ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ-বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ এপ্রিল ২০১৬

হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ-বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ফার্নান্ডো টোরেস। সেই টোরেসের কারণেই শেষ পর্যন্ত বার্সিলোনার কাছে ২-১ গোলে হারতে হয় এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে। এটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে দু’দলের প্রথম লেগের গল্প। ন্যুক্যাম্পে ওই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে কাতালানরা। তবে ফিরতি লেগে অভিন্ন স্বপ্ন বুনছে এ্যাটলেটিকোও। আজ রাতে নিজেদের মাঠ ভিসেন্টে ক্যালডেরনে শেষ আটের দ্বিতীয় লেগে লুইস এনরিকের শিষ্যদের বিপক্ষে খেলবে দিয়াগো সিমিওনের দল। ম্যাচটিতে ১-০ গোলের ব্যবধানে জিতলেও সেমিতে পৌঁছে যাবে এ্যাটলেটিকো। তবে প্রথম লেগে লালকার্ড পাওয়ায় হাইভোল্টেজ এই ম্যাচটিতে খেলতে পারছেন না স্বাগতিকদের অন্যতম প্রধান তারকা টোরেস। ঘরের মাঠ মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় শেষ আটের প্রথম লেগে বেনফিকাকে হারাতে রীতিমতো ঘাম ছুটে যায় বেয়ার্ন মিউনিখের। আর্টুরো ভিদালের একমাত্র গোলে জয় পায় বাভারিয়ানরা। আজ রাতে দ্বিতীয় লেগে লিসবনে স্বাগতিকদের আতিথ্য নিচ্ছে পেপ গার্ডিওলার দল। কঠিন হলেও সেরা চারে খেলার স্বপ্নই বুনছে বেনফিকা। আর তাই এই ম্যাচটিও উত্তেজনা ছড়াতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। ৫ এপ্রিল ন্যুক্যাম্পে চাখ ধাঁধানো গোল করে ম্যাচের ২৫ মিনিটে এ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে নিয়েছিলেন টোরেস। ওই গোলেই জয়ের স্বপ্ন বুনতে থাকে দিয়াগো সিমিওনের দল। কিন্তু এই টোরেসই পরের ১০ মিনিটে নিজে ডোবেন, দলকেও ডোবান। ২৯ ও ৩৫ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার। যার খেসারত পরবর্তীতে দিয়ে হয় এ্যাটলেটিকোকে দুই গোল হজম করে। ম্যাচ শেষে সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন, টোরেসের লালকার্ডই এ্যাটলেটিকোর হারের প্রধান কারণ। যে কারণে প্রথমে গোল করলেও শেষ পর্যন্ত হিরো থেকে জিরো বনে যান ৩২ বছর বয়সী টোরেস। ২০১৩-১৪ মৌসুমের মতো এবারও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এ্যাটলেটিকোর কাছে হেরে বিদায় নেয়ার শঙ্কায় পড়েছিল বার্সা। কিন্তু টোরেসের অহেতুক বোকামির কারণে প্রথম লেগে বেঁচে গেছে কাতালানরা। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে দারুণ এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছেন না ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান থেকে এ্যাটলেটিকোয় ধারে খেলতে আসা টোরেস। বার্সিলোনাকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য অন্যায্য সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই দুঃসহ স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না টোরেস। যার প্রমাণ আরও একবার রেখেছেন। আজ রাতে সতীর্থরা যখন মেসি, নেইমার, সুয়ারেজদের মোকাবেলা করবে তখন দর্শক হয়ে থাকতে হবে তাকে। যন্ত্রণায় পুড়তে থাকা টোরেস তাই আবারও বলেছেন, ওই লালকার্ডই জিতিয়েছিল বার্সাকে। তিনি দাবি করেন, লালকার্ড না দেখলে আগের ম্যাচেই অর্ধেক কাজ সেরে রাখতে পারতেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১১ জন নিয়ে খেললে আমরা হারতাম না। আমি নিশ্চিত দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটা আসলে কার্ড ছিল না। হতাশা থেকেই ওটা হয়ে গেছে। আমি তো আর ইচ্ছা করে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিতে চাইনি। এটা একটা হোঁচটের মতো ছিল। অবশ্য এজন্য নিজেরও দায়ও অস্বীকার করছেন না স্প্যানিশ তারকা। বলেন, আমি শুধু বলতে চাই, ওই কাজটা আমি ইচ্ছা করলেই এড়িয়ে যেতে পারতাম। আমি থাকলে ২-০ গোলেও এগিয়ে যেতে পারতাম, দলও সে জন্য ভুগেছে। ওই লালকার্ড দেখার পর থেকে তিনি মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে আছেন। এর পর থেকে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননি। টোরেস বলেন, লাল কার্ডটা ভুলতে আমার দুই দিন লেগেছে। আমি শুধু একা থাকতে চেয়েছিলাম। ওই লাল কার্ডের পরেই মনে হচ্ছিল, এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে লাল কার্ড। তবে কষ্টটা ভোলার সুযোগ আছে এখনও। আর সেটি করতে পারেন তার সতীর্থরাই। আজ রাতে যাদি বার্সাকে হারিয়ে এ্যাটলেটিকো সেমিফাইনাল মঞ্চে উঠে যায় তাহলে নিশ্চিত করেই সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন টোরেস। দেখা যাক কি হয়!
×