যান্ত্রিক এ কর্মজীবনে প্রত্যেক মানুষ চায় কিছুটা সময় অন্যরকমভাবে কাটাতে। কিন্তু সময় ও সুযোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে উঠে না। আমাদের শরীর ও মন চায় একটু নির্মল আনন্দ, নতুন কোন পরিবেশ। সময় সুযোগ হলেই আমরা ছুটে চলি নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। তাই বেশিরভাগ উৎসব বা পূজাপার্বণের ছুটি পেলেই উচাটন মন অবকাশ যাপনে বের হয়ে পরে দিগি¦দিক। সেই হিসেবে এবারকার বৈশাখের দীর্ঘ ছুটি কাটাতে মানুষ বেরিয়ে যাবে কাছের বা দূরের বিভিন্ন মনোরম স্থানগুলোতে। তবে এই বৈশাখে কাছের সৌন্দর্যময় স্থানগুলোই বেড়ানোই উপযুক্ত সিদ্ধান্ত। ফ্যান্টাসি কিংডম। একে বাংলাদেশের ডিজনিল্যান্ড বললে অত্যুক্তি হবে না। এটি দেশের একটি অন্যতম প্রধান দর্শনীয় চিত্তবিনোদনমূলক পার্ক এবং ইতোমধ্যে এই পার্কটি পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। পার্কটির পরিদর্শকদের থাকার জন্য এখানে রয়েছে ৪ তারকা বিশিষ্ট হোটেল যেখানে রয়েছে ২০০ রুম, হলরুম, রেস্টুরেন্ট এবং রিসোর্ট সিটি। বিনোদনের জন্য থিম পার্ক ফয়েজ লেক কনকর্ড, এ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ডে আছে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক মানের রাইডস যেমনÑ সার্কাস ট্রেন, ফ্যামিলি কোস্টার, ফেরিস হুইল, রেডড্রাই সøাইড, বাম্পার কার, সার্কাস সুইং, স্পিডবোট। লেকের ওপর ঝুলন্ত সেতু, পাহাড়ের বনাঞ্চলে ট্রাকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সুউচ্চ টাওয়ার। রাজধানী ঢাকার অদূরে নরসিংদী জেলায় গড়ে উঠেছে বিশ্বমানের থিম পার্ক ‘ড্রিম হলিডে’। সদর উপজেলার পাঁচদোনা চৈতাব এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে এই পার্কটি অবস্থিত। ২০১১ সালের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটি চালু করা হয়। ছোটবড় সবার জন্যই রয়েছে আলাদা সব রাইড। ৬০ একর জমির ওপর নির্মিত এ পার্কে রয়েছে নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল, অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, পার্কে শিশু-কিশোরদের জন্য একাধিক রাইডস, সুবিশাল লেক, হংসরাজ প্যাডেল ও জেট ফাইটার বোট, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম ক্যানেল, রকিং হর্স, ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা ও সরকার প্রদত্ত নিরাপত্তা কর্মীর তত্ত্বাবধানে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশ। এ ছাড়া রয়েছে সুবিশাল গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, নিজস্ব কটেজ ও সুপ্রশস্ত বাংলো। লালবাগ কেল্লা, মুঘল আমলের বাংলাদেশের একমাত্র ঐতিহাসিক নিদর্শন যাতে একই সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে কষ্টিপাথর, মার্বেলপাথর আর নানা রং-বেরঙের টালি। লালবাগ কেল্লা ছাড়া আর বাংলাদেশের আর কোন ঐতিহাসিক নিদর্শনে এমন কিছুর সংমিশ্রণ পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত। প্রায় প্রতিদিন হাজারো দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয় ঢাকার লালবাগ এলাকার এই দুর্গটি। ইসলামপুরের কুমারটুলী নামে পরিচিত পুরনো ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বর্তমান ইসলামপুরে আহসান মঞ্জিল অবস্থিত। এটি ব্রিটিশ ভারতের উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নওয়াব পরিবারের বাসভবন ও সদর কাচারি ছিল। অনবদ্য অলঙ্করণ সমৃদ্ধ সুরম্য এ ভবনটি ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নিদর্শন। নবাব পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত এই প্রাসাদটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে আহসান মঞ্জিলের মূল প্রাসাদটি গ্যালারি আকারে রূপান্তর করা হয়েছে। মোট গ্যালারি ২৩টি। ১৯০৪ সালে তোলা ফ্রিৎজকাপের আলোকচিত্র অনুযায়ী বিভিন্ন কক্ষ ও গ্যালারিগুলো সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশের যে কয়েকটি জেলা স্বনামে খ্যাত রাজশাহী তার মধ্যে অন্যতম। রাজশাহী জেলায় ইতিহাস-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ অনেক স্থান রয়েছে। পুঠিয়া ঐতিহাসিক স্থানটি রাজশাহী জেলায় অবস্থিত। পুঠিয়া রাজশাহী জেলায় অবস্থিত। রাজশাহী জেলার একটি উপজেলাও এই পুঠিয়া। পুঠিয়া উপজেলায় রয়েছে, পুঠিয়া রাজবাড়ী, পুঠিয়া মন্দির ছাড়াও অনেক দৃষ্টিনন্দন স্থান। ঢাকা বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য জেলার নাম মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জ জেলায় যে কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে বালিয়াটির জমিদারবাড়ী অন্যতম। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বালিয়াটির জমিদার গোবিন্দরাম একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন। সেই প্রাসাদটিই বর্তমানে বালিয়াটি প্রাসাদ নামে সুপরিচিত। মানিকগঞ্জ শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়ার বালিয়াটিতে এই প্রাসাদটি অবস্থিত। ঢাকা থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং মানিকগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব দিকে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশকিছু সুরম্য প্রাচীন স্থাপনা। অনেক দূর থেকে এখনও দালানগুলোর চূড়া মন কাড়ে আগতদের। সময়ের ব্যবধানে ভবনগুলো ধ্বংসের প্রহর গুনলেও আজও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে জানান দেয়া বালিয়াটির জমিদারদের সেকালের সেই বিত্ত আর বৈভবের কথা। নরসিংদী জেলাতে যতগুলো প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রতœস্থান রয়েছে উয়ারী-বটেশ্বর তার মধ্যে অন্যতম। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বের এ প্রতœস্থান ১৯৩৩ সালে আবিষ্কৃত হয়। উয়ারী বটেশ্বর বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদ।
ছবি : আশিক
মডেল : মিল্টন, সায়হান ও মেরিন
পোশাক : এড্রয়েট
কোরিওগ্রাফি : বিডি মিজু
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: