ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পান্থ আফজাল

আটপৌরে সাজ

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৬

আটপৌরে সাজ

বৈশাখ মাসজুড়েই চারদিকে চলে উৎসবের রব। এই উৎসবে নিজেকে বাঙালী আটপৌরে সাজে শামিল করতে নারীর থাকে নানা প্রচেষ্টা। আর তাই সাজের পূর্ণতা আনতে পরনে থাকা চাই সুতি শাড়ি। বাঙালী নারীর আদি রূপকে ফুটিয়ে তুলতে অফুরন্ত প্রচেষ্টার মধ্যে আবার ভিন্নতার আবেশ থাকে। নিজেকে সবার মাঝে আলাদা করতে কল্পিত নানা প্রেমময় রূপেও উপস্থাপন করতে পারেন। বাংলা সাহিত্যের আদি থেকে আজ পর্যন্ত যত উল্লেখযোগ্য নারী চরিত্রের রূপকল্পনা করা হয়েছে, অবলম্বন করতে পারেন তার একটি। তাদের রূপকে ঘিরে রচিত উপমা, অলঙ্কার আর পোশাকী সাজের বর্ণনায় সাজিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। ‘ব্যথার দান’ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে রচিত কাজী নজরুল ইসলামের একটি প্রেমের গল্প। এ গল্পের নায়িকা বেদৌরার কেউ নেই। ছোটবেলা থেকে নায়ক দারার মায়ের কাছেই বেড়ে ওঠে। মৃত্যুর আগে মা বেদৌরাকে দারার হাতে তুলে দিয়ে যান। এর পর বেদৌরার প্রতি দারার প্রেম প্রগাঢ় হয়। ‘বিরাজ বৌ’ বাঙালী মধ্যবিত্ত জীবনের এক করুণ কাহিনী। অর্থনৈতিক সমস্যা মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, ‘বিরাজ বৌ’ চরিত্র চিত্রণের মাধ্যমে তুলে ধরতে চেয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অসামান্য রূপ ও অপূর্ব চরিত্র-গুণের অধিকারিণী বিরাজ বৌ। আপনার সাজে আনতে পারেন সে আবেশ। ধূসর পৃথিবীর বাসিন্দা জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রেম এসেছে প্রকৃতিকে ঘিরে। তার প্রেমের জগতের নারীরা বনলতা, সুরঞ্জনা বা সুচেতনা। এমন অনেক কল্পনার নারীর প্রতীকী রূপে নান্দনিকতায় সাজিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। শুধু কল্পকাহিনীর নায়িকার সাজ নয়, আধুনিক যুগের বাঙালী মেয়ের সাজেও মানিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। অধিক মাত্রায় কাপড় আটকানোর পিন ব্যবহারে আটোসাটো স্টাইলেও আপনাকে খারাপ দেখাবে না। এলো বা বেধে রাখা চুলে গুঁজে নিতে পারেন পছন্দের কোন ফুল। মূলত, যে সাজে স্বাচ্ছন্দ্য পাবেন সেটিই আপনার জন্য উপযুক্ত। সাজো গো রমণী ফুলে ফুলে বৈশাখী উৎসবে ফুল ছাড়া বাঙালী নারীর সাজ যেন অপূর্ণ রয়ে যায়। তাই বৈশাখ বরণের মিছিলে রঙিন শাড়ির সঙ্গে নারীর ফুলেল সাজ চাই-ই-চাই। বৈশাখী উৎসবের দিনে প্রখর রোদ থাকে। তবুও সারাদিন সবার সঙ্গে আনন্দে মেতে থাকতে হয়, চুটিয়ে আড্ডা দিতে হয়, বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে হয়। তাই এ দিনে সাজ যেমনই হোক না কেন তা যেন আরামদায়ক হয়- সেদিকটির প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের চুল বড় এবং বেঁধে রাখতে পছন্দ করেন, তারা খোঁপা করে নিতে পারেন। লম্বা চুলে হাত খোঁপা, এলো খোঁপা, ফ্রেঞ্চ খোঁপা, বেণী অথবা ফ্রেঞ্চ বেণী করে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ফুল লাগাতে পারেন। আবার যাদের চুল ছোট কিংবা বিভিন্ন ধরনের কাট দেওয়া, রিবল্ডিং বা স্ট্রেইট করা তারা খোলা চুলে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে একপাশে ফুল গুঁজে নিতে পারেন। রজনীগন্ধার কলি আর গোলাপ দিয়ে বানানো মালা, গাঁদার মালা, গাজরা, বেলিফুলের মালা চুলের সাজে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে ভিন্নতা আনতে দেশীয় ফুলও ব্যবহার করতে পারেন। চুলের সাজে খুব সহজেই আপনি ব্যবহার করতে পারেন পলাশ, শিমুল, জারুল আর কৃষ্ণচূড়া। দেশীয় ফুল ছাড়া অর্কিড, জারবারা প্রভৃতি বিদেশি ফুলও লম্বা চুলের বেণীতে ব্যবহার করা যায়। পুরো বেণীতে ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে দিতে পারেন কাঠ গোলাপ বা বেলি। আবার গাজরা দিয়ে পুরো বেণীকে পেঁচিয়ে দিলেও ভাল দেখায়। শুধু কি বড়দেরই ফুল দিয়ে সাজতে ইচ্ছা করে? ছোটদের বুঝি করে না। মেয়ে শিশুদেরও সাজিয়ে দিতে পারেন ফুল দিয়ে। চুল বড় হলে বেঁধে ফুল লাগিয়ে দিতে পারেন। তবে ফুল যেন তাদের কাছে অস্বস্তিকর না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অধিকন্তু ফুল দিয়ে বানানো মালা তারা গলায় ও হাতে পরলে দারুণ দেখায়। মডেল : সাবরিনা, নীল, রিফাত, নাজিম ও প্রিয়াঙ্কা পোশাক : রঙ বাংলাদেশ ছবি : রনি ও সাকিব
×