ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দর্শনার্থীদের জন্য খুলে গেল শাহজালালের কনকর্স হল

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৮ এপ্রিল ২০১৬

দর্শনার্থীদের জন্য খুলে গেল শাহজালালের  কনকর্স হল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোগান্তির সাত মাসের মাথায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হলো শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কনকর্স হল। রবিবার সকাল দশটায় আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়ায় দর্শনার্থীদের মাঝে স্বস্তির নিশ্বাস নেমে আসে। খোলার দিনেই বিপুল দর্শনার্থী চলমান তাপপ্রবাহ থেকে নিস্তার পান। অক্টোবর মাস থেকে কনকর্স হলের ইজারা প্রথা বন্ধ রাখার পর থেকেই দুর্ভোগের শিকার হন বিমানবন্দরে আসা দর্শনার্থীরা। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তাদের খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। শত শত দর্শনার্থীকে এ দুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় সিভিল এ্যাভিয়েশনের টনক নড়ে। বিমানপরিবহনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নিরীহ মানুষদের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখাটা অবশ্যই দুঃখজনক। অমানবিকও বটে। এ জন্যই দুর্দশার লাঘবের জন্য আপাতত কিছু শর্তসাপেক্ষে দর্শনার্থীকে কনকর্স হলে প্রবেশের সুবিধা রেখে সেটা আবার চালু করা হয়। উল্লেখ্য, একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে কনকর্স হলে ইজারা পদ্ধতির মাধ্যমে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করা হয় গত অক্টোবরে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা ছিল দর্শনার্থীদের ছদ্মবেশে নাশকতা করা হতে পারে। এ সম্পর্কে বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সাবেক চেয়ারম্যান ও মেম্বার অপস এ ধরনের কা-জ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তখন বিমানবন্দরে এমন কোন পরিস্থিতি ছিল না যে এটা বন্ধ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বিমানমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার গণমাধ্যমের প্রশ্নবাণে পড়ে বিব্রতকর অবস্থার শিকার হন। দর্শনার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তি সম্পর্কে সিভিল এ্যাভিয়েশনের একজন দায়িত্বশীল পরিচালক জনকণ্ঠকে বলেন, গত মার্চে হঠাৎ বিমানবন্দরে নাশকতা ও হামলার হুমকিতে দর্শনার্থীদের ইজারা প্রথা বন্ধ রাখা হয়। তখন বলা হয়েছিল এটা সাময়িক। কিন্তু পরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলেও ইজারা প্রথা চালু করা হয়নি। আগে তিন শ’ টাকার টিকেট কিনে দর্শনার্থীরা কনকর্স হলে নিরাপদ পরিবেশে আরাম-আয়েশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে পারতেন। ফ্লাইট বিলম্ব হলেও তারা ন্যূনতম নিরাপদ পরিবেশে সময় কাটাতেন। কিন্তু ইজারা প্রথা বন্ধ থাকার দিনগুলোতে সেই মানুষগুলোকে কাটাতে হয় ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা, ঝড়-বৃষ্টি আর হাড় কাঁপানো শীতে। বিমানবন্দরে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, শাহজালালের ওপর ও নিচের কনকর্স তৈরিই করা হয়েছে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য। সিভিল এ্যাভিয়েশন এ দুটো হল ইজারা দেয়ায় দর্শনার্থীরা টিকেট কেটে ভেতরে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারতেন। মার্চ থেকে এই প্রথা বন্ধ থাকায় এতদিন শত শত দর্র্শনার্থীকে প্রতিদিন বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থায় কাটাতে হয়। এতে বোঝার উপায় থাকে না কে ভাল লোক আর কে নাশকতাকারী। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে তাদের বাইরে রাখায় বরং পরিবেশ আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে ওঠে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিশেষ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একজন নারী ও শিশু কী করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে? বাধ্য হয়েই তাদের মাটিতে বসতে হয় পেপার বিছিয়ে। একটা আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে এমন পরিবেশ দেখতে কেমন লাগে? এতে দেশের ভাবমূর্তিই থাকে কি? এসব বিষয় বিবেচনা করেই শেষ পর্যন্ত কনকর্স হল খুলে দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কেএম জাকির হাসান বলেন, এ সমস্যা কাটানোর জন্য আপাতত নিচের ডিপার্চার ও এ্যারাইভাল কনকর্স হলটা খুলে দেয়া হয়েছে।
×