ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত- জানালেন গণপূর্তমন্ত্রী

চার বছর পর তেজগাঁও হবে আবাসিক কাম বাণিজ্যিক এলাকা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

চার বছর পর তেজগাঁও হবে আবাসিক কাম বাণিজ্যিক এলাকা

মশিউর রহমান খান ॥ আগামী চার বছর পর রাজধানীর তেজগাঁও পরিবেশবান্ধব আবাসিক কাম বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হবে। তেজগাঁও এলাকার সরকারী-বেসরকারী মোট ৫শ’ একর জমিকে কাজে লাগিয়ে এ আবাসিক কাম বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তরিত করা হবে। তেজগাঁওয়ের ৩০০ একর সরকারী জমিতে আবাসিক ভবন তৈরি করা হবে। আর বেসরকারী ২০০ একর জমিতে আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবন করা যাবে। সরকারী পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন হবে। আর ব্যক্তি মালিকানায় যেসব জমি রয়েছে, সেখানে তারা বাণিজ্যিক ভবন করবেন। তবে পার্কিং, গার্বেজ, এটিপি ও ইউটিপি সুবিধাসহ যাবতীয় নিয়ম মেনে করতে হবে এসব ভবন। তেজগাঁও এলাকায় ভারি কোন শিল্পকেন্দ্র নেই। এছাড়া শ্রমঘন কোন শিল্প সেখানে রাখা হবে না। কেমিক্যাল কারখানাগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। সব শিল্পকারখানায় বাধ্যতামূলকভাবে ইটিপি করতে হবে। প্রতিদিন সকালেই তাদের স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট করতে হবে। রবিবার দুপুরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ বিষয়ে কথা বলেন। এর আগে তিনি পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও ভূমি মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তেজগাঁওসংক্রান্ত মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। মোশারফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তেজগাঁওকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক এলাকা করার দাবি ছিল। এরপর আমরা একটি কমিটি করি, এ বিষয়ে ছয়টি সভা করেছি। এ মহাপরিকল্পনা শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তিনি যদি ডেকে পাঠান, ব্যাখ্যা চান বা কোন নির্দেশনা দেন, তাহলে সে অনুযায়ী কাজ করব। আজকের বৈঠক করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানায় যে জায়গা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে নতুন করে সরকারী অত্যাধুনিক ভবন হবে। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, বিজি প্রেসের ১৬ থেকে ২০ বিঘা জায়গায় পাকিস্তান আমল থেকে এখনও পর্যন্ত কয়েকটি একতলা ভবন রয়েছে, সে জায়গাগুলোতে বড় ভবন তৈরি করে জায়গার উপযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে। তারা চাইলে সরকার কাজগুলো করতে পারে। রাজধানীর কেন্দ্রে এতটা জমিজুড়ে কেবল একতলা ভবন থাকার কোন মানে হয় না। মন্ত্রী জানান, এলাকাজুড়ে ট্রাফিক সিস্টেম, পার্কিংয়ের জন্য আলাদা ভবন থাকবে। সব ভবনের নিচে অবশ্যই পার্কিংয়ের ভাল ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সব বিষয়ে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রাখতে হবে। গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ঢাকার কেন্দ্রস্থলে শিল্প এলাকা করার বিষয়টি আরও আগেই মন্ত্রিপরিষদে পাস হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে শিল্পমালিক যারা আছেন, তারা অফিস, কনভেনশন সেন্টারসহ বিভিন্ন কিছু এখানে নিয়ে আসবেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা এলাকাটিকে একটি নান্দনিক এলাকায় পরিণত করব। তাছাড়া এফডিসি বেশ খারাপ অবস্থায় আছে। এটিকে ভাল অবস্থায় নেয়া হবে। জানা গেছে, ১৯৪৮ সাল থেকে তেজগাঁওয়ের সরকারী ৩০০ একর এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ২০০ একর জায়গা বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু প্রচুর জমি সেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না, কিছু খালি পড়ে আছে। ট্রাকস্ট্যান্ডসহ অন্যান্য কাজে আটকে আছে আরও কিছু জমি। এগুলোকে ঠিকভাবে কাজে লাগালে এ এলাকাটি কার্যকর হয়ে উঠবে। যদি রেলওয়ে স্টেশনকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, এলাকাটি আরও শিল্পবান্ধব হবে। এখন যেভাবে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, তাতে থাকবে বহুতল ভবন, বাণিজ্যিক সেন্টার, সোলার এনার্জি সিস্টেম। বাড়িগুলোর দূরত্ব থাকবে প্রয়োজনমতো, ভবনগুলো হবে বিল্ডিং কোড মেনে, গার্বেজ সিস্টেম থাকবে অত্যাধুনিক। সব মিলিয়ে পরিবেশবান্ধব এলাকা করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ধানম-ি, গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা যেগুলো সরিয়ে দেয়া হচ্ছে, সেগুলো এখানে স্থানান্তরিত হতে পারে। অনুষ্ঠানে ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, তিব্বতসহ কয়েকটি ক্রসিংয়ে খুব চাপ পড়বে।
×