ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পণ্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ জরুরী

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২০ এপ্রিল ২০১৬

পণ্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ জরুরী

কাঁচাবাজারে পণ্যমূল্যের উত্তাপে ক্রেতাদের অস্বস্তি বাড়ছে। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বেশিরভাগ পণ্যের দামই ছিল চড়া। এখন আরও বাড়তি দাম যোগ হয়েছে সবজি ও মাছসহ কিছু পণ্যে। কেজিতে আরও ১০ থেকে ১৫ টাকা সবজিতে এবং ২০ থেকে ৫০ টাকা মাছের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে সবজির বাজারেই যেন উত্তাপ বেশি। দুই সপ্তাহ আগেও যে সবজি বিক্রি হতো ২০/২৫ টাকায় তা এখন ৪০/৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন অবস্থা হলে সাধারণ মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজি সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়ছে। এটি আরও কয়েকদিন থাকবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মৌসুমি গরমের মতো কাঁচা-তরকারির বাজারেও আগুন ছড়াচ্ছে। বলা যায় কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের বাজার। একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে, যা দেশের বাজার সংস্কৃতির একটি খারাপ ও বিপজ্জনক দিক। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সকলকে সমস্যায় ফেললেও বিশেষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন স্বল্প আয়ের মানুষ। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট আইন থাকলেও প্রয়োগে দুর্বলতার কারণে তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে নজর দেয়া দরকার বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন। নানা অজুহাতে এবারও দাম বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির। একদিকে বাজারে শাকসবজির উর্ধগতি অন্যদিকে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে যারা এসব ফলিয়েছেন তাদের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার খবর পত্রপত্রিকায় আসছে। অর্থাৎ দাম বাড়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছে না। অবশ্য এটা সব সময়ের চিত্র। এই ক্ষেত্রে লাভবান হয় একশ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগী। এতে কৃষক যেমন ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়, একইভাবে ক্রেতাসাধারণকে চড়া মূল্য দিতে হয়। ব্যবসায়ী নামক বাজার সিন্ডিকেট যে এর জন্য দায়ী তা সবাই জানে। তারপরও এদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বাজার সিন্ডিকেট বলতে বোঝায় বিশেষ প্রভাবশালী ব্যবসায়ী চক্রকে। এ চক্রের বাইরে যে দেশব্যাপী বহু চক্র কাজ করছে, তার খোঁজ-খবর ক’জন রাখে। পাতি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাথের দোকানদার সবাই এখন যেন সিন্ডিকেটের সদস্য। যে যেভাবে পারছে, লুটে নিচ্ছে। এ অভিযোগ অতি পুরনো হলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। দেশের বাজারকেন্দ্রিক বাস্তবতায় এটা সত্যিই দুঃখজনক। মন্ত্রীরা প্রায়শই বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন। বলেছেন জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার কথাও। তা কেন কার্যকর হচ্ছে না। জনগণকে মুক্তি দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। তা না হলে বিভিন্ন অজুহাতে বাজার থাকবে নিয়ন্ত্রণহীনই। তাই যে কোন মূল্যে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
×