ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওপেক বৈঠকের ব্যর্থতায় জ্বালানি তেলের দাম ৭ শতাংশ হ্রাস

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

ওপেক বৈঠকের ব্যর্থতায় জ্বালানি তেলের দাম ৭ শতাংশ হ্রাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ইরানের শক্ত জবাবে তেলের বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৭ শতাংশের বেশি কমে যায়। এতে জ্বালানি খাতে আস্থা হারিয়ে ফেলে বিনিয়োগকারীরা। আর তাতে উর্ধমুখী এশিয়ার প্রধান প্রধান পুঁজিবাজার নিচে নামতে বাধ্য হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদার তুলনায় তেলের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় গত ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে পণ্যটির দাম কমতে থাকে। ওই সময় এক ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ১১৭ ডলার। গত দেড় বছরে এই দর কমতে কমতে ২৬ ডলারে এসে ঠেকে। এরপরই নড়েচড়ে বসতে শুরু করে এর উৎপাদক দেশগুলো। আর তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার বৈঠক হয়। বৈঠকে তেলের উৎপাদন জানুয়ারির পর্যায়ে সীমিত করার চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এতে ইরান সাড়া না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে যায়। এতে করে সপ্তাহের প্রথম দিনেই বড় ধরনের প্রভাব পড়ে বাজারে। এদিন আন্তর্জাতিক বাজারে এক ব্যারেল অপেক্ষাকৃত উন্নতমানের অপরিশোধিত ব্রেন্টক্রুড শ্রেণীর তেলের দর ৭ শতাংশ নেমে যায়। ব্যারেলপ্রতি বিক্রি হয় ৪১.২৩ ডলারে। অন্যদিকে ইউএস ক্রুড শ্রেণীর তেলের দরও ৭ শতাংশ কমে বিক্রি হয় ৩৮.৪৮ ডলার। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মূল্য পতনের ধারবাহিকতায় লাগাম দিতে তেল উৎপাদন কমানোর বিষয়ে একমত হতে দেশগুলোকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী জুন মাস পর্যন্ত। চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় রেখে উৎপাদন সমন্বয় করতে রবিবার কাতারের রাজধানী দোহায় উৎপাদক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। এতে ওপেক সদস্য ছাড়াও অংশ নেয় রাশিয়া ও কম উৎপাদনকারী আরও কয়েকটি দেশ। উৎপাদন কমানো নিয়ে সমঝোতা হলে বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ফের উর্ধমুখী হবে এমনটিই আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে বাজারে। বৈঠকের পরদিন সোমবার কর্মদিবসের শুরুতে হংকংয়ের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমে বিক্রি শুরু হয় ৩৮ দশমিক ৩৮ মার্কিন ডলারে। বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরানসহ ওপেকভুক্ত অন্যান্য দেশ যদি তেল উৎপাদন কমিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়, তাহলে সৌদি আরবও তেলের উৎপাদন কমাবে। কিন্তু বৈঠকে অংশ না নেয়া ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অবরোধ প্রত্যাহার হওয়ায় তারা তেল উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়টি অব্যাহত রাখবে। এদিকে সমঝোতার বিষয়ে কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালেহ আল সাদা বলেন, এ বিষয়ে সমঝোতায় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর ‘আরও সময়’ প্রয়োজন। সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হওয়ায় আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দর পাঁচ শতাংশ কমে গেছে। বৈঠকে ফল না আসায় রাশিয়ার তেলমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাকও হতাশা প্রকাশ করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, কোন ধরনের সমঝোতা না হওয়ায় তিনি হতাশ। তবে এখনই সব ধরনের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে বলে মনে করছেন না তিনি।
×