ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুদিন পরই তৃতীয় দফা ইউপি ভোট ॥ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২০ এপ্রিল ২০১৬

দুদিন পরই তৃতীয় দফা ইউপি ভোট ॥ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৃতীয় দফায় ইউপি নির্বাচনের বাকি রয়েছে আর মাত্র ২দিন। ইতোমধ্যে এ দফার নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। আগামীকাল রাতেই প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকার নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। ইতোমধ্যে ব্যালট পেপারসহ ভোটার সরঞ্জাম নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে তা প্রত্যেক কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। আগামী শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে তৃতীয় দফায় ৬২১ ইউপিতে ভোট গ্রহণ। কমিশন জানিয়েছে, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণের জন্য ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী উপকরণ জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। ৪৭ জেলায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা এসব উপকরণ তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বুঝে নিয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পাঁচটি প্রেস থেকে এসব মাল জেলা নির্বাচন অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে। গবর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস, আর্মি প্রিন্টিং প্রেস, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি ও বিজি প্রেস থেকে নির্বাচনী উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। ইসির বাজেট ও মুদ্রণ শাখার উপসচিব মোঃ রকিব উদ্দিন ম-ল বলেন, প্রেস থেকে ব্যালট পেপার এবং আগারগাঁওয়ের গোডাউন থেকে সিল, গালা, ব্যাগ, রশিসহ অন্যান্য মালও সরবরাহ করা হয়েছে। ভোটের আগের দিন শুক্রবার রাতে প্রতিটা নির্বাচনী কেন্দ্রে এসব নির্বাচনী উপকরণ পৌঁছে দেয়া হবে। এদিকে তৃতীয় দফায় সহিংসতা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে ইসি। অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করছেন তারা। কমিশন জানিয়েছে, দুই দফার নির্বাচনী অভিজ্ঞতা থেকে তৃতীয় দফায় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গত ১৩ এপ্রিল দ্বিতীয়বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরবর্তী দফায় যাতে কোন সহিংসতা না ঘটে সে জন্য আরও কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ধাপে ধাপে ইউপি নির্বাচন করা হচ্ছে। আগামী দফায় নির্বাচনে আরও কীভাবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। সহিংসতা রোধে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন উল্লেখ করেন। চতুর্থ দফায় প্রার্থীরা কমিশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। গত সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে তারা নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। আগামী মাসের ৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ দফার নির্বাচন। প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে প্রার্থীরা ছুটে গেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তবে চতুর্থ দফার নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বী দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। গত ১৮ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরও দু’দলে যথেষ্ট সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে গেছে। তবে এ সংখ্যা বিএনপির আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক বেশি। আগের দু’দফায় নির্র্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মূলত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণেই নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আগামী ২৩ এপ্রিল নির্বাচনে একই কারণে সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, আগে থেকে চতুর্থ দফা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দেয়া না হলে এ দফায়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ১৮ এপ্রিল প্রত্যাহার শেষে চতুর্থ দফায় চেয়ারম্যান পদে মোট ৩ হাজার ২৪৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৭২৪, বিএনপির ৬১৯, জাতীয় পার্টির ১৫৬, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১৫৪ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ হাজার ৫২২ জন। এছাড়া নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন ৩৩ জন। এ দফায় মোট ৭২৫ ইউপিতে ভোটগ্রহণ করা হবে।
×