ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তবু আশা দেখেন না হোল্ডিং

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১০ এপ্রিল ২০১৬

তবু আশা দেখেন না হোল্ডিং

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একমাত্র দল হিসেবে দু-দুটি টি২০ বিশ্বকাপ (২০১২, ২০১৬) জিতে ইতিহাস গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চলছে ড্যারেন সামি-মারলন স্যামুয়েলসদের বন্দনা। অথচ এখনও ক্যারিবীয় ক্রিকেটে আনন্দের মাঝে বিষাদের ছায়া! কারণটা পুরনো। বোর্ড (ডব্লিউআইসিবি)-খেলোয়াড় দ্বন্দ্বে বেশ কয়েক বছর ধরেই দলটির ক্রিকেটে জেরবার অবস্থা। কখনও সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখা গেছে। সেরা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে দল গড়া, হুট করেই আনকোরা কাউকে অধিনায়ক করাসহ আরও কত কা-। তার মধ্য দিয়েই এলো এবারের সাফল্য। বছরের শুরুতে অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ, সামিদের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রমীলাদের টি২০ বিশ্বকাপ জয়। কিন্তু বোর্ড-খেলোয়াড় দ্বন্দ্বের অবসান, বোর্ডের মধ্যে আরও পেশাদারিত্ব না এলে এই সাফল্য ক্যারিবীয় ক্রিকেটে খুব একটা পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন না গ্রেট মাইকেল হোল্ডিং। সত্তর দশকের মাঠ কাঁপানো ফাস্ট বোলার হোল্ডিং বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেট নিয়ে যা কিছু হচ্ছে তা খুব দুঃখজনক। খেলোয়াড় ও বোর্ডের মধ্যে তৈরি হওয়া দ্বন্দ্ব ক্যারিবীয়দের জন্য লজ্জার ব্যাপার। অথচ এটা বছরের পর বছর চলে আসছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমি খুব একটা আশা দেখি না। দ্বন্দ্বের অবসান না হলে দেশ টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের সুফল ভোগ করতে ব্যর্থ হবে। সত্যি বলতে আলগা উদযাপন নয়, সম্পর্কের উন্নতি প্রয়োজন।’ সম্পর্কের উন্নতি না হলে সাম্প্রতিক এই সাফল্য ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে খুব একটা পরিবর্তন আনতে পারবে না বলে আফসোস ৬২ বছর বয়সী জ্যামাইকান লিজেন্ডের। পিঠেপিঠি যুব বিশ্বকাপ, ছেলে ও মেয়েদের টি২০ ট্রফি জয়ের পরও সাবেক গতি তারকা হোল্ডিংকে হতাশা ঘিরে ধরে। ক্যারিবিয়ানরা একসময় টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্ব শাসন করেছে। কিন্তু টেস্টে অনেক আগেই তাদের সেই সুদিন ফুরিয়েছে। এক সময়ের প্রতাপশালী ক্যারিবীয়রা দশ দলের টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন আট নম্বরে। ওয়ানডেতে আরও পেছনে, নয় নম্বরে, বাংলাদেশ-পাকিস্তানেরও পরে! টি২০ বিশ্বকাপ জয়ে দলটির যে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই, ড্যারেন সামির বক্তব্যেই সেটি ফুটে ওঠে। ইডেন গার্ডেনে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে রেকর্ড দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের দিনে অত্যন্ত আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বোর্ড কখনও আমাদের দুঃখ বুঝতে চায়নি। কেবল দুদর্শা তৈরি করেছে। আর লোকে সেটি দেখে তামাশা করেছে। কিন্তু মাঠে আমরা দেখিয়েছি, চাইলে সব সম্ভব। আবার কবে সবাই একত্রে মাঠে (টি২০) নামতে পারব জানি না! ভাবলে কষ্ট হয়।’ সামি যে দলটা নিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন, তাদের বেশিরভাগই বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই, এমন কি ওয়ানডে দলেও নেই তারা! সেদিকে ইঙ্গিত করেই তিনি একথা বলেন। উইন্ডিজ বোর্ডের সঙ্গে খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। মাঝে মধ্যে সেটি সীমানা অতিক্রম করেছে। বছর দুয়েক আগে ডোয়াইন ব্রাভোর নেতৃত্বে ভারত সফরের মধ্যপথে দেশে ফিরে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মূল সমস্যা আর্থিক লেনদেন নিয়ে। এমনকি তারা টি২০ বিশ্বকাপেও খেলতে চাইছিল না। শেষ মুহূর্তে সাময়িক একটা রফাদফা হয়। ট্রফি জয়ের দুদিন পর প্রকাশ্যে বোর্ডকে ধুয়ে দিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভো। ‘ডব্লিউআইসিবি বিশ্বের সবচেয়ে অপেশাদার’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। যদিও আইপিএল শেষে ক্রিকেটারদের নিয়ে বসতে চেয়েছেন বোর্ড প্রধান ডেভ ক্যামেরন।
×