ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলনে চিকিৎসকরা রোগীর মৃত্যু নিয়ে রামেকে সংঘর্ষ ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

আন্দোলনে চিকিৎসকরা রোগীর মৃত্যু নিয়ে রামেকে সংঘর্ষ ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে তুলকালাম কা- ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে জরুরী বিভাগে ভাংচুর চালায়। শুক্রবার দুপুর একটার দিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। মোশাররফ হোসেন খান (৬০) নামের এক রোগীর মৃত্যুতে এ ঘটনা ঘটে। তার বাড়ি নগরীর টিকাপাড়া এলাকায়। মোশাররফের স্বজনরা জানান, মোশাররফ হোসেন কয়েকদিন থেকে নগরীর জমজম ক্লিনিকে চিকিৎসক খালেকুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, তার খাদ্যনালীতে পাথর ধরা পড়েছে। সেজন্য অপারেশন করতে হবে। সেখানেই অপারেশন হয়। কিন্তু রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ৯ এপ্রিল তাকে রামেক হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেও আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় চিকিৎসকরা মোশাররফ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। সর্বশেষ শুক্রবার রামেক হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে রোগীকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই সময় রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে আসে। রোগীর স্বজনরা দ্রুত আবার হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুব্রত রোগীকে একটি ইনজেকশন দেয়। এরপরই রোগী মারা যায়। রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোগীর মৃত্যুর পরে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক সুব্রত ও ইন্টার্ন চিকিৎসক আরিফকে লাঞ্ছিত করে রোগীর স্বজনরা। মৃত রোগীর ছেলে বুলু হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দরজা-জানালা ভাংচুর করতে গেলে কাঁচে হাত কেটে গিয়ে সে আহত হন। এদিকে চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ইন্টার্নি চিকিৎসকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি দল এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে জরুরী বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করতে শুরু আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বাগ্বিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখানে থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের তাড়িয়ে দেয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আবার সেখানে ফিরে এসে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা জরুরী বিভাগের জানালা ও কিছু যন্ত্রপাতিও ভাংচুর করে। পরে পুলিশ দ্রুত ওই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টির প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারপিট করেছে। এ ঘটনায় ওই পুলিশের শাস্তি দাবি করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবি করেন, পুলিশের বিচার না হওয়া তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকের কোন হাতাহাতির ঘটনা ঘটেনি। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। পুলিশ সেটি ধর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছে।
×