ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের বসন্ত বিদায় অনুষ্ঠান ॥ যাবার আগে রাঙিয়ে দিয়ে যাও

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১০ এপ্রিল ২০১৬

রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের বসন্ত বিদায় অনুষ্ঠান ॥ যাবার আগে রাঙিয়ে দিয়ে যাও

গৌতম পাণ্ডে ॥ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘আজি দক্ষিণ দুয়ার খোলা, এসো হে আমার বসন্ত এসো দিব হৃদয়দোলায় দোলা’ এবং ‘রঙ লাগালে বনে বনে’। নন্দন মঞ্চভর্তি দর্শক উপভোগ করছে বসন্তের এ গান। একাডেমি প্রাঙ্গণের সবুজ ঘাসেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে রয়েছে অগণিত শ্রোতা। ঐশ্বর্যের অধিকারী ঋতুরাজ বসন্তকে বিদায় জানাতে তারই আহ্বানে শুরু হয় ‘যাবার আগে রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠান। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখা আয়েজিত বসন্ত বিদায় অনুষ্ঠানের পরিবেশটা ছিল এমনই। শুরুতে সম্মেলক কণ্ঠে গান দুটি পরিবেশনের পর শিল্পী সেমন্তী মঞ্জুরী যখন গেয়ে উঠলেন- ‘বাসন্তী হে ভুবন মোহিনী’। তার সুরের মূর্ছনায় গোটা নন্দন মঞ্চে বিরাজ করছিল বসন্তের আবহ। এরপর ছিল ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য। দর্শক নৃত্য শুরুর প্রাক্কালে ও শেষে হাততালি দিয়ে শিল্পীদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা বাড়িয়ে দিলেন। ‘সব দিবি কে সব দিবি আয়’ গানের সঙ্গে নৃত্যনন্দনের শিশু-কিশোরীদের দলীয় নৃত্যও ছিল উপভোগ্য। বাসন্তী রঙের শাড়িতে শিল্পীদের দেখাচ্ছিলও চমৎকার। দ্বৈত আবৃত্তি করলেন শিল্পী ডালিয়া আহমেদ ও বেলায়েত হোসেন। ‘যদি তারে নাই চিনিলে’ গানটি দ্বৈত পরিবেশন করেন শিল্পী আশরাফুজ্জামান ও শ্রেয়া। দলীয় কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘মাধবী হঠাৎ কোথা হোতে এলি’ গানটি। একের পর এক রবীন্দ্রসঙ্গীতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করার পাশাপাশি প্রকৃতির অপরূপ ঐশ্বর্যকে সবার কাছে তুলে ধরার প্রয়াস ছিল শিল্পীদের। পরে শিল্পীরা দলীয় কণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘বাকি আমি রাখব না’ গানটি। সত্যিই যেন বাকি ছিল না বসন্তের নানান বর্ণনায়। সেমন্তী মঞ্জুরী আর সুদীপ সরকারের দ্বৈত কণ্ঠে শোনা গেল গান- ‘আমি এই পথভোলা এক পথিক’। একক গান নিয়ে হাজির হলেন শিল্পী সুষ্মিতা আহমেদ। তিনি গেয়ে শোনালেন- ‘আমার এই পথ চাওয়াতে আনন্দ’। কিছুক্ষণ গানের আবর্তে থাকার পর অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্য আনতে পরিবেশিত হয় দলীয় নৃত্য। নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা ‘বসন্তে কী শুধু’ গানটির সঙ্গে সুন্দর এক পরিবেশনা উপহার দেন। এরপর দ্বৈত আবৃত্তি করেন বেলায়েত হোসেন ও ডালিয়া আহমেদ। শিল্পী মুস্তাফিজুর রহমান তূর্য গেয়ে শোনান ‘চলে যায় মরি হায়’। নৃত্য ভাবনা সংগঠনের শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘ধীরে ধীরে বও ওগো দক্ষিণ হাওয়া’ গানের সঙ্গে নৃত্য। এছাড়া একক গান পরিবেশন করেন শিল্পী মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না ও শ্রাবন্তী মজুমদার। ‘আজ খেলা ভাঙার খেলা’ ও ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ গান দুটির সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার ঋতুরাজ বসন্ত বিদায় অনুষ্ঠান। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
×