ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যে মেলায় সবাই বউ!

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

যে মেলায় সবাই বউ!

বাঙালী সংস্কৃতির বড় ঐতিহ্য মেলা। পরস্পরের সঙ্গে মিলন, ভাব বিনিময় এবং সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচনার স্বর্ণময় ক্ষেত্র হিসেবে মেলার রয়েছে দীর্ঘকালের ভূমিকা। মানুষের এই মিলনক্ষেত্রে সমন্বয় সাধিত হয় দু‘টি বিষয়ের ওপর। একটি উৎসব অন্যটি বিপণন। বিভিন্ন ধরণের লোকাচার ও ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরেই মেলার উদ্ভব। এর উদ্ভাবন কবে থেকে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি না থাকলেও মানব সভ্যতার সঙ্গে মেলার ওতপ্রোত সংযোগ রয়েছে। সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে বদলে গেছে মেলার চরিত্র। মেলার মাধ্যমে আত্মিক সৌন্দর্যের যে রস, তা থেকে বঞ্চিত হয়নি বাঙালী। বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। আর এই বৈশাখের বড় অনুষঙ্গ হলো বৈশাখী মেলা। মেলা মানেই মিলিত প্রাণের কোলাহল, মেলা মানেই অনাবিল আনন্দের উদ্ভাবন। নগর মহানগর ছাড়িয়ে বাংলার তৃণমূল পর্যন্ত খুব সম্ভব কোন জনপদ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয় না। বাঙালীর ঐতিহ্য এই মেলায় থাকে মুড়ি মুড়কি, মিষ্টি, জিলাপী, চুড়ি, ফিতা খেলনা, গ্রামীণ নারীদের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী, বাঁশ, বেত, কাঠ, মাটির তৈরি সামগ্রী সবকিছুই মেলে মেলায়। স্থানীয় কৃষক, কারিগর, শিল্পী তথা কামার, কুমার, তাঁতি, মালাকর, হালুইকর ইত্যাদি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে মেলাকে ঘিরে বিপুল সাড়া পড়ে। এছাড়া থাকে পুতুল নাচ, নাগরদোলা, যাত্রা, সার্কাস। শহর বন্দরের মেলায় থাকে বাঙালীর কৃষ্টি কালচারের সঙ্গে মিশে থাকা লোকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিটি মেলাই গণসম্পৃক্ত এবং মানবতামুখী। এসব মেলায় শিশু-কিশোর এবং নারীদের থাকে তীব্র আকর্ষণ। এর কারণ শিশু-কিশোরদের জন্য নানা ধরনের খেলনা পাওয়া যায় মেলায় আর নারীদের জন্য পাওয়া যায় প্রসাধন ও গৃহ সামগ্রী। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ জীবনের নির্মম ভার বহন করে ক্লান্ত এবং ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ে। তাদের জীবনে আনন্দের নির্মল বাতাস প্রবাহিত হওয়ার অবকাশ কোথায়? তবে বৈশাখকে ঘিরে ‘বউমেলা’ নামে ব্যতিক্রমী এক মেলা বসে রংপুরের তাজহাটে যেখানে ক্রেতা বিক্রেতাদের সবাই বউ। Ñমানিক সরকার মানিক রংপুর থেকে
×