ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে ৭ খুন মামলা

নতুন পাঁচ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

নতুন পাঁচ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ, ১৮ এপ্রিল ॥ আলোচিত ৭ খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় আরও পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও দু’জনকে জেরা করা হয়েছে। সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২৩ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং আদালত আগামী ২৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছে। এদিকে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেছেন, আসামিপক্ষের হুমকি-ধমকির কারণে নিহত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই আব্দুস সালাম আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেননি। আদালত সূত্রে জানা যায়, সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ৭ খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও এমএম রানাসহ ২৩ আসামিকে (বর্তমানে কারাগারে আটক) জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমে আদালতে সাক্ষ্য দেন নিহত মনিরুজ্জামান স্বপন ও তাজুল ইসলামের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরিকারী বন্দর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ, লাশ বহনকারী কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুস, নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের লাশ শনাক্তকারী তার ভাগ্নে এ্যাডভোকেট প্রতীপ কুমার দে ও নিহত তাজুল ইসলামের চাচা আবু তাহের ও নিহত নজরুল ইসলামের শ্যালক সাইদুল ইসলাম। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীদের জেরা করেছেন। এছাড়া আদালতের অনুমতি নিয়ে আসামি নূর হোসেনের পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট খোকন সাহা সম্পূরক জেরা করেন একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটিকে। এছাড়া বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানকে জেরা করেছেন নূর হোসেনসহ অন্য আসামিদের আইনজীবীরা। জেরা শেষে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং আগামী ২৫ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। ওই তারিখে নতুন আরও ১০ জনের সাক্ষ্য নেয়া হবে বলে পিপি জানান। আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সোমবার খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। হত্যা ও লাশ উদ্ধারসহ নানা তথ্য উঠে এসেছে। তিনি অভিযোগ করেন, নিহত নজরুলের ভাই আব্দুস সালামকে নানা রকম হুমকি-ধমকি দেয়ায় তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে আসামি তারেক সাঈদ মোহাম্মদের আইনজীবী সুলতানুজ্জামান জানান, সুষ্ঠুভাবে সাক্ষীদের জেরা করা হয়েছে। আমরা সাক্ষীদের জেরায় আসামিপক্ষ যে জড়িত নয় সেটা আদালতে উপস্থাপন করতে পেরেছি। এর আগে দু’জন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী যুবলীগ নেতা মরিুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমকে অপহরণের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একটিসহ ফতুল্লা মডেল থানায় মোট দুটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ ম-ল ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
×