জার্মানিতে গত বছর প্রায় ছয় হাজার শিশু ও নাবালক শরণার্থী নিখোঁজ হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এ কথা জানিয়েছে। এর ফলে উদ্বেগ বাড়ছে যে, ইউরোপমুখী অভিবাসী স্রোতের সঙ্গে আসা অরক্ষিত হাজার হাজার শিশু মানব পাচারকারী ও অপরাধীদের শিকারে পরিণত হচ্ছে। খবর গার্ডিয়ানের।
নিখোঁজ এই শিশুদের প্রকৃত সংখ্যা স্পষ্ট নয়। অপূর্ণাঙ্গ ও গণরেজিস্ট্রেশনের কারণে ইউরোপের উপকূলে পৌঁছানো শিশুর সংখ্যার পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়নি এবং তাদের পরবর্তী রুটেও নিবিড় পর্যবেক্ষণ হয়নি। নিখোঁজদের মধ্যে অনেকেই হয়ত রেজিস্ট্রেশনই করেনি এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে, কর্মকর্তারা তাদের আটক করতে পারেন। অন্যরা হয়ত তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয়েছে এবং এ কথা স্থানীয় কর্মকর্তাদের জানায়নি। কিন্তু বাকিরা হয়ত মানব পাচারকারীদের হাতে চলেন গেছে এবং আরও হাজার হাজার শিশুর অপরাধীদের হাতে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুমান যে, এই উপমহাদেশে পৌঁছানোর পর অন্তত ১০ হাজার শিশু নিখোঁজ হয়েছে এবং খুব সম্ভবত এ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এদিকে জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে যে, প্রকৃত সংখ্যা হতে তাদের হিসাব খুব কম হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোহানেস ডিমরথ স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো নিশ্চিত করে বলেছেন, সম্প্রতি জার্মান সরকার পার্লামেন্টকে পাঁচ হাজার ৮৩৫ জন শিশু ও কিশোর শরণার্থীর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই পরিস্থিতিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহে ঘাটতি থাকায় এই ঘটনাগুলো অনুসরণ করা কঠিন হবে। নিখোঁজ হওয়া শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই এসেছে সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া, মরোক্কো ও আলজিরিয়া থেকে। এই শিশুদের মধ্যে ৫৫০ জনের বয়স ১৪ বছরের নিচে। ইউনেস্কোর ইউরোপীয় এবং শরণার্থী ও অভিবাসী বিষয়ক মুখপাত্র সারাহ ক্রো জানিয়েছেন, গত বছর ইইউতে আশ্রয় চাওয়া শিশুদের মধ্যে ৯৫ হাজার শিশুর সঙ্গে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক লোক ছিল না অথবা তারা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদের বেশির ভাগই রয়েছে জার্মাানি ও সুইডেনে।