পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শোকজের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আগামী ১৯ মে নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন জনগণই ইসিকে শোকজ করবে। খবর বাসস’র।
নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে বৃহস্পতিবার মমতাকে শোকজ করে নির্বাচন কমিশন। আর তাতেই বেজায় চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের বিধি ভঙ্গ করে থাকলে বেশ করেছি, বলেছি! আবার বলব। হাজার, লাখ, কোটি বার বলব। যা ক্ষমতা থাকে, করো!’
কমিশনের সিদ্ধান্ত আর মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা হুঁশিয়ারির জেরে তৃতীয় দফা ভোটের আগে বহুগুণ উত্তাপ বেড়ে গেল। মমতার পাল্টা মন্তব্য শুনে বিরোধীরা আরও জোর গলায় দাবি করেছে, কমিশনকে এবার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। বিরোধীরা মনে করছে, সারদা, নারদ, উড়াল সেতু ধসসহ দুর্নীতির অভিযোগে বিপর্যস্ত মমতা নজর ঘোরাতেই কমিশনের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে নেমেছেন। ঠিক যেমন তিনি করেছিলেন গত লোকসভা নির্বাচনের আগে। তবে এবার বিরোধীদের অভিমত, অভিযোগ যাই হোক, একে তো এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে কমিশনের নোটিস দেয়া যথেষ্ট নজিরবিহীন। তারপর আবার মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে হুমকি দিয়েছেন, তাতে পরবর্তী ভোট-পর্বে শাসক দলের বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে বলে বিরোধী নেতাদের আশঙ্কা।
কমিশনের ফুল বেঞ্চ নিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জায়দি কলকাতাতেই ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আসানসোলের সভায় মমতা ব্যানার্জী আসানসোলকে আলাদা জেলা করা হবে বলেছিলেন। এর সঙ্গে আরও কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের শামিল।’
তৃণমূল অবশ্য এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছে। বলা হয়েছে, আসানসোল, কালিম্পং, বসিরহাট, সুন্দরবন ও ঝাড়গ্রামকে পৃথক জেলা করার সিদ্ধান্ত গত বছর ডিসেম্বরেই রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছিল। তাই এটা নতুন ঘোষণা নয় এবং তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে নোটিসও যুক্তিহীন।
মমতার বিরুদ্ধে অনেক বেশি গুরুতর অভিযোগ কমিশনে দাখিল করেছিল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মমতা হুমকি দিয়েছেন, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেবেন। ফলে নারায়ণগড়ে জিততে তিনি যে কোন কিছুই করতে পারেন বলে কমিশনে অভিযোগ করেন বিরোধীরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে কমিশন নোটিস দিয়েছে নতুন জেলা ঘোষণার মতো সাধারণ বিষয়ে।