ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফিফা সভাপতির অস্বীকার

পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে ইনফান্টিনো!

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৬

পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে ইনফান্টিনো!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে এবার বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনোর নামও উঠে এলো! ফাঁস হওয়া খবরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে এর আদৌ কোন সত্যতা আছে কি না তা নিয়ে চলছে নানান বিতর্ক। এতে সভাপতি ইনফান্টিনো নিজেও বিস্মিত। সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা এমন খবরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। গত সোমবার মোসাক ফনসেকার নামে পানামার একটি আইনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ফাঁস হওয়া ১১ মিলিয়ন গোপন নথি বিশ্বজুড়েই ব্যাপক আলোড়ন তুলে। যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাসহ ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়। বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি ও ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধেও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ তোলা হয়। তবে নতুন খবর হলো এবার এই তালিকায় উঠে এলো ফিফা সভাপতির নাম। ফাঁস হওয়া এসব নথিতে বলা হচ্ছে, ২০০৬ সালে উয়েফার পরিচালক থাকাকালে ঘুষের বিনিময়ে অনৈতিকভাবে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেছিলেন ইনফান্টিনো। দুই ব্যবসায়ী হুগো ও মারিয়ানো জিনকিসকে না কি প্রায় তিনগুণ দামে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের টিভি স্বত্ব দিয়েছিলেন ফিফার এই বর্তমান সভাপতি। তবে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে উয়েফা। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি, উন্মুক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার মাধ্যমেই সর্বোচ্চ নিলাম ডাকে টিভি স্বত্ব বিক্রি করা হয়েছিল। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ফিফার একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ফিফার গভর্নিং বডির নৈতিকতা কমিটি দ্বারা এ চুক্তিটির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। এসব কেলেঙ্কারিতে নিজের নাম উঠে আসায় অস্বস্তিতে ভুগছেন বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান। নিজের সম্মানহানির ভয়েও আছেন তিনি। এক বিবৃতিতে ইনফান্টিনো তো বলেই দিয়েছেন, ‘আমি আতঙ্কিত এবং মিডিয়ার মাধ্যমে আমার সততা নিয়ে যে ধরনের সন্দেহ প্রকাশ পাচ্ছে তা আমি গ্রহণ করব না। বিশেষ করে, উয়েফা তো ইতোমধ্যেই এ চুক্তিটির বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে।’ শুধু তাই নয়, ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা সংগঠক হিসেবে ইনফান্টিনোর ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। এ বিষয়ে তারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, জিয়ান্নি ইনফান্টিনো দীর্ঘদিন উয়েফার সদস্য ছিলেন। যেখানে নিজেকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি সবসময়ই সততা এবং পরিপূর্ণ পেশাদার মানসিকতা নিয়ে কাজ করেছেন। তবে জানিয়ে রাখা ভাল যে, পানামার ‘ল’ ফার্মের ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে শুরুতেই পাওয়া গেছে ফুটবলার লিওনেল মেসির নাম। মেসি ছাড়াও ফাঁস হওয়া দলিলে নাম রয়েছে ফরাসী কিংবদন্তি খেলোয়াড় ও দুর্নীতির দায়ে উয়েফা সভাপতির পদ হারানো মিশেল প্লাতিনি। নথিতে দেখা যায়, মেসি ও তার বাবা হোর্হে হোরাসি ২০১২ সালে মোসাক ফনসেকায় নিবন্ধিত মেগাস্টার এন্টারপ্রাইজ নামে একটি কোম্পানির চূড়ান্ত সুবিধাভোগী মালিক। দেশের বাইরে কোম্পানি খুলে তা পরিচালনা বেআইনী না হলেও স্বচ্ছতার অভাব থাকায় তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আর মিশেল প্লাতিনি ২০০৭ সালে পানামাতে একটি কোম্পানি গঠন করেন, ওই বছরই উয়েফার সভাপতি হয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকা ওই প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র মালিকানা প্লাতিনির।
×