ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন প্রজন্মের ক্ষুদ্র পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন

স্নায়ুযুদ্ধ ফের শুরু হচ্ছে!

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৮ এপ্রিল ২০১৬

স্নায়ুযুদ্ধ ফের শুরু হচ্ছে!

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এখন নতুন উদ্যমে নতুন প্রজন্মের ক্ষুদ্র ও কম ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। এই অস্ত্র তৈরি স্নায়ুযুদ্ধ-যুগের অস্ত্র প্রতিযোগিতা পুনরুজ্জীবিত এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে শক্তির ভারসাম্য ক্ষুণœ হতে পারে। যা অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে পরমাণু শান্তি বজায় রেখেছিল। পুরানো খেলাই নতুন করে বড় মাত্রায় শুরু হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষয়িষ্ণু রাশিয়া, উদীয়মান চীন ও একটি অনিশ্চিত যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই নতুন করে শুরু করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে দোষারোপ করে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, পুতিনের একগুঁয়েমির কারণে ২০১০ সালে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির প্রচেষ্টা এবং এই দুই বৃহৎ ক্ষমতাধর দেশের অস্ত্র ভা-ার হ্রাসের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়। কিছুটা দায়ী চীনও। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় পৌঁছাতে চাইছে। আর কিছুটা দোষ যুক্তরাষ্ট্রের নিজের। তারা নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতার উন্নতির নামে পারমাণবিক আধুনিকায়নে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যা আগুনে তেল ঢেলে দেয়ার শামিল। চলতি মাসের প্রথম দিকে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি সামিটে বিপদের কথা স্বীকার করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। সম্ভাব্য নতুন, আরও মারাত্মক ও কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুললে তা শেষ পর্যন্ত নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার তীব্রতা বাড়াবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি। সাত বছরের বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্টের অবশেষে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র কামনোর বিষয়ে কথা বলার অর্থ হলো, এটা স্বীকার করা যে দ্বিতীয় পারমাণবিক যুগে পরমাণু অস্ত্র হ্রাসে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে। ওবামা প্রশাসনে থাকা স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের কয়েকজন প্রবীণ কর্মকর্তার মধ্যে একজন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস আর ক্ল্যাপার। তিনি সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটিকে বার্ষিক বৈশ্বিক হুমকি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলেছেন, আমরা আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের সম্মুখীন হতে পারি, যা হবে সর্পিল। এটা তার কয়েক বছর আগের মূল্যায়ন থেকে ভিন্ন। তখন তিনি বিমান বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে পারমাণবিক হামলার ঝুঁকির ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। প্রতিপক্ষ দেখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র তার পরমাণু পুনরুজ্জীবন কর্মসূচীতে কেমন ব্যয় করে, যা তিন দশকের বেশি সময়ে আনুমানিক এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি এবং তারা তাদের নিজস্ব অত্যাধুনিক অস্ত্রসম্ভার গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটাকে কাজে লাগাবে। রাশিয়া ক্ষুদ্র ওয়ারহেডবাহী বড় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন যে, নতুন অস্ত্র তৈরি করতে দেশটি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করতে পারে। রুশ সংবাদ প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, রুশ নৌবাহিনী সমুদ্র তলদেশীয় ড্রোন তৈরি করছে। শহরগুলো বসবাসের অযোগ্য করার লক্ষ্যে তেজস্ক্রিয় দূষণ তৈরিতে পানির নিচে এটি বিস্ফোরিত হবে। চীনের প্রেসিডেন্টের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকা দেশটির সেনাবাহিনী ‘হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকেল’ নামে একটি নতুন ওয়ারহেডের পরীক্ষা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ করার মতো অবস্থান কমই রয়েছে। দেশটির তার নিজস্ব হাইপারসনিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছে। কিন্তু অপ্রত্যাশিত বিস্ফোরণে কারণে ২০১৪ সালে এই পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। আগামী বছর ফের ফ্লাইট টেস্ট শুরু হবে। আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তার পরমাণু অস্ত্রের পঞ্চম প্রজন্মের উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে। কার্নেগি এন্ডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র বিশ্লেষক জেমস এম এ্যাকটন গত বছর চীনের ক্ষমতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে কংগ্রেস কমিশনকে বলেছেন, আমরা অস্ত্র প্রতিযোগিতার প্রারম্ভিক পর্যায়ের সাক্ষী হচ্ছি। Ñনিউইয়র্ক টাইমস
×