ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়োমেট্রিক পদ্ধতি পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ পুনর্নিবন্ধিত

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ১১ এপ্রিল ২০১৬

বায়োমেট্রিক পদ্ধতি পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ পুনর্নিবন্ধিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে এ পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ সিম পুনর্নিবন্ধিত হয়েছে। বর্তমানে যে হারে সিম নিবন্ধন হচ্ছে তাতে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাকি সিম নিবন্ধন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। রবিবার মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনর্নিবন্ধনের জন্য সচেতনতা বাড়াতে দেশব্যাপী একদিনের রোড শো’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ কথা বলেন। রবিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে থেকে রোড শোটি শুরু হয়ে হাইকোর্ট-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। রোড শো শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রোড শো উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ভুয়া পরিচয় ও নিবন্ধন না করে সিম কিনে অপরাধীদের ব্যবহার ঠেকাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ কার্যক্রম সফল করতে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের এ্যাকশন প্ল্যান হাতে নিয়েছে। আমি আশা করি, বায়োমেট্রিক সিম রি-ভেরিফিকেশনের সচেতনতা বাড়াতে দেশব্যাপী বাংলালিংকের রোড শো রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের কারিগরি সক্ষমতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেই। গ্রাহকের তথ্য খুচরা বিক্রেতাদের ডিভাইসে দেয়ার পর তা অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভারে চলে যাচ্ছে। এখানে তাই ভয়ের কিছু নেই। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শেষ করব। এর মধ্যে যেগুলোর নিবন্ধন হবে না সেগুলোর গ্রাহককে নিবন্ধনে বাধ্য করতে কয়েক ঘণ্টা করে সিম বন্ধ ও এসএমএস দিয়ে সতর্ক করা হবে। এর পরও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন না করলে ওই সব সিম বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রতিমন্ত্রী। অবশ্য শেষ সময়ে এসে নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে বলে জানান। তিনি বলেন, পুনর্নিবন্ধিত সিমের এই সংখ্যা বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের হাতে থাকা ১৩ কোটি ১০ লাখ সিমের ৪২ শতাংশের মতো। অবশ্য মোট সিমের মধ্যে আট কোটি বর্তমানে সক্রিয় বলে অপারেটররা জানিয়েছে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার পর আঙ্গুলের ছাপ না দিয়ে নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি চলছে পুরনো সিমের পুনর্নিবন্ধন। সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী সিমের অপব্যবহার ঠেকাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনর্নিবন্ধনে জোর দেন। সিম অপব্যবহারের শিকার অনেকে হয়েছে। একটি গোষ্ঠী বা পক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে এ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার পক্ষে সবাই। বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হচ্ছে- এ ধারণা ভুল। আমরা গ্রাহককে নিরাপত্তা দিতে চাই, আপনারা এ অপপ্রচারে কান দেবেন না। সংবাদ সম্মেলনে বাংলালিংকের সিসিও শিহাব আহমাদ বলেন, বায়োমেট্রিক সিম রি-ভেরিফিকেশন বাংলাদেশের টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ডিসেম্বর থেকে বাংলালিংক দেশব্যাপী সিম রি-ভেরিফিকেশনের কাজ দ্রুততার সঙ্গে করে যাচ্ছে। দেশের সাতটি বিভাগসহ সকল জেলায় বাংলালিংকের রোড শো বায়োমেট্রিক সিম রি-ভেরিফিকেশনের কাজকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতীয় ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রাহক তথ্য সংগ্রহ করে সিম নিবন্ধনে আঙ্গুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতির উদ্যোগ নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় বাংলালিংকের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগের শুরু থেকেই বাংলালিংকের কর্মী এবং গ্রাহকরা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রি-ভেরিফিকেশনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বায়োমেট্রিক রি-ভেরিফিকেশন চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলালিংকের বায়োমেট্রিক রি-ভেরিফিকেশন এক কোটি ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে, যা বাংলালিংকের গ্রাহক সংখ্যার শতকরা ৪৯ ভাগ। এদিকে বাংলালিংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একযোগে এই রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন পয়েন্ট থেকে রোড শোটি শুরু হয়ে টাউন হলে মোড়ে এসে শেষ হয়। এতে বাংলালিংক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট শহরের মেহেন্দিবাগ থেকে রোড শোটি শুরু হয়ে আম্বারখানা পয়েন্টে এসে শেষ হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার জামাল উদ্দিন।
×