ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইকুয়েডরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ৭৭

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৮ এপ্রিল ২০১৬

ইকুয়েডরে ভয়াবহ  ভূমিকম্পে  নিহত ৭৭

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং লোকজন আতঙ্কে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে। খবর এএফপি, বিবিসি ও সিএনএনের। এক টেলিভিশন ভাষণে ইকুয়েডরের ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে গাস জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছয়টি রাজ্যে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তার জন্য ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আসতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দফতরের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় ১৮টা ৫৮ মিনিট (জিএমটি ২৩টা ৫৮ মিনিট) শনিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় রবিবার ভোর ৫টা ৫৮ মিনিট) ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব উপকূলীয় শহর মুইসেন থেকে ২৭ কিলোমিটার (১৬ দশমিক ৮ মাইল) দূরে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৯ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের প্রবল ঝাঁকুনিতে রাজধানী কিটো শহরের বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। গুয়াকুইলে শহরে একটি ওভারপাস ধসে পড়ে। উপকূলীয় কয়েকটি এলাকা বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার ও প্রতিবেশী দেশ পেরু সুনামি সতর্কতা জারি করে। এদিকে ভ্যাটিকান সফররত ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া টুইটারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান। সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজধানী কিটোর একটি অংশ সাময়িকভাবে বিদ্যুতহীন হয়ে আছে। মান্তা শহরে বিমানবন্দরের একটি টাওয়ারও ভেঙ্গে পড়েছে। স্থানীয় দৈনিক এল টেলেগ্রাফো জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা ৫৮৮ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। দুর্গতদের জন্য খোলা হয়েছে পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্র। সন্ধ্যার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দফায় দফায় মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে সেখানে। অনুভূত ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রার হলো ৫ দশমিক ৪। বহু লোককে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে গাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জানমাল রক্ষায় জরুরী বিভাগ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। কলোম্বিয়াতেও এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সেখানে একটি ক্লিনিক থেকে দ্রুত রোগীদের সরিয়ে নেয়া হয়। প্রশান্ত মহাসাগরে ‘রিং অব ফায়ার’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় ইকুয়েডরের অবস্থান। ১৯৭৯ সালের পর সেখানে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা। ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সর্বশেষ ১৯৮৭ সালের মার্চে ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এক হাজার লোক নিহত হয়েছিল।
×