ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবদুল মালেক

রিপাবলিকান পার্টি কি কনটেস্টেড কনভেনশনের দিকেই এগোচ্ছে ?

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৩ এপ্রিল ২০১৬

রিপাবলিকান পার্টি কি কনটেস্টেড কনভেনশনের দিকেই এগোচ্ছে ?

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বসন্ত ঋতুর আকাশে আমেরিকার ২০১৬ সালের প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা যেন উড়ছে পায়রার উজ্জ্ব¡ল ডানায়। দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় এপ্রিলের ১৯ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য এর প্রাইমারিটি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের প্রার্থীদের জন্য হতে যাচ্ছে মস্ত এক টার্নিং পয়েন্ট। এম্পায়ার স্টেট হিসেবে খ্যাত এই রাজ্যে ২৪৭ ডেলিগেটস থাকার জন্য ভোটারদের মন জয় করা শুধু নয়, নিউইয়র্ক ভ্যালুজ রক্ষা করার কাজটিও তারা করছেন জোরেশোরে। উভয় দলের টিকে থাকা প্রার্থীরা হাসি মুখে এখন ঘুরছেন সাবওয়েতে, ডাইনারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, নাট্য মঞ্চে এমনকি সমদ্র তীর পর্যন্ত। মজার ব্যাপার, আমেরিকার চলতি বছরের নির্বাচনে দু’ জন ওজস্বী প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোম স্টেটই হলো নিউইয়র্ক এবং হিলারি ক্লিন্টনও এই রাজ্যকে গ্রহণ করেছেন য়্যাডাপটেড হোম স্টেট হিসেবে। ১৬ বছর আগে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেবার পর হিলারি নিউইয়র্কের আপ স্টেটে ঘরবাড়ি ও নগরে অফিস বানিয়ে নির্বাচন করে সিনেটর হয়েছিলেন। ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স নগর নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে জন্মেছিলেন। ব্রুকলিন সরকারী স্কুলে শুরু হয় তার শিক্ষা জীবন এবং তারপর ওখানকার কলেজ। পরবর্তীতে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে আবার সেখানে ফিরে এসে ভর্তি হন নিউ স্কুলে। রিপাবলিকান বিলিয়নিয়ার বহুল আলোচিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্ক রিয়াল স্টেট ব্যবসায়ী। কিন্তু নিউইয়র্ক ধনপতির তর তর করে বয়ে যাওয়া ডিঙ্গিটি যে নিজ রাজ্যটিতে ভিড়বার আগে অভাবিতভাবে আটকে পড়ল উইসকনসিন রাজ্যের চড়ায় ! ডেলিগেটস সংখ্যায় পিছেয়ে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেটর টেড ক্রুজের কাছে বিরাট ব্যবধানে পরাজিত হবার পর তার বিজয় তরীর পালটিকেও সহসা যেন ছেঁড়াখোঁড়া করে দিল পরবর্তী কলোরাডো রাজ্যের হারটি। ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন রাজ্যের অধিকাংশ প্রাইমারি ও ককাসে বিপুল ভোটাধিক্যে বিজয়ী হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পই তো জিওপি ফ্রন্ট রানার হিসেবে পরিচিত। উইসকনসিন ডেমোক্র্যাট ফ্রন্ট রানার সেক্রেটারি হিলারি ক্লিন্টনের অবস্থাও অনুরূপ। ওজনদার এই প্রার্থীও এক রকম নিশ্চিত ছিলেন উইসকনসিন জিততে পারলে তার প্রতিদ্বন্দ্বীর মনোনয়ন দৌড়ে পড়বে যতিচিহ্ন। কিন্তু উল্টো এক বিশাল ব্যবধানে ৭৪ বছরের দৃঢ় প্রত্যয়ী সিনেটর বার্নির জয় যেন পাল্টে দিল সেই হিসেবের চিত্রটিও। অবশ্য বার্নির পক্ষে সেখানে জনজোয়ার সৃষ্টি হলে হিলারি নির্বাচনের পূর্বেই উইসকনসিন ত্যাগ করে নিজ রাজ্যটিতে ফিরে এসে শুরু করে দেন ব্যাপক প্রচারাভিযান। নিউইয়র্ক গবর্নর, মেয়র, সিনেটরসহ গুরুত্বপূর্ণ দলীয় নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে তার প্রতি। তাদের নিয়ে হিলারি সভা করছেন স্থানে স্থানে। বিভিন্ন মানুষজনের জমায়েতে প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন তিনি। এমন কি একদিন তাকে দেখা গেল আন্ডার গ্রাউন্ড ট্রেনের জনতার মাঝে। বরাবরই হিলারির সঙ্গে অটুট বন্ধন নিউইয়র্কের কালো মানুষদের। হিস্পানিকসহ বিভিন্ন সমাজের মানুষ সর্বোপরি মহিলাদের মধ্যে রয়েছে তার প্রচুর সমর্থক। লোকে বলছে, আপ স্টেটের বাসিন্দা হওয়ার প্লাস পয়েন্ট হিসেবে সিটির বাইরে ঐদিকের কেন্দ্রে কেন্দ্রে তিনি পাবেন বিপুল ভোট। কিন্তু উইসকনসিন রাজ্যে ভোটের সময়টিতে নিউইয়র্ক সিটিতে পা রেখে এক অসাধ্য সাধন করেছিলেন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। সত্যি বলতে কি দু’যুগের বেশি সময় এই শহরে বসবাস করে এমন বিস্ময় সৃষ্টিকারী ঘটনা আমার দেখা হয়নি। প্রাক-নির্বাচনী সভাটভা দেখতে হয়েছে টিভিতেই। আর প্রার্থী নির্বাচনী ভোট ব্যাপারটি তো সাধারণ মানুষের কাছে ছিল আদার ব্যাপারীর কাছে জাহাজের খোঁজের মতো। কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে দেখতাম সীমিত সংখ্যক অতি উৎসাহী মুষ্টিমেয় মানুষদের। কিন্তু যুদ্ধ বিরোধী এক সিনেটর যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রাবস্থা থেকে করে চলেছেন লড়াই তার ডাকে এক সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে সমাবেশ ঘটল প্রায় ২০ হাজার জনতার। স্যান্ডার্স যেন হ্যামিলনের বংশীবাদক আর তার জাদুকরী সুরে সম্মোহিত তরুণ দলের সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ সেদিন ছুটে গিয়েছিল সেখানে। রিপাবলিকান পার্টি আমেরিকার ইতিহাসে প্রাচীনতম বলে একে জিওপি অর্থাৎ গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি বলা হয়। কিন্তু এ বছর দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের কর্মকা- যেন হয়ে উঠেছে একাধারে কৌতুককর অন্যদিকে বিরক্তিজনক। ইতোপূর্বে বহু অঘটন ঘটেছে, বহু অপ্রাসঙ্গিক কথার স্রোত বয়ে গেছে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখ দিয়ে। ট্রাম্পের সভাস্থল থেকে বিক্ষোভকারীদের মারপিট করে বের করে দেয়া হলো। সেদিনও বক্তব্য প্রত্যাশী এক মহিলা সাংবাদিকের হাতকে মুচড়েই দিলেন তার ক্যাম্পেইন ম্যানেজার। তবে বলতে দ্বিধা নেই এসব কারণেই বিপুলসংখ্যক ভোটার ধনকুবেরের সমর্থক বনে দিনে দিনে তাকে যেন তুলছিল আকাশে। এবার যে সমস্ত মার কাটারি ভোটার ট্রাম্পের কণ্ঠে সুর মিলিয়েছেন ভোটের বাজারে ইতোপূর্বে তাদের এমন উদ্দীপ্ত হতে দেখা যায়নি- এটাই মিডিয়ার বিভিন্ন সমীক্ষায় বলা হচ্ছে। অভূতপূর্ব এই কা-কারখানায় অনেকেই বলছে, ‘দিস ইজ নট আমেরিকা।’ প্রেসিডেন্ট ওবামা পর্যন্ত এমন কথোপকথনের সমালোচনা করেছেন। শুধু ট্রাম্প নন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রুজও পাল্লা দিয়ে মুখ খারাপ করে গেছেন। উইসকনসিন ভোটের আগে দলের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলল সেটা যেন একে অপরের স্ত্রীর বস্ত্র হরণ পালা। প্রথম দৃশ্যে টেনে আনা হয়েছিল ট্রাম্পের সুন্দরী ঘরণীকে। বিবাহপূর্ব সময়ের সুপার মডেল এবং অবশেষে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যিনি ট্রাম্পের বর্তমান। সেই মেলোনিয়া ট্রাম্পের পুরনো নগ্ন ছবি প্রকাশ করা হলো সোস্যাল মিডিয়ায় এবং অভিযোগের তীর উত্থিত হলো ক্রুজের ক্যাম্পের দিকে। জবাবে হুঙ্কার দিয়ে ক্রুজের স্ত্রী হেইডির পরিধেয় নিয়ে টান মারলেন মেলোনিয়ার পতি মহোদয় এবং প্রায় আবরণহীন সে ছবিটিও ছড়িয়ে পড়ল মিডিয়া মুল্লুকে। মার্কিন সংস্কৃতির যত্রতত্র ছড়ানো এমন ন্যুড ছবিতে যদিও নতুনত্ব নেই তথাপি এবারের পাত্রীরা যে হলেন গিয়ে হবু ফার্স্টলেডি! কিন্তু সর্বশেষ যে ব্লান্ডারটি ট্রাম্প করলেন সেটি এবর্সন প্রসঙ্গে। তিনি ঘোষণা দিলেন, কোন মহিলা অবৈধ এবর্সন করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে কিন্তু হোতা পুরুষটিকে নয়। এমনিতেই তার নানাবিধ অশালীন মন্তব্যে যার পর নাই ক্ষেপে আছে নারীকুল। প্রতি চারজনের তিনজন তাকে পছন্দ করছিল না। শতকরা ৭৫ ভাগ মহিলা এমন অপমানজনক মন্তব্যকে সমর্থন করল না। ফলে মহিলাদের না সূচক মনোভাবের পরিণতিতে নিম্নগামী হতে থাকল জিওপি ফ্রন্ট রানারের পপুলারিটি ব্যারোমিটার। তবে বুঝে শুনে এক সংশোধনী ব্যাখ্যায় পরে বলা হলো নারীটিকে নয়, তার ডাক্তারকেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েই গেছে। খেসারত হিসেবে শীর্ষে থাকা প্রার্থীকে উইসকনসিনে বরণ করতে হলো বিরাট পরাজয়। এই প্রসঙ্গে বলা ভাল, আমেরিকার মেজরিটি ভোটার হচ্ছেন মহিলা এবং রিপাবলিকান দলের নারী ভোটার হচ্ছেন ৪৫%। যাদের সমর্থন ব্যতীত জয়লাভ সম্ভব নয়। তবে পোলের হিসেবে নিজ রাজ্য নিউইয়র্কে বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। বিতর্কিত নানা মন্তব্যের কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি রিপাবলিকান পার্টি এস্টাব্লিশমেন্টের অনেকের ক্ষুব্ধতা গোপনও নয়। হিস্পানিকদের গালিগালাজ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে মুসলিমদের বাধা প্রসঙ্গে তারা বলেছে, রিপাবলিকান দল বিষয়গুলোতে সহমত পোষণ করে না। এছাড়া ইরাক যুদ্ধে যাওয়া প্রেসিডেন্ট বুশের ভুল ছিল- ট্রাম্পের এই বক্তব্যে নীতিনির্ধারকরা ক্ষুব্ধ। ইতোপূর্বে কোন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী নিজ দলের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেনি। অন্যদিকে কট্টর রক্ষণশীল অপর প্রার্থী ক্রুজকেও রিপাবলিকান নেতৃত্ব পছন্দ করতে পারছেন না। ভ্যালুজ নিয়ে ব্যঙ্গ করার পরিণতিতে যথেষ্ট নাকানি চুবানি খেতে হলো ক্রুজকে এম্পায়ার স্টেটে। অবশ্য এই হৈ হট্টগোলের বাজারে ভদ্রতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়েও দুই শক্তিশালী স্রোতের মাঝে কোন রকমে টিকে রেসে আছেন ওহাইও গবর্নর কেসিক। প্রশ্ন উঠছে রিপাবলিকান দল কি মনোনয়নের জন্য অবশেষে কনটেস্টেড কনভেনশনের দিকেই যাচ্ছে? দলের মনোনয়নের জন্য কাক্সিক্ষত ডেলিগেটস ম্যাজিক সংখ্যা হচ্ছে ১২৩৭ । হিসেবে দেখা যায় এ পর্যন্ত ট্রাম্পের ঝুলিতে রয়েছে ৭৪৩, ক্রুজের ৫৪৫ এবং কেসিকের ১৪৩ ডেলিগেটস। আগামী জুলাই মাসে ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য দলীয় কনভেনশনের আগে এই কাক্সিক্ষত নম্বর যদি কেউ না পায় তবে ঘটনা কোন দিকে মোড় নেবে সেই বিষয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। এমত পরিস্থিতিতে ‘কনটেস্টেড কনভেনশন’ ছাড়া দলের কোন উপায় হয়ত থাকবে না। রিপাবলিকান দলের রুলস কমিটি সে সময় বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রার্থী নির্বাচন কিভাবে হবে। এ কথাও বলাবলি শুরু হয়েছে রেসে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাদ দিয়ে সেক্ষেত্রে তৃতীয় কাউকে নমিনেশন দেয়াও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের স্পীকার পল রায়ানের নাম বলছেন কেউ কেউ। চার বছর আগে মিট রমনীর রানিংমেট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন রায়ান। যদিও অফিস থেকে বলা হয়েছে, স্পীকার ওই নমিনেশন গ্রহণ করবেন না। প্রক্রিয়া পর্ব আঁচ করতে পেরে অনেক আগে থেকে ট্রাম্প সাহেব হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন। তাকে পার্টির মনোনয়ন না দেয়া হলে রক্তারক্তি হয়ে যাবে ক্লিভল্যান্ডে। সঙ্গে সঙ্গে ‘কনটেস্টেড কনভেনশন’ হলে কি কৌশলে তার নমিনেশন লাভ সম্ভব এজন্যও তিনি অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের হায়ারও করেছেন। এবারে দেখা যাক ডেমোক্র্যাট দলে কে কত ডেলিগেটস পেলেন। হিলারি ক্লিন্টন যখন তার প্রার্থিতা ঘোষণা করেন তখন ডেমোক্র্যাট দলের ৬৯% সমর্থন ছিল তার পক্ষে। আর সিনেটর বার্নির পক্ষে মাত্র ৩% ভাগ। আর তাতে ভাবা হয়েছিল হিলারি পালে হওয়া লাগিয়ে হেসে খেলে নমিনেশন পাবেন। কিন্তু যতই দিন এগোচ্ছে ততই বদলে যাচ্ছে দৃশপট। সর্বশেষ ১০ এপ্রিলের ওয়াইওমিং রাজ্যের ককাসেও জিতলেন বার্নি। টানা এই অষ্টম জয়ের ফলে তার ডেলিগেটস সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৬৮। অবশ্য হিলারি ১২৮৮ নিয়ে বার্নির চেয়ে ২২০ ডেলিগেটস এগিয়ে। এর বাইরেও রয়েছে ডেমোক্র্যাট দলের ৭১২ সুপার ডেলিগেটস- হিলারির প্রতি যাদের রয়েছে ব্যাপক সমর্থন। প্রায় সাড়ে ছয় শ’ সুপার ডেলিগেটস হিলারির পক্ষে। ফলে তার ঝুলিতে এখন ১,৭৫৬। বাকি মাত্র ৭০ সুপার ডেলিগেটস বার্নিকে সমর্থন করছে। তিনি পেয়েছেন ১১৩৮। ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়নের জন্য কাক্সিক্ষত ডেলিগেটস নম্বর ২৩৮৩। এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান শিবিরের বিপরীতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বার্নি ও হিলারির বাক সংযম শ্রদ্ধা কুড়িয়েছে সর্ব মহলে। হয়ত তারা পরস্পরের নীতির প্রতি আঙ্গুল উঁচিয়েছেন কখনও কখনও। কিন্তু উইসকনসিনে পরাজয়ের পর হিলারি নিউইয়র্কে তার প্রচারণার ধারা বদলে প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে এবার সানাচ্ছেন আক্রমণাত্মক বক্তব্য। সিনেটর বার্নি ডেমোক্র্যাট কিনা কিংবা দলের প্রতি কতটুকু অনুগত সেইসব বিষয় নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। এমনকি বার্নির প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও তার ক্যাম্প থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বার্নি স্যান্ডার্সও এক্ষেত্রে ছেড়ে কথা বলার পাত্র নন। তিনিও বললেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নেই হিলারির। মজার কথা এটুকুতেই কোন কোন মহলে সমালোচিত হলেন বার্নি। বিখ্যাত টক শো ভিউ-এর অনুষ্ঠানে মহিলাকুল তো তাকে ছেঁকে ধরলেন- ‘হিলারি ছিলেন সেক্রেটারি অব স্টেট কিন্তু আপনি বললেন তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নেই?’ হাসতে হাসতে বার্নির উত্তর ছিল -‘অবভিয়াসলি সি ডাজ।’ অবশ্যই তার যোগ্যতা আছে। হিলারির পূর্বের অভিজ্ঞতার কথা ভেবেই আমি মন্তব্যটা করেছি। ইরাক যুদ্ধ এবং ডিফেন্সে ম্যারেজ এক্টের পক্ষে তার ভোটগুলো ছিল মারাত্মক ভুল। রাজনৈতিক জীবনে তিনি এ রকম অনেক ভুল করেছেন এবং এ নিয়ে তাকে পস্তাতেও হয়েছে। কিন্তু আমি যে সমস্ত ভোট দিয়েছি সেগুলো সবসময় ছিল সঠিক এবং কখনও পপুলার না হলেও ভোট দিতে দ্বিধা করিনি। তারপরেও পরিশেষে বার্নি সবিনয়ে স্বীকার গেলেন হিলারির শিবির নিউইয়র্কে এসে যখন তার বিরুদ্ধে টাফ মন্তব্য করে চলেছে সেই প্রেক্ষিতে তাকে মুখ খুলতে হয়েছে। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী [email protected]
×