ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় কাউন্সিলে অতীত ও বর্তমান ঐতিহ্য তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২০ এপ্রিল ২০১৬

জাতীয় কাউন্সিলে অতীত ও বর্তমান ঐতিহ্য তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ২০তম জাতীয় কাউন্সিলে শুধু ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানই নয়, পুরো রাজধানীসহ সারাদেশেই বর্ণাঢ্য সাজ-সজ্জার মাধ্যমে উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অতীত ও বর্তমান ঐতিহ্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। রাজধানী ঢাকার চার প্রবেশ পথে পা দিয়েই দলের ডেলিগেট, কাউন্সিলরসহ সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আবহ টের পাবেন। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানম-ির প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সফল করতে মঞ্চসজ্জা উপ-কমিটির প্রথম বৈঠকেই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জাতীয় কাউন্সিল সফল করতে ইতোমধ্যেই শাসক দলটিতে জোর প্রস্তুতি চলছে। ২০তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলকে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বর্ণাঢ্যভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় দলটি। তবে কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যক্তি প্রচার কেন্দ্রিক যে কোন ধরনের পোস্টার, ব্যানার, তোরণ নির্মাণের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়েছে দলটিতে। বৈঠকে মঞ্চ ও সাজ-সজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে আমরা বর্ণাঢ্য কাউন্সিল করতে যাচ্ছি। সেজন্য আমরা শুধু সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য হলো সাভার হয়ে যে সমস্ত ডেলিগেট ও কাউন্সিলরা ঢাকায় ঢুকবেন তারা যেন সাভার থেকেই বুঝতে পারেন দলের কাউন্সিল হচ্ছে ঢাকায়। আর যারা দক্ষিণাঞ্চল থেকে মাওয়া ঘাট হয়ে আসবেন, তারা যেন মাওয়া ঘাট থেকেই বুঝতে পারে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এমন আবহই আমরা ডেলিগেট, কাউন্সিলর এবং মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। সিলেট বিভাগ থেকে যারা আসবেন তারা যেন মাধবদী থেকে, চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা বিভাগ থেকে যারা আসবেন তারা যেন চান্দিনা থেকেই বুঝতে পারেন ঢাকায় আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি এমনভাবে নিতে চাই যে, গোটা রাজধানীতেই যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশের তৈরি হয়। ঢাকা মহানগরী সাজ সাজ রবে পরিণত হয়। মানুষের চিন্তার জগতে যেন থাকে আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। যে দলটি এদেশের স্বাধিকার, স্বাধীনতা থেকে আজকে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেই দলটির জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সদস্য সচিব বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, গত কাউন্সিলের যে পরিধি ছিল এবার তার ব্যাপ্তিটা অনেক বেশি হবে। গতবার আমরা গণভবন থেকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত সাজ-সজ্জা সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সারাদেশকে জানতে হবে যে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এর আগে আমাদের সম্মেলনে সাজ-সজ্জার বিশেষ ভেন্যুটিই ছিল সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান। কিন্তু এই উদ্যানের ভিতরে সাজ-সজ্জা যাই করি না কেন তা শুধু আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা ছাড়া সাধারণ মানুষের তেমন নজরে আসত না। তাই এইবার আমাদের সাজ-সজ্জার ব্যাপ্তিটা অনেক বেশি হবে। ঢাকা মহানগরের প্রত্যেকটি নির্বাচনী এলাকা সম্মেলন উপলক্ষে সজ্জিত করা হবে। একই সঙ্গে জেলা ও মহানগর, থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়েও সাজ-সজ্জার পরিধি বৃদ্ধি করা হবে। এক্ষেত্রে আমরা সকলের সুচিন্তিত পরামর্শ নিয়ে আমাদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব। প্রস্তুতি সভায় যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বলেন, উপ-কমিটির সদস্যদের মধ্যে শীঘ্রই কাজের দায়িত্ব বণ্টনের পরামর্শ দেন। কাজের দায়িত্ব বণ্টন না হলে কাজের গতি ত্বরান্বিত হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যুব মহিলা লীগের আরেক নেত্রী ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী এমপি সম্মেলনের বিভিন্ন সাজ-সজ্জায় কোন রংকে প্রাধান্য দেয়া হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি উপ-কমিটির সদস্যসহ সকলকে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মঞ্চ-সজ্জা পেজ’ নামে পাবলিক পেজে পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া কমিটির সদস্যরা সম্মেলনকে বর্ণাঢ্য করার লক্ষ্যে সারাদেশে একই রকম ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড করার পরামর্শ উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি কেউ যাতে অতি-উৎসাহী হয়ে নিজের নামে যে কোন স্থানে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, গেট করতে পারে না- সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু এমপি বলেন, জাতীয় সম্মেলন যেহেতু ঈদের কয়েকদিন পরে অনুষ্ঠিত হবে, সেজন্য সকলকে ঈদের আগেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী সম্মেলনের মঞ্চ সজ্জার ক্ষেত্রে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে কোর কমিটিকে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রচার ও সজ্জার নামে যেন সারাদেশে অরাজকতা তৈরি না হয়, সে দিকেও খেয়াল রেখে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সফি আহমেদ সংশ্লিষ্ট নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের সকল অর্জনই যেন আবার নেতিবাচক হয়ে না যায় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তাই কাউন্সিলের আগেই লিখিতভাবে সকল ইউনিউদের দায়িত্বশীল নেতাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশ দিতে হবে- কোন ব্যানার ফেস্টুন, গেট, বিলবোর্ড যাতে যত্রযত্র, যেমন-তেমন রং ও ঢঙে কেউ যাতে লাগাতে না পারে। এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সকল অর্জনই ম্লান হয়ে যাবে। প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ডাঃ বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, অসীম কুমার উকিল, সুজিত রায় নন্দী, নগর নেতা কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, আসলামুল হক আসলাম এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
×