ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেঁচো খুঁড়তে সাপ ॥ বিকাশ জালিয়াতির চমকপ্রদ তথ্য

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

কেঁচো খুঁড়তে সাপ ॥ বিকাশ জালিয়াতির চমকপ্রদ তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অভিনব কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশ এজেন্টদের টাকা হাতিয়ে নেয়ার সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ বিভাগ (সিআইডি)। যাদের মধ্যে ৬ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকি ৫ জন কারাগারে। এমন প্রতারণার সঙ্গে মোবাইল ফোন কোম্পানিতে কর্মরত কিছু অসাধু ব্যক্তিও জড়িত। সোমবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এ্যাডিশনাল ডিআইজি) শাহ আলম এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, মূলত একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিকাশ এজেন্টদের টাকা অভিনব কায়দায় তুলে নেয়ার ঘটনাটি বেরিয়ে আসে। তিনি বলেন, রাজধানীর ফকিরাপুলে অবস্থিত রাওয়া এন্টারপ্রাইজ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক রফিকুল ইসলাম। তিনি বিকাশ, ডিবিবিএল ও ইউক্যাশ মোবাইল ফাইন্যান্সের এজেন্ট। গত ৩১ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় তার এ্যাকাউন্ট থেকে এক ব্যক্তির নম্বরের অনুকূলে সাড়ে ২৪ হাজার ও পরে পাঁচ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করেন। একই রাতে অপর এক ব্যক্তি ডাচ্-বাংলা মোবাইল ফাইন্যান্সের মাধ্যমে এক হাজার টাকা ক্যাশ আউট করেন। এরপর থেকেই তার সিমটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। বিষয়টি তিনি ব্যাংক ও মোবাইল অপারেটর কর্তৃপক্ষকে জানান। পরবর্তীতে তার সিম কার্যকর হলে দেখতে পান তার এ্যাকাউন্টে কোন টাকা নেই। বিষয়টি তার কাছে ব্যাপক রহস্যের জন্ম দেয়। তিনি উপায় না দেখে মতিঝিল থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ তথ্য। তদন্তে ধরা পড়ে যে ব্যক্তি টাকা ক্যাশ আউট করে নিয়েছেন, তিনি মূলত একজন প্রতারক। এই প্রতারকের সঙ্গে মোবাইল ফোন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার যোগাযোগ রয়েছে। ক্যাশ আউট করার পর ওই প্রতারক বুঝতে পারেন ওই সিমে আরও টাকা আছে। এরপর তিনি ওই মোবাইল ফোন কোম্পানির কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রতারক কর্মকর্তাকে বলেন, যে সিম থেকে তিনি ক্যাশ আউট করেছেন, সেটি তার নম্বর। কিন্তু সিমটি হারিয়ে গেছে। এরপর মোবাইল ফোন কোম্পানির কর্মকর্তা সিমটি বন্ধ করে দেন। এরপর এই সিমের পরিবর্তে আরেকটি তাকে রিপ্লেস করে দেন। রিপ্লেস করা সিমে টাকা থাকে। সেই টাকা তিনি তুলে নিয়ে সিমটি ফেলে দেন। এমন ঘটনার পর স্বাভাবিক কারণেই এজেন্ট আবার সিম তোলেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রতারক সিম তুলে টাকা ক্যাশ আউট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও আরেকটি পদ্ধতিতে প্রতারণা হয়ে থাকে। সেটি হচ্ছে, মোবাইল ফোন কোম্পানির মোবাইল ব্যাংকিং বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা কোন এজেন্টের সিম ক্যাশে কত টাকা রয়েছে সেটি তারা যাচাই-বাছাই করে। যাদের ক্যাশে বেশি টাকা থাকে তাদের সিম রেজিস্ট্রেশনের সফট কপিটি ই-মেইলের মাধ্যমে প্রতারকের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে সে এজেন্টের স্বাক্ষর সহজ এবং সিম ক্যাশে সব সময় বেশি টাকা থাকে তাদেরই টার্গেট করে।
×