ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মুসার হ্যাটট্রিকে মুক্তিযোদ্ধার জয়

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

মুসার হ্যাটট্রিকে মুক্তিযোদ্ধার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আহমেদ কোলো মুসার নয়নাভিরাম হ্যাটট্রিকে অনায়াস জয় কুড়িয়ে নিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। ‘কেএফসি স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে’ তারা হারায় উত্তর বারিধারা ক্লাবকে। ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ৩-০। তবে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জিতেও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে যেতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা। সেই সঙ্গে এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি শেষ চারে নাম লেখানো। ৪ খেলায় এটি মুক্তিযোদ্ধার টানা তৃতীয় জয়। ৩ জয় ও ১ হারে তাদের পয়েন্ট ৯। শেখ জামাল ধানম-ি লিমিটেড ও চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডেরও পয়েন্ট সমান। তবে তাদের চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা ম্যাচ খেলেছে একটি বেশি। তাই পয়েন্ট টেবিলে আগের মতোই তৃতীয় অবস্থানে আছে তারা। গোলগড়ে এগিয়ে থাকায় শেখ জামাল আছে এক ও চট্টগ্রাম আবাহনী আছে দুই নম্বরে। আর এ কারণেই শুক্রবারের ম্যাচে জিতেও সেমিফাইনালে নাম লেখানো নিশ্চিত করতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা। শেষ চারে খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে এখন তাদের পরের ও শেষ গ্রুপ ম্যাচটি যেমন অবশ্যই জিততে হবে, তেমনি প্রত্যাশা করতে হবে শেখ জামাল ও চট্টগ্রাম আবাহনীর পয়েন্ট খোয়ানোর দিকেও। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় মুক্তিযোদ্ধা। ০-২ গোলে হেরে যায় চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে। দ্বিতীয় ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় পায় ১-০ গোলে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে। তৃতীয় ম্যাচেও তাই। এবার ২-১ গোলে হারায় ঢাকা মোহামেডানকে। টানা চার ম্যাচ হেরে আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বারিধারার। তাই নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে নতুন করে আবারও নাম লেখানো বারিধারার পরিকল্পনা ছিল, শেষ ম্যাচটি অন্তত জয় দিয়ে শেষ করতে। কিন্তু সেই আশাও পূরণ হয়নি তাদের। অথচ শেষ ম্যাচটি ছাড়া আগের চার ম্যাচেই হারলেও দুর্দান্ত খেলেছিল তারা। কোন প্রতিপক্ষকে সহজে জিততে দেয়নি তারা। তারা আগের চার ম্যাচ হারে যথাক্রমে ব্রাদার্স ইউনিয়নের কাছে ২-০, মোহামেডানের কাছে ২-০, শেখ জামালের কাছে ১-০ এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ২-১ গোলে। মজার বিষয় হলো, এ পর্যন্ত চার ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা করেছে ৬ গোল। এর ৫টিই করেছেন কোলো মুসা, বাকি গোলটি আত্মঘাতী! বলা যায় মুসাই যেন মুক্তিযোদ্ধার ত্রাণকর্তা। দলের জয়ী হওয়া প্রতি ম্যাচেই গোল এসেছে তার পা থেকে। শুক্রবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। শুধু তাই নয়, বারিধারার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে চলমান টুর্নামেন্টের সর্বাধিক গোলদাতাও বনে গেছেন তিনি। শেখ রাসেলের ইথিওপিয়ান ফরোয়ার্ড ফিকরু তেফেরার সঙ্গে যুগ্মভাবে ৫ গোল করেছেন তিনি। ৪ গোল করে দ্বিতীয় স্থানে শেখ জামালের অধিনায়ক-হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে। ফিকরু-ওয়েডসনও এই আসরে দুটি হ্যাটট্রিক করেছেন। ফলে মুসার হ্যাটট্রিকটি হচ্ছে এই আসরের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। শুক্রবারের খেলায় ১৭ মিনিটে প্রথম গোল পায় মুক্তিযোদ্ধা। বাঁ প্রান্ত থেকে তৌহিদের ক্রস এগিয়ে এসে আটকাতে যান বারিধারার গোলরক্ষক রাজীব। কিন্তু নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড আহমেদ কোলো মুসা হেড দিয়ে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন (১-০)। ৩৪ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধা গোল পায় বারিধারার রক্ষণের ভুলে। বারিধারার গিনির ডিফেন্ডার সিলিয়া মোহামেদ হেডে ব্যাকপাস দেন গোলরক্ষককে। কিন্তু তার কাছে বল পৌঁছানোর আগেই হেডে বল জালে পাঠান মুসা (২-০)। ৫৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে মোবারকের ক্রস তৌহিদের বাঁ পায়ের শটটি গোলরক্ষক ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে না পারায় বল চলে যায় জটলায়। সেখানে দাঁড়ানো কোলো মুসা আলতো শটে বল জালে পাঠিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন (৩-০)। মুক্তিযোদ্ধা এরপর আরও কিছু সুযোগ পায় গোলের। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। ফলে ৩-০ গোলে জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।
×