ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া শহরের ফুটপাথে বাজার রাস্তার অর্ধেকও গাড়ির দখলে

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

বগুড়া শহরের ফুটপাথে বাজার রাস্তার অর্ধেকও গাড়ির দখলে

সমুদ্র হক ॥ বগুড়া শহরের ফুটপাথ দখল হয়ে গিয়েছে। শহরের জনচলাচলে ফুটপাথ আর ব্যবহার করা যায় না। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে চারদিকে সামান্য কিছু অংশ লাল চিহ্ন করে দিয়ে হকারদের দখলমুক্ত করেছে। তবে এর বাইরে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, রিক্সা ইজিবাইক এমনভাবে দখল করে থাকে যে চওড়া রাস্তা সরু হয়ে যায়। লোকজন যে স্বস্তিতে পথ চলবে সে অবস্থাও নেই। ফুটপাথে তো নানা ধরনের বাজার বসেছে। প্রধান সড়কের ধারে যাদের দোকানপাট তারা সামনের অংশটুকু নিজেদের মনে করে পসরা সাজিয়ে বসে। হোটেলের সামনে ফুটপাথ দখল করে স্টোভ ও এলপিজি চুলা বসিয়ে পরোটা মোগলাই শিককাবার ভাজা হয়। সাতমাথা থেকে গোহাইল রোডের ডান ধারে পৌরসভার বহুতল মার্কেটের প্রায় সকল দোকানি তাদের ব্যবসার সামগ্রী মার্কেটের সামনের বারান্দা ও ফুটপাথ দখল করে সাজিয়ে রাখে। বারান্দায় বাইসাইকেল, সাইকেলের টায়ার রিং আনুষঙ্গিক জিনিস এমনভাবে রাখা হয় যা দোকানের অংশই মনে হবে। তার ওপর পথে রাস্তার ভেতরে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা দুই তিন সারিতে দাঁড়িয়ে পুরো রাস্তাই যান জনচলাচলে দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে। সাতমাথা থেকে স্টেশন রোডের দুই ধারের ফুটপাথ নানা ধরনের ফলের দোকানে ভরে গেছে। ফুটপাথের ওপরে রেক্সিন এঁটে দোকানের মতো করে দখল করা হয়েছে। এর সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকানিরা মূল সড়কের দখলের পর অপর প্রান্তে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা টেম্পো ও ইজিবাইক চওড়া সড়কের প্রায় অর্ধেকটা দখলে রেখে হাঁকডাক শুরু করে দেয়। অবস্থা এমনই যে এসব পথে লোকজন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না। সাতমাথা থেকে উত্তরে কবি নজরুল ইসলাম সড়কের দুই ধারের ফুটপাথকে আর জনজলাচলের রাস্তা বলা যাবে না। এই পথে হেঁটে চলতে যে কতটা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয় তা শহরের লোকজন জানে। মহিলারা এই পথে চলতে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে। নিউ মার্কেটের সামনে ভ্রাম্যমাণ দোকানি ও রিক্সার অবৈধ স্ট্যান্ড হওয়ায় পথ চলতে হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর বগুড়া শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া রেলপথের রেলগেট বন্ধ হলে কী যে অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি হয় তা ভুক্তভোগীরা হাড়ে হাড়ে টের পায়। নিউ মার্কেটের পিছনের দিকের সহজ রাস্তাটি ভাসমান দোকানিদের পসরা সাজাবার বড় জায়গা হয়েছে। নবাববাড়ি রোড দখল করে ফুচকা চটপটির দোকানি বসেছে। সার্কিট হাউসের সামনের রাস্তাটিও ভাসমান দোকানিদের দখলে চলে গেছে। বড়গোলা থোকে দত্তবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা টেম্পো ইজিবাইক দখলে রেখেছে। প্রশাসন ও পৌরসভার সামনেই বগুড়া শহরের ফুটপাথ এবং পৌর মার্কেটের বারান্দা দখল হওয়ার পরও তারা নীরব। জেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে উদ্যোগ নেয়। তারপর অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে যায়। এদিকে পৌরসভা এলাকায় যত রিক্সা অটোরিক্সা চলাচল করে তার দুই তৃতীয়াংশেরই লাইসেন্স নেই। অবাধে চলছে এসব অবৈধ যন্ত্রযান। ইজিবাইক (ব্যাটারিচালিত যান), মোটর লাগানো রিক্সার তো লাইসেন্স নেই। ফুটপাথের গা ঘেষে মূল সড়কের অর্ধেকটাই দখলে রাখে লাইসেন্সবিহীন এসব অবৈধ যান। এসব যানবাহনে ভ্রমণের সময় সহজেই নজরে আসে ট্রাফিক কনেস্টবল কিভাবে সরাসরি চাঁদা নিচ্ছে। কখনও সার্জেন্টের সামনে অবৈধ দেনাপাওনা মেটানোর কাজ হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না। বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) ও পৌরসভার একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের অদৃশ্য সহযোগিতার টুপাইস লেনদেনে এ ধরনের দখল চলছে, এমনটিই জানা যায় খোঁজখবর করে।
×