ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রির অনন্য উদ্ভাবন

লবণাক্ত অঞ্চলে এবার ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১০ এপ্রিল ২০১৬

লবণাক্ত অঞ্চলে এবার ধানের বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ৯ এপ্রিল ॥ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে এবার ব্রি ধান-৫৮ এবং ব্রি ধান-৬৭ এর বাম্পার ফলন হয়েছে। সম্ভাবনাময় এ জাত দুটির ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সাড়া পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। এতে কৃষকরাও বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। লবণাক্ততা সহনশীল এ জাত দুটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের অনন্য আবিষ্কার। ব্রি’র ফলিত গবেষণা বিভাগ ট্রান্সফর্মিং রাইস ব্রিডিং (টিআরবি) প্রকল্পের আওতায় ওই জাত দুটির বীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ কর্মসূচীর (এসপিডিপি) ওপর আয়োজিত কৃষক সমাবেশ, শস্য ও মাঠ দিবসে কৃষি বিজ্ঞানীগণ এসব তথ্য জানান। ব্রি’র উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, সম্প্রতি আবিষ্কৃত ব্রি ধান-৫৮ ও ব্রি ধান-৬৭ বোরো মৌসুমে অত্যন্ত সম্ভবনাময় জাত। বিশেষ করে লবণাক্ত অঞ্চল যেখানে অন্য জাতের ধান আবাদ করে তেমন ফলন পাওয়া যায় না সেখানে ব্রি ধান-৬৭ খুবই উপযোগী। ফলে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে এ জাতের আবাদ বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা আরও টেকসই করে বিদেশে চাল রফতানি করা সম্ভব। এ জাত দুটোর ফলন বিশেষ করে ব্রি ধান-৫৮ এর ফলন জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে বিঘা প্রতি গড়ে প্রায় ৪-৫ মণ বেশি। এর জীবনকাল ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে মাত্র এক সপ্তাহ বেশি। এ জাতের বিশেষ গুণ হচ্ছে ব্রি ধান-৫৮ এর গাছ শক্ত, তাই সহজে হেলে পড়ে না। ছড়ায় ধানের সংখ্যা বেশি এবং চিটার সংখ্যা কম। এবার ডুমুরিয়া ও খুলনায় ব্রি ধান-৫৮ এর গড় ফলন হয় ৮.৫ টন/হে. (২৮ মণ/বিঘা); কয়রা, ডুমুরিয়া ও অভয়নগরে লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি ধান-৬৭ এর ফলন পাওয়া যায় যথাক্রমে ৬.৯০, ৭.০০ ও ৭.২০ টন/হে. (২৩-২৪ মন/বিঘা)। নেত্রকোনায় হুমকির মুখে বাঁধ ॥ কৃষকের কপালে ভাঁজ সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোনা ॥ কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধনু নদীর পানি বাড়ায় হাওড় উপজেলা খালিয়াজুরির চারটি বাঁধের নিচু অংশ দিয়ে ফসলি জমিতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এছাড়া মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে আরও কয়েকটি বাঁধ। এ কারণে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ রক্ষার জন্য মসজিদ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে এলাকায়। জানা গেছে, প্রতি বছর খালিয়াজুরির বড় বাঁধগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এবং ছোট বাঁধগুলো ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে মেরামত করা হয়। চলতি বছর পাউবোর উদ্যোগে বড় বাঁধগুলোতে মেরামতের কাজ চলছে। কিন্তু ইউপি নির্বাচন এবং নির্বাচনপরবর্তী আইনশৃঙ্খলার অবনতির অজুহাতে ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ছোট বাঁধগুলোর মেরামতকাজ এখনও শুরু হয়নি। অতিরিক্ত দায়িত্বে খালিয়াজুরির প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, কাবিখার আওতায় ওই উপজেলায় ৫৬ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ হয়েছে। বাঁধগুলো সরেজমিন দেখে বাজেট নির্ধারণ করা হচ্ছে। এপ্রিলের শেষ নাগাদ কাজ শুরু হতে পারে। ওদিকে স্থানীয় কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। লক্ষ্মীপুর বাঁধ, মৈলখাতা বাঁধ, বয়রার বাঁধ এবং নামা চুনাইর বাঁধের নিচু অংশ দিয়ে জমিতে পানি ঢুকছে। কাজেই কালক্ষেপণ করে পরবর্তীতে বাঁধগুলো মেরামত করলে কোন লাভ হবে না। সমস্ত ফসল তলিয়ে যাবে। বাঁধ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে এলাকাবাসী শনিবার খালিয়াজুরি সদরে মাইকিং করেছে। ওদিকে নদীর পানি বাড়ায় কীর্তনখোলা, কৃষ্টপুর, পাইয়া, মায়েরচর, ঝালখালী, সতিয়া, গঙ্গাবদর, চেলা, বাগানী প্রভৃতি এলাকার বড় বড় ফসল রক্ষা বাঁধগুলোও হুমকির মুখে রয়েছে।
×