ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তরুণী ছুরিকাহত

রাজধানীতে দোকান কর্মচারী খুন, দুজনের আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

 রাজধানীতে দোকান কর্মচারী খুন, দুজনের আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার বংশালে ছিনতাইকারীরা এক দোকান কর্মচারীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছে। পৃথক স্থানে এক শিক্ষার্থীসহ দু’জন আত্মহত্যা করেছে। হাজারীবাগে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক তরুণীকে ছুরিকাঘাত করেছে দুই বখাটে। শুক্রবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার বংশালে সিদ্দিকবাজার মোড়ে ছিনতাইকারীরা সাঈদ হোসেন (৩২) নামে এক দোকান কর্মচারীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে। নিহত সাঈদ হোসেনের বাবার নাম মৃত মোহাম্মদ আলী। তিনি উত্তরার একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তার বাসা পুরান ঢাকার বংশালের নবাবপুরের গোপীমোহন বসাক লেনে। প্রত্যক্ষদর্শী রিক্সাচালক তোফায়েল আহমেদ জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে যাত্রী সাঈদকে নিয়ে রিক্সায় করে ছিদ্দিকবাজার মোড়ে আসেন। এ সময় দুই ছিনতাইকারী সাঈদ হোসেনের গতিরোধ করে তার বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় সাঈদ চিৎকার দিলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতাবস্থায় সাঈদকে তিনি উদ্ধার করে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের ভাই ওয়াহিদ হোসেন জানান, সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশে বের হন তার ভাই সাঈদ হোসেন। সিদ্দিকবাজার মোড়ে গেলে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। এটা জানতে পেরে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে দেখেন তার ভাই মারা গেছেন। বংশাল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আলীম জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সিদ্দিকবাজারে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ওই যুবকের মৃত্যুর পর এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওসি (তদন্ত) আলীম আরও জানান, সাঈদের কাছে একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। তবে মানিব্যাগে কিছুই ছিল না। পরে সাঈদের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মযনাতদন্তের জন্য দুপুরে ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যা ॥ মায়ের সঙ্গে অভিমান করে রাজধানীর উত্তরায় কীটনাশক পান করে হৃদয় রহমান (১৮) নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। মৃত হৃদয় উত্তরার একটি স্কুল থেকে এ বছর মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষা দিয়েছিল। নিহতের বাবার নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরের চিরদিয়া গ্রামে। রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ২২ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাড়িতে থাকত। নিহতের মা রহিমা বেগম জানান, নববর্ষ উপলক্ষে হৃদয় বৃহস্পতিবার সারারাত বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে ছিল। পরদিন শুক্রবার সকালে বাসায় ফেরে। কোথায় ছিল এ বিষয়ে আমি জানতে চাই। পরে ছেলে হৃদয়ের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এ নিয়ে ছেলেকে বকাঝকা করা হয়। এদিকে, একই দিন সকালে রাজধানীর হাজারীবাগের টালি অফিস এলাকায় মেহেদী হাসান (২৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের বাবার নাম আব্দুল রাজ্জাক। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার সনাকিয়া গ্রামে। তিনি হাজারীবাগে টালি অফিস এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন। মৃতের ভাই লিটন জানান, কয়েকদিন ধরে মেহেদীর মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে বাসার বারান্দার রডের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। টের পেয়ে মেহেদীকে সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মেহেদীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়। ব্যর্থ প্রেমিক ছুরিকাঘাত করেছে প্রেমিকাকে ॥ রাজধানীর হাজারীবাগে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রিপা আক্তার (১৮) নামে এক তরুণীকে ছুরিকাঘাত করেছে দুই বখাটে। পরে তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রিপার বড় বোন রূপা আক্তার জানান, ছোট বোন রিপা রায়েরবাজারে একটি পোশাক বিক্রির দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কাজ শেষে রিক্সাযোগে বাসায় ফিরছিল। পথিমধ্যে নিমতলা নামক স্থানে চাকমা আমিনসহ দুই যুবক রিপার রিক্সার গতিরোধ করে। পরে তারা প্রথমে রিপার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় রিপা চিৎকার শুরু করলে চাকমা আমিন রিপার দুই গালে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে। পরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রূপা আরও জানান, চাকমা আমিন কিছুদিন ধরে রিপাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত সপ্তাহে সে রিপাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু রিপা বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এতে চাকমা আমিন রিপার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে হুমকি-ধমকি দেয়। আর এরই কারণে চাকমা আমিন রিপাকে একা পেয়ে ছুরিকাঘাত করে। এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার পুলিশ জানায়, রিপার হাসপাতালের চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
×