ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১০ এপ্রিল ২০১৬

কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আজ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এ কারাগারটি উদ্বোধন করবেন। কারাগারটিতে শুধু পুরুষ বন্দীদের রাখা হবে। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিতব্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় এমপি বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেল হক খানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন দেশী-বিদেশী অতিথিগণ উপস্থিত থাকবেন। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এলাকা কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া মৌজায় এ কারাগারটি স্থাপন করা হয়েছে। ৪শ’ ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পে মোট ১শ’ ৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কারাগারটি ৩১ একর জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর এপ্রিল মাসের যে কোন ছুটির দিনে বর্তমানের পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক প্রায় ৮ হাজার বন্দীকে একসঙ্গে স্থানান্তর করা হবে। এর মধ্যে নারী বন্দীদের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীর কারাগারে স্থানান্তর করা হবে। নতুন এ কারাগারটিতে মোট ৪ হাজার ৫শ’ ৯০ জন বন্দীকে আটক রাখার সুবিধা রয়েছে। আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এ কারাগারটিতে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত মোট ৪ হাজার বন্দীকে রাখা হবে। এর বাইরে বিপজ্জনক বন্দী বা ডেঞ্জার প্রিজনার্স ৪০০ জনকে রাখার জন্য পৃথক পৃথক সেল তৈরি করা হয়েছে। ভিআইপি বন্দী হিসেবে পরিচিতি ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দীকে রাখার জন্য ১৬টি কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। যাতে কমপক্ষে ৩২ জন ও সর্বোচ্চ ৬০ জন বন্দীকে রাখা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ১০০ জন কিশোর বন্দী (যাদের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছর) রাখা হবে। এছাড়া মানসিক বন্দী ৩০ জনকে আটক রাখা হবে। এর বাইরে কারা কর্মচারীদের জন্য ব্যারাক নির্মাণ, কর্মকর্তাদের আবাসনের জন্য বিভিন্ন সাইজের ফ্ল্যাট নির্মাণ, মসজিদ, বিশ্রামাগার, কারাভ্যন্তরে ওয়ার্কশেড, সেলুন, আটাকল, কেইস টেবিল, গ্রন্থাগার, ফাঁসির মঞ্চসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। বন্দীকে বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য চারদিকে ২৫ ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণসহ আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। ১৭৮৮ সালে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে ব্রিটিশ সরকার একটি কারাগার প্রতিষ্ঠা করে। এরপর বন্দী সংখ্যা বাড়ায় ১৯০২ সালে এটিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করা হয়। মোট ৪০ একর জমির মধ্যে মূল কারাগারটি ১৭ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এ কারাগারটি বন্দীশূন্য হবে। কেরানীগঞ্জের নতুন এ কারাগারটিতে বন্দীর আবাসন সঙ্কটসহ নানা সমস্যার সমাধান হবে।
×