ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শহিদুল ইসলাম

পরাজয় মানেই জীবন থেমে থাকা নয়

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৬

পরাজয় মানেই জীবন  থেমে থাকা নয়

মানুষ পৃথিবীর সেরা জীব বলেই মানুষের পক্ষেই অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়েছে। হচ্ছে, হবে। যা অন্য কোন প্রাণীর পক্ষে সম্ভব হয় না। আর এই বিশ্বাস মনেপ্রাণে নিজের ভেতর ধারণ করে যারা কার্যক্ষেত্রে, বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগ করে তারাই হয় সফল ব্যক্তি। তবে যে কোন কাজ করার আগে ভেবে নিতে হবে, ওই কাজ করার সামর্থ্য বা যোগ্যতা নিজের কতটুকু আছে। নিজের যোগ্যতা, সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করলে সফলতা আসবেই। তাই আগে ভাল করে নিজেকে জেনে নাও। আমি বেশির ভাগ মানুষকেই দেখি, কোন কাজ করতে গিয়ে একবার কিংবা দু’বার ব্যর্থ হলেই সে ধরে নেয়, এ কাজ তাকে দিয়ে আর হবে না। ফরে সে ব্যর্থ হয়। নিজের কাছে নিজেই হেরে যায়। ধৈর্য ধরে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কোন কাজ করলে তার সফলতা আসে, তা জানার পরও বেশির ভাগ মানুষ কেন কোন কাজে একবার ব্যর্থ হলে তা আর করতে চায় না। এর সঠিক কারণ হলো, আমরা অতি অল্প সময়ে অনেক বেশি সফলতা আশা করি। কিন্তু আমরা ভুলেই যাই, পৃথিবীর বড় বড় সফল ব্যক্তিরা অনেক সাধনার পরেই না সফল হয়েছে। জীবনে অনেক বেশির সফলতা পেতে চাইলে নিজের মাঝে কিছু ভাল গুণ অবশ্যই থাকতে হবে। যেমন : সাহসিকতা, কারণ বেশির ভাগ সময় সাহসীরাই সৌভাগ্যের দেখা পায়। অন্যের মতামতকে সম্মান দেয়া, সত্যিকারের সফল ব্যক্তিরা অন্যকে মতামত দিতেও পরে, অন্যের মতামত গ্রহণও করতে পারে। সব কাজই গুরুত্ব দিয়ে করা, মানে যাই কর ভালবেসে কর। নিজের মাঝে আত্মমর্যাদা বোধ গড়ে তুলতে হবে, নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে নিজের যে মূল্যায়নÑ তাই আত্মমর্যাদাবোধ। আমরা যখন অন্তরে স্বাচ্ছন্দ্য ও তৃপ্তি বোধ করি, তখন আমাদের কাজকর্মের মানও উন্নত হয়। সারা পৃথিবী তখন সুন্দর মনে হয়। অন্তরের অনুভূতি আর বাহিরের কাজকর্মের মাঝে একটি যোগসূত্র আছে। এই যোগ সূত্রকে সার্থকভাবে কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারলেই সফল হওয়া যায়। এর ব্যতিক্রম ঘটলেই মানুষ ব্যর্থ হয়। অন্যের নিকট থেকে শ্রদ্ধা পাওয়া, অন্যের মন জয় করা, অন্যের নিকট বিশ্বাসী হওয়া যায় আত্মমর্যাদাবোধ থেকেই। এ সম্পর্কে ‘কনফুসিয়াস’ বলেছেন, ‘আত্মমর্যাদা হারালে লোকের শ্রদ্ধা হারাবে। উদার হও, ত্যাগী হও, লোকের মন জয় করতে পারবে। সত্যবাদী হও, লোকের বিশ্বাস পাবে।’ কোন কাজে একবার পরাজয় হলেই আর সফল হওয়া যাবে নাÑ এমন চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। উল্লেখ্য, জৈনক ব্যক্তি ২১ বছর বয়সে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হন। ২২ বছর বয়সে আইন সভার নির্বাচনে পরাস্ত হন। ২৪ বছর বয়সে আবার ব্যবসায় পরাস্ত হন। ২৬ বছরে তার স্ত্রী মারা যায়। ৩৪ বছর বয়সে কংগ্রেস নির্বাচনে পরাস্ত হন। ৪৫ বছরে সাধারণ নির্বাচনে ব্যর্থ হন। ৪৭ বছরে নির্বাচনে আবার ব্যর্থ হন। ৪৯ বছর বয়সে সিলেটের নির্বাচনে অবার পরাজিত হন। অবশেষে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন ৫২ বছর বয়সে। এই ব্যক্তিটি হচ্ছে আমেরিকার সফল প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন। একে কি ব্যর্থ বলবেন? জীবনে হাজার বাধা অসার পরও মনের টানে শেষ বয়সে এসে প্রেসিডেন্ট হয়ে সফলতার চূড়া স্পর্শ করেছেন এবং বলেছেন, ‘পরাজয় মানেই শেষ নয়। যাত্রা একটু দীর্ঘ হওয়া মাত্র। শেষে সবার জানা একটি বাংলা প্রবাদ দিয়ে লেখাটা শেষ করছিÑ ‘একবার না পারিলে দেখ শত বার’। পোশাক : ইজি
×