ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আসছে স্বয়ংচালিত সাইকেল আই-বাইক

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ৯ এপ্রিল ২০১৬

আসছে স্বয়ংচালিত সাইকেল আই-বাইক

শীঘ্রই রাস্তায় আরেক ধরনের স্বয়ংচালিত যান দেখতে পাওয়া যাবে। তবে সেটা গাড়ি নয়Ñ বাইসাইকেল। চালকহীন এই বাইসাইকেল উদ্ভাবন করেছে ভারতের একদল প্রকৌশল ছাত্র। খড়গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে উদ্ভাবিত এই সাইকেলটির নাম দেয়া হয়েছে আই-বাইক। পঙ্গু-বিকলাঙ্গ সাইকেল আরোহীদের কথা চিন্তা করেই এটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। তবে সাইকেলটি হাইব্রিড ধরনের। অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয় অবস্থা থেকে এটিকে সহজেই স্বাভাবিক অবস্থায় অর্থাৎ প্যাডেল দিয়ে চালানোর অবস্থায় আসা যেতে পারে। মূল উদ্দেশ্যের বাইরেও এটিকে অন্যান্য কাজে ব্যবহার করার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বয়ংচালিত এ ধরনের সাইকেল যে এই প্রথম দেখা গেল তা নয়। গত বছর ইউরোবাইক মেলায় একটি জার্মান কোম্পানির উদ্ভাবিত স্বচালিত সাইকেলের নমুনা প্রথমবারের মতো চালিয়ে দেখানো হয়। তবে ওটার সঙ্গে আই-বাইকের পার্থক্য হলোÑ আই-বাইকের বহু ধরনের ব্যবহার আছে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে পারে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টিয়ারিং করা যেতে পারে আবার শারীরিকভাবে অর্থাৎ প্যাডেল মেরেও চালানো যেতে পারে। তার ফলে চালক কিভাবে বাইকটি ব্যবহার করতে চায় তার ওপর তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। আরোহীর হাত কাটা থাকলে সে কায়িকভাবে সাইকেলটি চালাতে পারবে তবে স্বয়ংক্রিয় স্টিয়ারিংকেও কাজে লাগাতে পারবে। পা কাটা থাকলে সে নিজে স্টিয়ার করতে পারবে তবে বাইকটি নিজে নিজে চলবে। আর আরোহী যদি অন্ধ হয় তাহলে সে দুটো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাই কাজে লাগাতে পারবে। বাইসাইকেলটি চলবে ওয়্যারলেস ফোন নেটওয়ার্কে। এতে ব্যবহার করা হবে স্মার্টফোন ও জিপিএস প্রযুক্তি। গন্তব্যস্থলের তথ্য দিয়ে এসএমএস টেক্সট পাঠিয়ে সাইকেলটিকে নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত চালিত করা যাবে। সমন্বয়ের সব ব্যবস্থা যথাযথভাবে কাজ করলে বাইকটি পথে চলতে থাকবে। রাস্তায় অপ্রত্যাশিত কোন বাধা থাকলে তা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য সঙ্গে লাগানো সেন্সরকে কাজে লাগাবে। এই বৈশিষ্ট্যটি থাকার কারণে আরেকটি কাজেও আই-বাইক ব্যবহারের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা হলো বাইক শেয়ার ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থাটি বিশ্বব্যাপী শহর-নগরে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিবিধভাবে ব্যবহারের ডিজাইন থাকার কারণে চালক এই বাইসাইকেলে চেপে নতুন গন্তব্যস্থলে যাওয়ার সুযোগ পাবে। তারপর ওখানে পৌঁছে সাইকেলটিকে আপনা আপনি তার স্টেশনে পাঠিয়ে দিতে পারবে। আই-বাইকের ডিজাইনের পেছনে যেসব প্রকৌশল ছাত্রের মস্তিষ্ক কাজ করেছে তাদের একজন আইয়ুশ পান্ডে বলেন, ‘প্রথমে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন সাইকেল উদ্ভাবন করা যা পঙ্গু ব্যক্তিরা পার্কিং স্টেশন থেকে ডেকে নিতে পারবে। কিন্তু নতুন নতুন ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারলাম যে, বাইক শেয়ারিংয়ের যে ব্যবস্থা আগে থেকেই প্রচলিত আছে সেটিকে কাজে লাগিয়ে শেষ মাইলের পরিবহন দৃশ্যপটের উন্নয়ন সাধনে আমাদের উদ্ভাবিত পণ্যটির বৃহত্তর তাৎপর্য আছে।’ বর্তমানে আই-বাইকটি আদিরূপ স্তরে আছে। এর পেছনে প্রকৌশল ছাত্রদের যে দলটি রয়েছে তারা আশা করে যে, তারা স্নাতক হয়ে বেরোনোর আগেই এ বছরের মধ্যে তাদের উদ্ভাবিত বাইকটিকে তারা পণ্য পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারবে। তারা বলেছে, সাইকেলটির দাম হবে ৩৫ থেকে ৫০ হাজার রুপী, যা মোটামুটি ৫শ’ থেকে সাড়ে ৭শ’ মার্কিন ডলারের সমান। অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে এটা আয়ত্তযোগ্য। শারীরিকভাবে পঙ্গু হোক আর নাই হোক, সব শ্রেণীর মানুষ এই সাইকেলের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট
×