ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মঘাতী গোলে দুর্ভাগ্যের হার উত্তর বারিধারার, শেখ জামাল ১-০ উত্তর বারিধারা

সেমির পথে শেখ জামাল ধানমণ্ডি

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১০ এপ্রিল ২০১৬

সেমির পথে শেখ জামাল ধানমণ্ডি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শনিবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রখর উষ্ণতা। এ কারণেই হোক কিংবা প্রতিপক্ষের শক্ত প্রতিরোধের কারণেই হোক- শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডকে জিততে হয়েছে বিস্তর খাটা-খাটুনি করে। ‘কেএফসি স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এ গ্রুপ ‘এ’র খেলায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জামাল জিতে ১-০ গোলে। প্রতিপক্ষ ছিল উত্তর বারিধারা ক্লাব। এটা জামালের টানা তৃতীয় জয়। পয়েন্ট ৬। এ জয়ে সেমিফাইনালে উন্নীত হবার পথে একধাপ এগিয়ে গেল ‘বেঙ্গল ইয়োলোস।’ এর আগে জামাল হারায় মোহামেডানকে ২-০ এবং ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৫-০ গোলে। তাছাড়া তারা এখনও কোন গোল হজম করেনি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লীগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আবারও প্রিমিয়ার লীগে ফেরা বারিধারার এটা টানা তৃতীয় হার। তারা এর আগে হারে ব্রাদার্স ইউনিয়নের কাছে ২-০ এবং মোহামেডানের কাছে একই ব্যবধানে। কোন পয়েন্ট না পাওয়ার ফলে শেষ চারে যাবার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে তাদের। শনিবারের ম্যাচে হারলেও যথেষ্ট ভাল খেলে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বারিধারা। বার বার তারা হানা দেয় শেখ জামালের রক্ষণভাগে। বেশিরভাগ সময়ই রক্ষণদুর্গ ভেঙ্গে ফেলে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছে প্রতিপক্ষের গোলমুখে। জামালের ডিফেন্সে সৃষ্টি করে ত্রাসের সঞ্চার। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিং এবং অভিজ্ঞতার অভাবে প্রতিবারই গোলবঞ্চিত হয় তারা। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আত্মঘাতী গোল করে জামালকে একটি গোলই উপহার দিয়ে বসে তারা। নইলে ম্যাচটি তারা অন্তত ড্র করতে পারতো। জামালের খেলা ছিল সাধারণমানের। খেলোয়াড়দের চিনতে হয়েছে তাদের জার্সি দেখে। উপর্যুপরি ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ফরোয়ার্ডরা বারবার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন বারিধারার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের প্রতিরোধের মুখে। ২০ মিনিটে গোল করে নয়, গোল পেয়ে এগিয়ে যায় শেখ জামাল! বক্সের দশ গজ দূর থেকে শেখ জামালের ডিফেন্ডার মোহাম্মদ লিংকনের উঁচু শট বক্সে হেড দিয়ে বিপদমুক্ত করতে যান প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার মনির আলম। কিন্তু হাত উঁচিয়েও বলের নাগাল পাননি বারিধারার গোলরক্ষক মো. এরশাদ। ফলে বল জড়িয়ে যায় নিজেদের জালেই (১-০)। জামালের দুই ফরোয়ার্ড ওয়েডসন-এমেকা ছিলেন নিষ্প্রভ। অথচ আগের ম্যাচেই ওয়েডসন ৩টি আর এমেকা ২টি গোল করেছিলেন। ৪৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে করা ওয়েডসনের শট বারে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জটলার মধ্য থেকে শট নেন জামালের অধিনায়ক ওয়েডসন। কিন্তু তার নেয়া দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন বারিধারার গোলরক্ষক। দ্বিতীয়ার্ধে অসংখ্য আক্রমণ করে শেখ জামালের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বারিধারা। তবে সব আক্রমণই বক্স পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। তাই কোন গোল আদায় করে নিতে পারেনি তারা। ৮৭ মিনিটে বক্সের কোণায় ফ্রি কিক পায় শেখ জামাল। ওয়েডসনের শট ছিল নিশ্চিত গোল। কিন্তু গোলরক্ষকের দক্ষতায় দুই গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা পায় বারিধারা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল আদায় করে নিতে পারেনি শেখ জামাল। বারিধারাও না। ফলে ১-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল। ২০১০ সালে ধানম-ি ক্লাবটি শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব নামে আত্মপ্রকাশ করে। তারা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। মোট তিনবার লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। ২০১৩ সালে আটবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ জয় করে ক্লাবটি (মোট শিরোপা তিনটি)। ২০১০ সাল থেকে টানা চার বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলে তারা। দেশের বাইরে নেপালে ২০০০ সালে ক্লাব বুদ্ধ সুব্বা গোল্ডকাপ জয় করে। ২০১১ সালে নেপালে সাফাল পোখারা কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনালে শেখ জামাল নেপাল আর্মিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৪ সালে ভারতের কলকাতায় আইএফএ শিল্ড কাপের ফাইনালে ওঠে শেখ জামাল। ফাইনালে কলকাতা মোহামেডানের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়। ওই বছরই ভুটানে অনুষ্ঠিত কিংস কাপে হয় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। এর আগে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলে কখনই শিরোপা জেতেনি শেখ জামাল। ২০১১ সালে অবশ্য ফাইনালে উঠেছিল।
×