে জড়িত রাঘববোয়ালদের নাম গোপন রাখতে সিনেট কমিটির শুনানিতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মাইয়া সান্তোস দিগুইতো। রিজার্ভ চুরি নিয়ে মঙ্গলবার সিনেট কমিটির ষষ্ঠ দফা শুনানিতে এমনটা স্বীকার করেছেন তিনি। সিনেট কমিটির সদস্য সার্জিও ওসমেনা এ সময় দিগুইতোর কাছে জানতে চান কেন তিনি (দিগুইতো) অসত্য তথ্য দিয়েছেন জানতে চাইলে রিজাল ব্যাংকের সাবেক এ শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, আইনজীবীর পরামর্শে। টাকা অন্যদের এ্যাকাউন্টে স্থানান্তরে নির্দেশক হিসেবে ক্যাসিনো জাংকেট কিম অংয়ের নাম আড়াল করতে লাগ্রোসের নাম বলেছেন কিনা জানতে চাইলে দিগুইতো হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। শুনাতিতে দিগুইতো বলেন, ক্যাসিনো জাংকেট অপারেটর কিম অংয়ের অনুরোধে ওই শাখায় চার ব্যবসায়ীর এ্যাকাউন্টে জমা হওয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো টাকা সেঞ্চুরিটেক্স ট্রেডিংয়ের মালিক ব্যবসায়ী উইলিয়াম গো’র এ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেন। ওই চার এ্যাকাউন্ট হোল্ডার হলেন, মাইকেল ফ্রান্সিসকো ক্রজ, জেসি ক্রিস্টোফার লাগ্রোসাস, এররিকো তিয়োদোরো ভাসকুইজ এবং আলপ্রেড সানতোস ভারগারা। ভুল তথ্যে ওই চার ব্যবসায়ীর নামে জুপিটার শাখায় ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে। ওই চার ব্যবসায়ীর এ্যাকাউন্টে পুরো টাকা কিম অং কেন স্থানান্তর করতে অনুরোধ করেছিলেন তা তার (দিগুইতোর) জানা নেই বলে উল্লেখ করেন দিগুইতো। দিগুইতো আরও বলেন, চার এ্যাকাউন্টহোল্ডারকে এ্যাকাউন্ট খুলতে পরিচিতিসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন কিম অং। এমনকি এ চার এ্যাকাউন্টের লেনদেন এবং স্থিতি সম্পর্কে তাকে সময়ে সময়ে জানানোরও অনুরোধ করেন কিম অং। রিজার্ভের টাকা চুরিতেও জাল রিসিট ॥ বাংলাদেশের রাজকোষ থেকে চুরি করা অর্থ নগদ ডেলিভারি দেয়ার সময় জাল রিসিপট ব্যবহার করা হয়েছিল। এমন একটি রিসিপট উপস্থাপন করেছে ফিলরেম সার্ভিসেস কর্পোরেশন। মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করেছেন ফিলিপিনের সিনেট ব্লু রিবন কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর তিওফিস্তো গুইঙ্গোনা। এ সময় তিনি ফিলরেমের একজন মেসেঞ্জারের বিলাসবহুল বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ফিলরেম যে রিসিপট উপস্থাপন করেছেন তাতে দৃশ্যত স্বাক্ষর রয়েছে জাঙ্কেট অপারেটর ওয়েইকাং সু’র। বাংলাদেশের চুরি করা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের ভাগ তিনিও পেয়েছিলেন। উপস্থাপিত রিসিপটে যে স্বাক্ষর রয়েছে ওয়েইকাং সু’র তার সঙ্গে তার পাসপোর্ট ও ফিলিপিনের ভিসা আবেদনের স্বাক্ষরের সঙ্গে কোন মিল নেই। রিজার্ভ চুরির টাকা ট্রলিতে করে জুয়ার হোটেলে নেয়া হয় ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির একটি অংশ ব্যাগভর্তি করে ট্রলিতে করে জুয়ার হোটেলে নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন মার্ক পালমেয়ার্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে ফিলিপিনের সিনেট ব্লু রিবন কমিটির শুনানিতে মঙ্গলবার উপস্থিত হয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন পালমেয়ার্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার সময় রেমিটেন্স সেবাদানকারী কোম্পানি ‘ফিলরেম সার্ভিস কর্পোরেশন’-এর বার্তাবাহক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। পালমেয়ার্স শুনানিতে বলেন, ৯০ মিলিয়ন পেসো (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা) এবং অপর ৫ লাখ ডলার (৪ কোটি টাকা) স্যুটকেস, ট্রাভেলিং ব্যাগ এবং কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে ঢুকানো হয়। টাকাভর্তি সে ব্যাগগুলো একটি ট্রলির মাধ্যমে জুয়ার (ক্যাসিনো) হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমবারের মতো শুনানিতে উপস্থিত হয়ে পালমেয়ার্স বলেন, তিনি তার বস (ফিলরেম কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট) সালুয়াদ বাউতিস্তার নির্দেশে ৫ ফেব্রুয়ারি পারাঙ্কু সিটিতে অবস্থিত সোলাইর রিসোর্ট এ্যান্ড ক্যাসিনোতে অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মাকাতি সিটির সিটিল্যান্ডে অবস্থিত তাদের অফিস (ফিলরেম সার্ভিস কর্পোরেশন) থেকে অর্থ নিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অর্থ সোলাইর রিসোর্টে পৌঁছে দিয়েছেন। সে স্বয়ং এ অর্থ পৌঁছে দিয়েছে বলে শুনানিতে জানায়। সিনেট কমিটির সভাপতি সিনেটর তোফিয়েস্তো গুয়ানগুনা এ সময়ে প্রশ্ন করেন, ‘৯০ মিলিয়ন পেসোর ওজন কত এবং কোন ব্যক্তির পক্ষে এটা বহন করা সম্ভব কিনা?’ এর উত্তরে পালমেয়ার্স বলেন, ‘ব্যাগভর্তি টাকাগুলো ট্রলিতে রাখা হয়। গাড়ি থেকে টাকাগুলো নামিয়ে ট্রলিতে স্থানান্তর করা হয়।’ ‘টাকা বহনে কয়টা ব্যাগ ব্যবহার করতে হয়েছে’Ñ জানতে চাইলে পালমেয়ার্স তদন্ত কমিটিকে বলেন, ‘বড় একটা ব্যাগ এবং একটা স্যুটকেস লেগেছে। আবার স্যুটকেসের পাশ ছিল অনেক বড়।’ ফের এ বিষয়ে সিনেটরপ্রধান প্রশ্ন করলে পালমেয়ার্স বলেন, একটা স্যুটকেস, একটা দীর্ঘ ট্রাভেলিং ব্যাগ এবং একটা কাঁধে ঝোলানো ব্যাগÑ মোট তিনটি ব্যাগ ব্যাবহার করতে হয়েছে। এ পর্যন্ত ৯৮ লাখ ডলার ফেরত দিয়েছেন কিম অং ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে কয়েক দফায় এ পর্যন্ত প্রায় ৯৮ লাখ মার্কিন ডলার দেশটির মুদ্রাপাচারবিরোধী কাউন্সিল-এএমএলসির কাছে ফেরত দিয়েছেন ফিলিপিন্সের ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং। মঙ্গলবার আরেক দফায় ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫৯ মিলিয়ন (২০০ মিলিয়ন পেসো) মার্কিন ডলার দেশটির মুদ্রাপাচারবিরোধী কাউন্সিল-এএমএলসির কাছে ফেরত দেন কিম অং। এ নিয়ে ক্যাসিনো জাঙ্কেট এজেন্টের কাছ থেকে মোট ৯৮ লাখ ডলার ফেরত এসেছে। অর্থ পাচারের ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রেক্ষাপটে জড়িতদের বড় ধরনের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে শুনানিতে। এদিন সকালে ষষ্ঠ দফার সিনেট শুনানিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এএমএলসির নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া বাকে-আবাদ। এ সময় তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাঠানো হবে। এর আগেও দু’দফায় ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের মতো টাকা ফেরত দিয়েছেন অং। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মামলা না হওয়া পর্যন্ত এসব অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে এএমএলসি। ষষ্ঠ দফায় ফিলিপিনের সিনেটে শুনানিতে সাক্ষ্য দেন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং, রিজাল ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মাইয়া সান্তোস দিগুইতো, ফিলিপিনের মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্ট সালুদ বাতিস্তাসহ অনেকে। এর আগে গত ৩১ মার্চ কিম অংয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং ৪ এপ্রিল আট লাখ ৩০ হাজার ৫৯৫ ডলার এএমএলসিকে ফেরত দেয়া হয়। দুই-একদিনের মধ্যে জমা দেয়া হবে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন ॥ রাজকোষ থেকে অর্থচুরির ঘটনায় সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দেবে চলতি সপ্তাহে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে ৭৫ দিন পর। তবে অতি গোপনীয়তার এই প্রতিবেদনে কী থাকছে তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ-আতঙ্কও দেখা গেছে।
×