ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছরেও রহস্যের জট খোলেনি, দুই ছাত্রকে খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৪ এপ্রিল ২০১৬

এক বছরেও রহস্যের জট খোলেনি, দুই ছাত্রকে খুঁজছে পুলিশ

শংকর কুমার দে ॥ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গ্রেফতারের জন্য খুঁজছে দুই ছাত্রকে। গত বছর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনার মামলার আসামি এই দুই ছাত্র। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি টিভি) ভিডিও ফুটেজে যে আটজনের ছবি দেখা গেছে তার মধ্যে রয়েছে দুই ছাত্রের ছবি। দুই ছাত্রের ছবি শনাক্ত করা গেলেও গত এক বছরে অপর ছয় জনের ছবির ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যায়নি। এক বছর পর আবারও পহেলা বৈশাখ ফিরে আসলেও গত এক বছরে বর্ষবরণের উৎসবে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় কোন আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় যে আটজনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ঘোষিত এক লাখ টাকার পুরস্কারও কারও ভাগ্যে জোটেনি। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পিবিআই সূত্র জানান, গত বছর পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় গত মে মাসে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে আটজনের ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। ছবি দেখেও আটজনের কাউকে শনাক্ত করতে না পেরে মামলাটির তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু হঠাৎ করেই গত জানুয়ারি মাসে রাজধানীর চকবাজার থানাধীন দেওয়ান এলাকার ৭৭ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করে কামাল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে। গ্রেফতারের পর দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কামাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা জানালেও নারী লাঞ্ছনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। তবে ভিডিও ফুটেজে ছবি অনুযায়ী পুলিশের প্রকাশ করা অন্য সাতজনের ছবিও চেনেন না বলে দাবি করেছেন কামাল। এরপর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় কামালকে গ্রেফতারের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করতে আদালতে আবেদন করা হয়। নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত যে আটজনের ছবি পুলিশ প্রকাশ করে, কামাল তাদের একজন বলে ডিবি দাবি করেছিল। কিন্তু কামাল স্বীকারোক্তি না দেয়ায় এ পর্যন্ত কোন নিপীড়ককে গ্রেফতার করা সম্ভবপর হয়নি। প্রথমে বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়ের করে শাহবাগ থানায়। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবিকে। ডিবিও গত এক বছরে মামলার তদন্ত করে নারী লাঞ্ছনার মামলার রহস্যের জট খুলতে না পারায় আবার মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর আদালত পিবিআইকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পিবিআই তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন উর্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে বুধবার আলাপ হলে বলেন, গত বছর পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণে উৎসবের নারী লাঞ্ছনার ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছে। গত বছর পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় সিসি টিভিতে যে আটজনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল তার মধ্যে কামালের কোন ছবি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে না। সেদিন ঘটনাস্থলে কামাল থাকলেও নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত নন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তিনি।
×